বিতর্ক-বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম-পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থোপার্জনের সুযোগ।প্রতিকার: অন্ধ ব্যক্তিকে সাদা ... বিশদ
জলপাইগুড়ি শহরে স্টেশন বাজার, দিনবাজার, বউবাজার সহ একাধিক বাজার রয়েছে। বাজারগুলিতে অন্যান্য সামগ্রী সঙ্গে বিক্রি হয় নানা ধরনের মাছ। কিন্তু কোনও বাজারে প্রতিদিন তিস্তার বোরোলি মাছ আসে না। যেদিন আসে, সেদিন খুব দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়। বোরোলি নিয়ে স্টেশন বাজারে কথা হচ্ছিল কয়েকজন মাছ বিক্রেতার সঙ্গে। তাঁদের আক্ষেপ, তিস্তার বোরোলির এত কদর, অথচ মাছ কোথায়? বউবাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীর কথায়, বর্তমানে তিস্তার বোরোলির দাম কেজি প্রতি ১০০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা। সেই জায়গায় বিহার কিংবা মহারাষ্ট্রের বোরোলি ৫০০-৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ভিনরাজ্যের বোরোলির জোগানও অনেক বেশি।
শহরের খুচরো মাছ ব্যবসায়ী দীপঙ্কর গুপ্ত বলেন, বর্তমানে তিস্তা থেকে যে বোরোলি মাছ ওঠে, তার বেশিটা বিক্রি হয় গজলডোবা এলাকায়। ময়নাগুড়িতে যে বোরোলি মাছ ধরা হয়, সেগুলি বিক্রি করা হয় দোমোহনি বাজারে। তাই শহরের বাজারগুলিতে তিস্তার বোরোলি খুব বেশি আসে না। তবে শহরের বাজারে তিস্তার বোরোলি মাছের তেমন দামও পাওয়া যায় না। আসলে তিস্তার বোরোলির দাম অনেক বেশি। তাই তেমন ক্রেতা মেলে না।
দিনবাজার হোলসেল ফিশ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র বলেন, বোরোলি মাছ বিহার থেকে তো বটেই, মহারাষ্ট্র থেকেও আসে। তবে শহরের বাজারগুলিতে তিস্তার বোরোলি তেমন আসে না। যেটুকু আসে, তার দাম কেজি প্রতি ১২০০ টাকার বেশি। কিছু অসৎ ব্যবসায়ী ভিনরাজ্যের বোরোলি মাছের সঙ্গে তিস্তার বোরোলি মিশিয়ে তা তিস্তার বলে বিক্রি করেন। কেন কম বোরোলি মাছ উঠছে তা বুঝতে পারছি না। হয়তো এখন জল বেশি বলে এমনটা হচ্ছে। জল কমলে বেশি মাছ ধরা পড়বে।
তিস্তা থেকে কম বোরোলি মাছ ওঠা নিয়ে জানতে চাওয়া হলে পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা জলপাইগুড়ি কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের মৎস্যবিজ্ঞানী ইন্দ্রনীল ঘোষ বলেন, লকডাউনে বায়ুদূষণ কিছুটা কমেছে। বিভিন্ন কলকারখানা থেকে যে রাসায়নিক নদীতে এসে পড়ে, লকডাউনে তারও পরিমাণ কমেছে। কিন্তু শুধু বোরোলি নয়, সার্বিকভাবে নদীয়ালি মাছ কমার পিছনে মোটের উপরে তিনটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, নদীয়ালি মাছ কমার পিছনে অন্যতম কারণ, যথেচ্ছভাবে মাছ ধরা। দ্বিতীয়ত, প্রজনন ব্যবস্থা বাধাপ্রাপ্ত হলেও মাছের সংখ্যা কমতে পারে। তৃতীয়ত, বর্তমানে বর্ষায় নদীতে জল বেড়েছে। জল বাড়লে মৎস্যজীবীরা যে জাল ব্যবহার করেন, তাতে সব ধরনের মাছ ধরা নাও পড়তে পারে। তিস্তা নদীতে বেশি বোরোলি মাছ না ওঠার পিছনে কোন কারণ রয়েছে তা দেখা দরকার।