অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি, প্রিয়জনের বিপথগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা, সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ
নির্দেশিকা অনুসারে ভোট উপলক্ষে ২৮ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বীরভূম জেলায় মোট ছয় পুলিস অফিসারকে অস্থায়ীভাবে নিযুক্ত করা হয়েছে। ওই অফিসারদের অবিলম্বে রিলিজ দেওয়ার জন্য চন্দননগর পুলিস কমিশনারেট এবং চার জেলার এসপিকে চিঠি ইস্যু করেছেন রাজ্য পুলিসের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা)। তৃণমূলের অভিযোগ, এসবের নেপথ্যে দলবদলু নেতার হাত রয়েছে। তিনিই কলকাঠি নাড়ছেন।
ভোট পরিচালনার জন্য বীরভূম জেলার পোস্টিং পাওয়া দলবদলু নেতা ঘনিষ্ঠ তিন অফিসার হলেন তন্ময় মুখোপাধ্যায়, মহম্মদ খুদরোতে খোদা এবং শীর্ষেন্দু দাস। তাঁদের মধ্যে তন্ময়বাবু ডিএসপি র্যাঙ্কের অফিসার। বাকি দু’জন ইনসপেক্টর। তিনজনই পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তন্ময় মুখোপাধ্যায় প্রায় পাঁচ বছর হলদিয়ার এসডিপিও ছিলেন। দলবদলু নেতার আস্থাভাজন হওয়ার সুবাদে হলদিয়া শিল্পাঞ্চল সহ গোটা মহকুমায় তাঁর দাপট ছিল প্রশ্নাতীত। ২০২০ সালে ১৮ জানুয়ারি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে নন্দীগ্রামে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের পদযাত্রায় এই তন্ময়বাবুর নেতৃত্বেই বেপরোয়া লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটেছিল। তখন দলবদলু নেতা তৃণমূলেই।
২০২১ সালের ৮ জানুয়ারি দিলীপবাবু নন্দীগ্রামে গিয়েছিলেন। ততদিনে অবশ্য হলদি নদী দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। সেদিন দিলীপবাবুর মন্তব্য ছিল, ‘যাঁরা একদিন আমাকে নন্দীগ্রামে ঢুকতে দেননি, আজ তাঁরাই আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।’ সেই তন্ময়বাবুকেই অনুব্রত মণ্ডলের গড়ে ভোটের কারণে দু’দিনের জন্য পোস্টিং দেওয়া হয়েছে।
দলবদলু নেতার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আর এক অফিসারের নাম মহম্মদ খুদরোতে খোদা। তিনি হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের তিনটি থানায় ওসি এবং আইসি হিসেবে প্রায় এক দশক কাটিয়েছেন। গোড়ার দিকে দুর্গাচক ও ভবানীপুর থানার ওসি ছিলেন। ইনসপেক্টর হওয়ার পর হলদিয়ার আইসি হন। প্রায় প্রতিবার ভোটের মুখে তাঁকে অন্য জেলায় বদলি করা হতো। আর ভোট মিটলেই ফিরিয়ে আনা হতো শিল্পাঞ্চলে। সবই যে দলবদলু নেতার অঙ্গুলিহেলনে হতো, সেটা জেলা পুলিসের প্রত্যেকের কাছে জলের মতো পরিষ্কার ছিল। এবার ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারির প্রাক্কালে তাঁকে পূর্ব বর্ধমানের ট্রাফিক ইনসপেক্টর পদে বদলি করা হয়েছিল। তাঁকেও ‘বিশেষ দায়িত্ব’ দিয়ে দু’দিনের জন্য ভোট করতে বীরভূম পাঠানো হয়েছে।
শীর্ষেন্দু দাস তমলুক থানার ওসি ছিলেন। সেই থেকেই দলবদলু নেতার নজরে। ইনসপেক্টর প্রোমোশন পেয়েই তিনি বদলি হন ডোমকল থানায়। অনেকে বলেন, শীর্ষেন্দুবাবুকে ডোমকলে নিয়ে যাওয়ার পিছনেও ওই নেতার হাত ছিল। নন্দীগ্রামে ভোট প্রচারের শেষদিন মহিষাদলের সার্কেল ইনসপেক্টর হিসেবে শীর্ষেন্দুবাবুকে আনা হয়। নন্দীগ্রাম থানা মহিষাদল সার্কেলেই। সে নিয়েও একপ্রস্থ হইচই হয়েছিল।