সম্পত্তি সংস্কার বিষয়ে চিন্তাভাবনা ফলপ্রসূ হতে পারে। কর্মক্ষেত্রে প্রভাব-প্রতিপত্তি বৃদ্ধি। যাবতীয় আটকে থাকা কাজের ক্ষেত্রে ... বিশদ
রাস্তার মাঝে বেঞ্চ ফেলে গাড়ি দাঁড় করিয়ে চাঁদা তোলা থেকে শুরু করে রাস্তায় দড়ি বেঁধে রাখার ফলে বেশ কিছুদিন ধরেই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। হঠাৎ করে পথ আটকে দেওয়ায় দ্রুত গতিতে আসা যানবাহনের পক্ষে গতি সামলানো মুশকিল হয়ে পড়ছে। এনিয়ে বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, যেখানে সেখানে রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে চাঁদা তোলা হচ্ছে। ছোটদের সরস্বতী পুজোর নাম করে বড়রাও এই কাজে নেমে পড়েছে বলে অভিযোগ। কেবল চালকরা নয়, দড়ি ধরে রাস্তা আটকাতে গিয়ে ছোটদেরও জখম হওয়ার আশঙ্কা থাকছে বলে অভিমত স্থানীয় বাসিন্দাদের। এলাকাবাসীরা বলেন, যেকোনও পুজোর সময় চাঁদার জুলুমবাজি দেখা দেয়। সরস্বতী পুজোর সময়েও হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সতর্ক দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। প্রশাসনিক উদাসীনতার ফলেই এধরনের দৌরাত্ম্য বাড়ছে ।
এবিষয়ে মালদহের ডেপুটি পুলিস সুপার (ট্রাফিক) অশোককুমার মণ্ডল বলেন, চাঁদার জুলুমবাজি নিয়ে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ নেই। কোনও বড় দুর্ঘটনাও ঘটেনি। তবে রাস্তার উপর আমাদের নজরদারি রয়েছে।
বড় বড় ক্লাবগুলি অবশ্য জোর গলায় দাবি করেছে তারা এধরনের চাঁদা তোলার পদ্ধতি সমর্থন করে না। পুরাতন মালদহের মুচিয়ায় আমরা কয়েকজন ক্লাবের অন্যতম পুজো উদ্যোক্তা গৌতম হালদার বলেন, রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে গাড়ি আটকে চাঁদা তোলা আমরা কখনই সমর্থন করি না। এধরনের সংস্কৃতি আমাদের এখানে নেই। নিজেদের উদ্যোগে পুজো হয়।
পাকুয়া ডিগ্রি কলেজের এক পড়ুয়া পলাশ বর্মন বলেন, হবিবপুর থেকে কলেজ যাওয়ার পথে পকেট রুটের অনেক জায়গাতেই রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে চাঁদা তোলা হয়। এটা বিপজ্জনক ব্যাপার। আমি ছাত্র হয়েও এধরনের অনৈতিক কাজকে সমর্থন করি না ।
পুরাতন মালদহ, হবিবপুর, বামনগোলা, গাজোলজুড়ে রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে চাঁদার জুলুমবাজি নতুন কথা নয়। দুর্গাপুজো, কালীপুজো থেকে শুরু করে সরস্বতীপুজো সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা নগর কীর্তনের আয়োজন হলেই রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে চাঁদা তোলা হয়। মালদহ- নালাগোলা রাজ্য সড়ক থেকে শুরু করে গাজোল-বামনগোলা, পুরাতন মালদহ-গাজল রাজ্য সড়কে চাঁদার জুলুমবাজি যথেষ্ট রয়েছে। এছাড়াও হবিবপুরের পকেট রোড, বুলবুলচণ্ডী-তিলাসন যাওয়ার রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে চাঁদা তোলা হয় বলে অভিযোগ। চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর, রতুয়া ছাড়াও মানিকচক, ইংলিশবাজার, কালিয়াচকের ব্লকগুলিতে পথচলতি মানুষ থেকে শুরু করে বাইক ও সাইকেলে যাতায়াতকারীরা চাঁদার জুলুমবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। সরস্বতী পুজোর একদিন আগেও এই চাঁদা তোলার হিড়িক কমেনি। অনেক সময় রাস্তার ওপর বেঞ্চ রেখে দেওয়া হয়। আবার রাস্তার দু’প্রান্তে দড়ি ধরে খুদেরা দাঁড়িয়ে থাকে। সে রাস্তা দিয়ে কোনও যানবাহন গেলে হঠাৎ করে সেই দড়ি দিয়ে পথ আটকে দেওয়া হয়। সেই সময় অনেকেই চলন্ত বাইক নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে উল্টে পড়ে যাচ্ছেন। এতে ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের বক্তব্য, পুলিসি নজরদারি না হলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
এদিকে সরস্বতী পুজোর চূড়ান্ত প্রস্তুতি সেরে ফেলেছেন উদ্যোক্তারা। জেলাজুড়ে সর্বত্রই মঙ্গলবার সরস্বতীপুজোর আয়োজন জঘরে ছিল শেষ মুহূর্তের সাজ সাজ রব। পুজোর চূড়ান্ত প্রস্তুতি ঘিরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতেও ছাত্রছাত্রীদের প্রবল উৎসাহ দেখা গিয়েছে। জেলার বড় বড় সরস্বতী পুজোর উদ্যোক্তারা এদিন বিকেলের পর থেকেই দর্শনার্থীদের জন্য মণ্ডপ খুলে দেন।