সম্পত্তি সংস্কার বিষয়ে চিন্তাভাবনা ফলপ্রসূ হতে পারে। কর্মক্ষেত্রে প্রভাব-প্রতিপত্তি বৃদ্ধি। যাবতীয় আটকে থাকা কাজের ক্ষেত্রে ... বিশদ
দীর্ঘদিন ধরে নিরলসভাবে এক টাকায় রোগী দেখে আসছেন বোলপুরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের হরগৌরিতলার বাসিন্দা সুশোভনবাবু। তাঁর এই পদ্মশ্রী সম্মান পাওয়ার খবরে জেলাজুড়ে খুশির হাওয়া। তিনি বিশ্বভারতীর রাষ্ট্রপতির নমিনিও রয়েছেন। ফলে তাঁর এই পদ্মশ্রী সম্মান প্রাপ্তির খবরে বিশ্বভারতীর তরফে তাঁকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সহ অন্যান্য আধিকারিকরা তাঁকে সংবর্ধনা জানান। পাশাপাশি বোলপুর পুরসভাও তাঁকে সংবর্ধনা দিয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিস প্রশাসনের তরফেও শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে।
সুশোভনবাবুর দাবি, শনিবার সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে এক মহিলা ফোন করেছিলেন। তিনি দিল্লিতে যাওয়ার কথা বলেন। কিন্তু অসুস্থতার কারণে সেইসময় দুর্গাপুরে ডায়ালিসিস করাচ্ছিলাম। পরে অবশ্য সন্ধ্যায় ফোন করে পদ্মশ্রী সম্মান প্রাপ্তির খবর জানান। পাশাপাশি সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানেও হাজির থাকার আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেই খবর জানার পর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ও ফোন করে শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, দীর্ঘ ৫৭ বছর ধরে রোগীদের চিকিৎসা করার ফলেই তাঁরা এই সম্মান আমাকে দিয়েছেন। এই সম্মান আমাকে আনন্দ দিয়েছে। পাশাপাশি সমাজে দায়িত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। যাঁরা আমার পথ চলার সঙ্গী, তাঁদেরই এই সম্মান উৎসর্গ করছি।
জানা গিয়েছে, সুশোভনবাবু এমবিবিএস পাশ করার পর এমএফপিএ ও ডিসিপি কোর্স করেছেন। ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি দেশ ছেড়ে ইংল্যান্ডে যান। তারপর সেখান থেকে তিনি নিজের বাড়িতে ফিরে ফের এক টাকা ভিজিটেই রোগী দেখা শুরু করেন। বোলপুরে তিনি এক টাকার ডাক্তার বলেই পরিচিত। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি তিনি বিশিষ্টদেরও চিকিৎসা করেছেন।
প্রসঙ্গত, ভারত সরকারের তরফে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকার জন্য পদ্মভূষণ, পদ্ম বিভূষণ ও পদ্মশ্রী সম্মান দেওয়া হয়। সারা দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ এই সম্মান পেয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে বোলপুরের বাসিন্দা সুশোভনবাবুও ওই তালিকায় যুক্ত হওয়ায় গর্বিত জেলাবাসী। সুশোভনবাবু চিকিৎসার পাশাপাশি আগে রাজনীতির ময়দানেও ছিলেন। তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৮৩ সালে তিনি বোলপুর থেকে বিধায়কও হন। কিন্তু অসুস্থতা ও চিকিৎসার জন্য বেশি সময় দেওয়ার লক্ষ্যে তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নেন। তাঁর কাছে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে রোগীরা চিকিৎসার জন্য এখনও যান। দীর্ঘ ৫৭ বছর ধরে এভাবেই তাঁর কর্মকাণ্ড চলছে। দেশের বিভিন্ন প্রধানমন্ত্রী ও রাস্ট্রপতির নমিনি হিসেবে বিশ্বভারতীর সঙ্গে তিনি যুক্ত।
৮১ বছরের সুশোভনবাবু বলেন, ১৯৬৩ সালে এক টাকা ভিজিটেই চিকিৎসা শুরু করেছিলাম। তারপর বিভিন্ন জায়গা থেকে সুযোগ এলেও যাইনি। আগামীদিনে এভাবেই চলতে চাই।