পারিবারিক মঙ্গল অনুষ্ঠান ও পুজোপাঠে আনন্দলাভ। বন্ধু বিবাদের যোগ আছে। বিদ্যাচর্চায় উন্নতি। ... বিশদ
কীভাবে এই অ্যাপ ব্যবহারের বিষয়টি জানা গেল? ২০২০ সালের মার্চ মাসে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) হাতে ধরা পড়ে আইএস জঙ্গি জাহানজেব সামি ওয়ানি ও তার স্ত্রী। এই কেসেই গ্রেপ্তার হয় বেঙ্গালুরুর ডাক্তার আব্দুল রহমান। আইএস মডিউলের তদন্ত করতে গিয়েই এনআইএ জানতে পারে, জঙ্গিরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখার জন্য থ্রিমা অ্যাপ ব্যবহার করছে। যে তিনজন জঙ্গি ধরা পড়েছে, তারাও এই অ্যাপের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখত। শুধু দেশে নয়, সিরিয়া ও পাকিস্তানে থাকা জঙ্গিদের সঙ্গেও এই অ্যাপের মাধ্যমে কথাবার্তা চালাত তারা।
তাদের জেরা করে জানা গিয়েছে, শুধু আইএস নয়, লস্কর, জয়েশ, আল কায়েদা, এমনকী জেএমবি জঙ্গিরাও এই অ্যাপ ব্যবহার করছে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মুর্শিদাবাদ থেকে আল কায়েদার যে জঙ্গিরা গ্রেপ্তার হয়েছিল, তারাও এই অ্যাপের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত বলে জানা গিয়েছে। জঙ্গিরা যাতে থ্রিমা অ্যাপ ব্যবহার করে, সেই নির্দেশ দিয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠীর শীর্ষস্থানীয়রা। কারণ, এই অ্যাপের উপর গোয়েন্দাদের নজরদারি কম। এই অ্যাপের কথোপকথন ডিকোড করতে বিদেশের সাহায্য নিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। সেখান থেকে জানা গিয়েছে, কীভাবে শিক্ষিত তরুণদের জঙ্গি সংগঠনে টানতে হবে, কোন কোন রাজ্যে সংগঠন বাড়াতে হবে, তা নিয়ে বিশদে আলোচনা রয়েছে।
কেন ব্যবহার শুরু হল এই অ্যাপের? কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, আগে ওনিয়ন রাউটার ব্যবহার করত জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি। পরে নতুন ধরনের একটি সফটওয়্যার ব্যবহার করতে শুরু করে তারা। পাশাপাশি উন্নত ধরনের আরও কিছু অ্যাপ জঙ্গি সংগঠনগুলির হাতে আসে। কিন্তু এই সমস্ত অ্যাপ বা সফটওয়্যারের খুঁটিনাটি জেনে যান বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থার কর্তারা। এগুলি ব্যবহার করা যে আর নিরাপদ নয়, তা বুঝে যায় জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্যরা। সেকারণে ছক বদলে তারা থ্রিমা অ্যাপ ব্যবহার করতে শুরু করে। হোয়াটসঅ্যাপ-এর মতোই এর মাধ্যমে বিদেশে কল করা সম্ভব। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, এই অ্যাপের মাধ্যমে পাঠানো মেসেজ বা কললিস্ট ‘ট্রেস’ করা সম্ভব নয়।
গোয়েন্দারা জেনেছেন, এই অ্যাপ ডেভেলপ করা হয়েছে সুইজারল্যান্ডে। নাম-গোত্রহীনভাবে এই অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খোলা সম্ভব। তাই এ নিয়ে উদ্বিগ্ন আধিকারিকরা। গ্রাহক কতবার এই অ্যাপ ব্যবহার করেছে, তা পুরোপুরি গোপন থাকছে এখানে। তাই ডেটা পাওয়া কিছুটা হলেও সমস্যার। সেকারণেই এনিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্তকারী সংস্থার কর্তারা। সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে কথা বলে এই অ্যাপের বিষয়ে তথ্য জানার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি ডিকোড করার জন্য নতুন প্রযুক্তির সফটওয়্যার ব্যবহারের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।