প্রণয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকবে। কারও কথায় মর্মাহত হতে হবে। ব্যবসায় শুরু করা যেতে পারে। কর্মে সুনাম ... বিশদ
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন উপাদান নিয়ে রক্ত গঠিত হয়। সব রোগীর ক্ষেত্রে রক্তের সব উপাদান সব সময় প্রয়োজন হয় না। যেমন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের লোহিত কণিকা(কম্পোনেন্ট) প্রয়োজন। অগ্নিদগ্ধ কোনও রোগীর ক্ষেত্রে প্রয়োজন রক্তের প্লাজমা। আবার ডেঙ্গু আক্রান্তের প্রয়োজন প্লেটলেটস। সেরকমই কোনও কোনও রোগীর প্রয়োজন শ্বেত রক্ত কণিকা। কিন্তু, এখানে এখনও পর্যন্ত রক্তের উপাদান পৃথক করার কোনও ব্যবস্থা নেই। অথচ উপাদানগুলি পৃথক করা গেলেই এক ইউনিট রক্তই চার-পাঁচজন রোগীকে দেওয়া যাবে।
উল্লেখ্য, দিন তিনেক আগে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি হন মাড়গ্রাড়ের বিষ্ণুপুর গ্রামের সুপ্রিয়া দাস। চিকিৎসক জানিয়ে দেন, সিজার করতে গেলে রোগিণীকে সাদা রক্ত(এফএফপি প্লাজমা) দিতে হবে। ফলে, সাদা রক্ত জোগাড় করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে পরিবার। রামপুরহাটে সেই ব্যবস্থা নেই। হন্যে হয়ে ঘোরার পর অবশেষে খবর পেয়ে বীরভূম ভলান্টিয়ার ব্লাড ডোনার অ্যাসোসিয়েশন বর্ধমান থেকে সেই সাদা রক্ত জোগাড় করে এনে দেয়।
অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নুরুল হোদা বলেন, বীরভূমে কোনও হাসপাতালে রক্ত পৃথকীকরণ সুবিধা চালু নেই। ফলে, জরুরি ভিত্তিতে রক্তের নির্দিষ্ট উপাদান না মেলায় রোগীর পরিবারকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। জেলায় এই সুবিধা মিললে বহু রোগী উপকৃত হবেন। তাঁর দাবি, সিউড়ি সদর হাসপাতালে মেশিন থাকলেও সুবিধা মিলছে না।
রামপুরহাট মেডিক্যালের এক চিকিৎসক বলেন, এমনিতেই এখানে রোগীর সংখ্যা বেশি। তার উপর গরমের সময় কার্যত রক্তের সঙ্কট চলে। রোগীদের রক্ত জোগাতে হিমশিম খেতে হয়। রক্তের উপাদান আলাদা করা যায় না বলে এক একজন রোগীকে পুরো ইউনিট রক্ত দিয়ে দিতে হয়। যদি রক্তের উপাদান পৃথক করা যেত, তাহলে ওই এক ইউনিট রক্তই চার-পাঁচজন রোগীকে দেওয়া সম্ভব হতো। রক্তের উপাদান পৃথক করার জন্য পূর্ণাঙ্গ একটি ইউনিট প্রয়োজন হয়। বিভিন্ন যন্ত্রের মাধ্যমে রক্তের উপাদানগুলি পৃথক করা হয়। মেডিক্যাল কলেজে সাধারণত এই ইউনিট থাকার কথা।
মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি ডাঃ সুজয় মিস্ত্রি বলেন, স্বাস্থ্যদপ্তরে অনেক চিঠিচাপাটি করে মেশিন জোগাড় করেছি। তবে, এখন সেটি প্যাকিং অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বিল্ডিংয়ের খানিকটা কাজ বাকি থাকায় বসানো যাচ্ছে না। করোনা পরিস্থিতির কারণেই কাজ আটকে গিয়েছে। আশা করি দ্রুত পরিষেবা চালু করা যাবে।
স্বাস্থ্যদপ্তরের দাবি, এই ইউনিটটি চালু হয়ে গেলে শুধু এই হাসপাতালই নয়, উপকৃত হবেন জেলার অন্যান্য হাসপাতালের রোগীরাও। এই হাসপাতালের প্রয়োজন মিটিয়ে বাড়তি রক্ত বা রক্তের উপাদান অন্য হাসপাতালগুলিকে দেওয়া হবে।
অন্যদিকে বীরভূম স্বাস্থ্যজেলার সিএমওএইচ ডাঃ হিমাদ্রি আড়ি বলেন, সিউড়ি সদর হাসপাতালে রক্ত পৃথকীরণ মেশিন রয়েছে। কিছু পরিষেবা মিলছে। পুরোপুরিভাবে দ্রুত শুরু হবে।