সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা, আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
রাস্তার পাশে বাড়িগুলির দরজা, জানালা বন্ধ। কোথাও কোথাও বাইরে থেকে সদর দরজায় তালা দেওয়া। যদিও এরমধ্যে বিভিন্ন জায়গাতে টহল দিতে দেখা গিয়েছে পুলিস, প্রশাসনের লোকজনকে। কোথাও কোথাও গাড়িতে করে নিরাপদ জায়গাতে সরিয়ে নিয়ে যেতে দেখা গেল মহিলা, শিশু ও বয়স্কদের। সাগরে বেশ কয়েকটি জায়গাতে দুপুরে রাস্তার ধারে গাছ ভেঙে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা টিম সেখানে পৌঁছে গিয়ে তা কেটে সরিয়ে দিয়েছে।
শুক্রবার রাত থেকে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকার বসতবাটিগুলি খালি করে সেখানকার বাসিন্দাদের নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়েছিল। শনিবার সকাল থেকে সেই কাজ আরও জোরদার হয়। কাকদ্বীপ মহকুমা শাসকের অফিসে জেলার কন্ট্রোলরুম খোলা হয়। সেখানে দফায় দফায় বৈঠক করেন মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা, জেলাশাসক পি উলগানাথন, পুলিস সুপার বৈভব তেওয়ারি, সভাধিপতি শামিমা শেখ সহ বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকরা। পরে আলাদা দল নিয়ে প্রত্যেকে উদ্ধারকেন্দ্রে ও যেখানে যেখানে ঝড়ের জেরে ক্ষতি হতে পারে সেই সব এলাকা ঘুরে দেখেন। তারপর সেখানকার মানুষদের পর্যায়ক্রমে সরানো হয়। কন্ট্রোলরুমে দফায় দফায় ফোন আসতে থাকে, কোথায় কী অবস্থা? কোনও ক্ষতি হল কি না সেই সব বিষয়ে রিপোর্ট আসে। অন্যদিকে, সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা, স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধান, বিডিও ও কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলার একটি টিম গোটা এলাকা ঘুরে তদারকি করে। জেলাশাসক সন্ধ্যায় জানান, সব মিলিয়ে সাগর, কাকদ্বীপ, নামখানা, বকখালি, পাথরপ্রতিমা, গোসাবা, বাসন্তী, জয়নগর, কুলতলি ও মথুরাপুর-২ মিলিয়ে প্রায় ৫৯ হাজার ৩১৯ জনকে উদ্ধারকেন্দ্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষকে সরানো হয়েছে সাগরে। সেই সংখ্যা হল ২৬ হাজার ৩০০ জন। এরপর নামখানা ব্লকে। সেখানে ১০ হাজার ৪৯৫ জনকে সরানো হয়েছে। পাথরপ্রতিমায় সরানো হয়েছে ৫৯৪৫ জনকে। কাকদ্বীপে সরানো হয়েছে ২৪১৭ জনকে। গোসাবায় ৫১৫৭ জনকে। বাসন্তীতে ২৫৫০ জনকে। জয়নগরে ২১৫৪ জনকে। কুলতলিতে ২১৪৫ জনকে। মথুরাপুরে ২১৪৭ জনকে উদ্ধারকেন্দ্রে রাখা হয়েছে। এদিন উদ্ধারকেন্দ্রগুলিতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। বিশেষ করে বিকেলের দিকে ঘরবাড়ি ছেড়ে মানুষ ঠাঁই নিয়েছিলেন সেখানে। সব জায়গাতে দুপুরে খিচুড়ি করে খাওয়ানো হয়েছে। কোথাও কোথাও মুড়ি, চিঁড়ে, ছোলা ও বিক্ষিপ্তভাবে কাজুবাদাম দেওয়া হয়েছে। নামখানার বেশ কয়েকটি উদ্ধারকেন্দ্রে বিদ্যুৎ চলে যেতে পারে এই আশঙ্কায় জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখা হয়। বহু জায়গায় বিদ্যুৎ সন্ধ্যার পর চলে গিয়েছিল। কোথা কোথাও বিদ্যুৎ চলে যাওয়াতে জেনারেটর চালানো হয়।