সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা, আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
তাই মেডিক্যাল পড়াশোনার ‘প্রথম শিক্ষককে’ সম্মান জানাতে এই প্রথম ক্যাডাভার বা মৃতদেহকে সম্মান প্রদর্শন করা এবং তার সামনে শপথগ্রহণের অঙ্গীকার করার সিদ্ধান্ত নিল এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। ১৬ নভেম্বর এই উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে হাসপাতালের অ্যানাটমি বিভাগ। হাসপাতাল কর্তারা ছাড়াও সেখানে উপস্থিত থাকবেন এনআরএসের প্রথম মহিলা স্নাতক ডাঃ সাবিত্রী দে। প্রসঙ্গত, এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অ্যানাটমি বিভাগে চিকিৎসা বিজ্ঞানের স্বার্থে দান করা হয়েছিল সিপিএমের বিশিষ্ট নেতা অনিল বিশ্বাসের দেহ। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রবাদপ্রতিম জ্যোতি বসুর দেহ দান করা হয়েছিল পিজি হাসপাতালকে।
সূত্রের খবর, মাসকয়েক আগে মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়াও সুপারিশ করেছিল, ডাক্তারদের ‘প্রথম শিক্ষক’ মৃতদেহ বা ক্যাডাভারকে সম্মান জানানো উচিত। সেজন্য ক্যাডাভারের সামনে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান করার প্রস্তাব দিয়েছিল এমসিআই। উদ্যোক্তাদের অন্যতম হাসপাতালের অ্যানাটমির অধ্যাপক ডাঃ অভিজিৎ ভক্ত বলেন, ক্যাডাভার বা মৃতদেহ ডাক্তারি পঠনপাঠনের প্রথম শিক্ষক। নীরব শিক্ষকও বটে। তাঁদের সম্মান জানানো অবশ্যকর্তব্য। তাই এই আয়োজন। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা (শিক্ষা) ডাঃ দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, এ বছর থেকে আমরা ক্যাডাভার বা দান করা দেহকে সম্মান প্রদর্শনের অনুষ্ঠান করতে শুরু করেছি। এনআরএসের এই উদ্যাগকে সাধুবাদ জানাই।
বর্তমানে ডাক্তারি পাঠ্যক্রমের শেষে ‘হিপোক্রেটিক ওথ’ বা চিকিৎসক হিসেবে শপথগ্রহণের অনুষ্ঠান হয়। এবার থেকে এনআরএসে ডাক্তারি ছাত্রজীবনের শুরুতে পালিত হবে মৃতদেহের সামনে শপথগ্রহণ। অ্যানাটমি ডিসেকশন হলে শায়িত দান করা দেহের সামনে সমবেত হবেন বিভাগীয় ছাত্র ও শিক্ষকরা। পাঠ করা হবে শপথবাক্য। যার সারকথা হল, মৃতদেহ আমাদের প্রথম শিক্ষক, নীরব শিক্ষক। তাঁকে শ্রদ্ধা জানাই। যাঁরা এই দেহ দান করে গিয়েছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতির জন্য, সম্মান জানাই সেই পরিবারবর্গকেও। কী বলছেন অ্যানাটমির অন্যান্য শিক্ষকরা? বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ এবং অ্যানাটমির অধ্যাপক ডাঃ পার্থপ্রতিম প্রধান বলেন, আজকের ই-যুগে যতই ভার্চুয়াল ব্যবস্থা আসুক না কেন, মানবদেহের সঙ্গে প্রথম পরিচিতির জন্য ক্যাডাভারের কোনও তুলনা নেই। এই উদ্যোগ সবসময় সাধুবাদযোগ্য। তবে মনে রাখতে হবে, একদিন আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মান জানিয়েই ক্ষান্ত হওয়া উচিত নয়। প্রতিদিনই সম্মান জানানোর বিষয়। কীভাবে কাটাছেঁড়ার পর ক্যাডাভারকে সযত্নে সংরক্ষিত করতে হয়, তাও শেখার। এই সম্মানের অভাব আছে বলেই মৃতদেহের সঙ্গে বহু ডাক্তারি ছাত্রছাত্রীকে সেলফি তুলতে বা ডিপি করতে দেখা যায়। এগুলির মতো ঘৃণ্য কাজ আর হয় না।