কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ও মানসিক কষ্ট। দূর ভ্রমণের সুযোগ। অর্থ প্রাপ্তির যোগ। যে কোনও ... বিশদ
১৯৮১ সালের ডেথ কাম রিটায়রাল বেনিফিট স্কিম অনুযায়ী শিক্ষকরা পেনশন প্রাপ্তি সম্পর্কে সিপিএফ অথবা জিপিএফ প্রকল্প বেছে নিতে পারতেন। সিপিএফ নিলে অবসরের বয়স হতো ৬৫ বছর। কিন্তু, সেক্ষেত্রে অবসরের পর পেনশন পাওয়ার সুযোগ ছিল না। থোক টাকা তাঁরা পেয়ে যেতেন। কিন্তু, রোপা-৯০ চালু হওয়ার পর পরিস্থিতির বদল হয়। সেখানেও শিক্ষকদের প্রকল্প বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। যাঁরা আগে সিপিএফ বেছে নিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই পেনশন পাওয়ার জন্য এই নয়া প্রকল্পে যোগ দেন। কিন্তু, এর ফলে তাঁদের অবসরের বয়সসীমা কমে হয় ৬০ বছর। সরকার জানায়, সিপিএফ নেওয়া শিক্ষকদের পেনশন দেওয়া যাবে না। বিষয়টি নিয়ে তীব্র বিতর্ক তথা মামলা হওয়ার পর ২০১৩ সালের ১৬ জুলাই তিন বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রায় ঘোষণা করে।
প্রায় ছ’বছর আগের সেই রায়ে বলা হয়েছিল, যে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকরা সিপিএফ প্রকল্প মারফত থোক টাকা নিয়েছিলেন, সেই টাকা ছ’শতাংশ সুদ সহ ফেরত দিতে হবে। টাকা ফেরত দিলে তাঁরা পেনশন পাবেন। সম্প্রতি এই রায়ের ব্যাখ্যা চাওয়া হয় কলকাতা হাইকোর্টের কাছে। ফলে ২০১৮ সালে নতুন করে তিন বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ গঠিত হয়। বেঞ্চকে জানানো হয়, সরকার বলছে, অবসরের দিন থেকে নয়, যেদিন সিপিএফ-এর টাকা সুদ সহ ফেরত দেওয়া হয়েছে, সেদিন থেকে পেনশন দেওয়া হবে। তাঁদের প্রশ্ন, যিনি ১০ বছর আগে অবসর নিয়ে এখন টাকা ফেরত দিলেন, তাঁর ১০ বছরের পেনশন কেন সরকার দেবে না? কিন্তু, রাজ্য সরকার জানায়, তারা রায় অনুযায়ী পদক্ষেপ করেছে। বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে বেশ কিছু মামলাও হয়। কিন্তু, কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি।
রাজ্য সরকার হলফনামা পেশ করতে চায়। কিন্তু, মামলাকারীদের তরফে বলা হয়, আগের রায় সামান্য সংশোধন করলেই বিতর্কের আর কোনও অবকাশ থাকে না। কারণ, সেই রায়ে বলা হয়েছিল, টাকা ফেরত দিলে পেনশন মিলবে। তার মানে এই নয় যে, অবসরের দিন থেকে পেনশন মিলবে না। দ্বিতীয়ত, সরকারের পেনশন সংক্রান্ত নির্দেশিকা অনুযায়ী অবসরের দিন থেকেই পেনশন প্রাপ্য। কিন্তু, রাজ্য এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে জানায়, ওই রায় ঘোষিত হওয়ার পর রাজ্যের তরফে সুপ্রিম কোর্টে তা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। কিন্তু, আবেদনটি খারিজ হতে একটি সরকারি নির্দেশিকা জারি হয়। সেখানে টাকা ফেরত দেওয়ার দিন থেকে প্রার্থী পেনশন পেতে চান কি না, সেই প্রশ্নে সম্মতি জ্ঞাপনের সুযোগ ছিল। যা তাঁরা মেনে নিয়েছিলেন। ফলে এখন এই বিষয়ে প্রশ্ন তোলা যায় না।
এই অবস্থায় গত বছরের জুলাই মাসে বেঞ্চ বলেছিল, রাজ্য সরকারকে মামলাকারীদের বক্তব্য সম্পর্কে জবাব দিতে হবে। মামলাকারী অভিজিৎ বৈদ্য’র তরফে আইনজীবী শক্তিপদ জানা ও অন্যান্যরা পাল্টা জবাব দিলে গত ১ অক্টোবর রায় ঘোষিত হয়।