কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
ভেষজ উদ্ভিদ পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে নামখানাতে ১৫০ বিঘা জমিতে ব্রাহ্মী চাষ দিয়ে সরকারি উদ্যোগে ঔষধিগুণসম্পন্ন গাছগাছালির ব্যাপকভাবে চাষের সূত্রপাত হয় বাংলায়। আর তার মাত্র তিন বছরের মধ্যে আয়ুর্বেদিক গুণসম্পন্ন গাছের চাষ কী পরিমাণ বেড়েছে, তা শুনলে অনেকের চোখই কপালে উঠবে। ১৫০ বিঘা থেকে ১০০ গুণ বেড়ে তা হয়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার বিঘা! বেঙ্গালুরু থেকে মুম্বই, চেন্নাই থেকে কোচি—দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আয়ুর্বেদিক ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা ছুটে আসছেন বাংলার ঔষধিগুণসম্পন্ন গাছগাছালি কিনতে! পর্ষদের এক কর্তা বলেন, এর মধ্যে দেশবিদেশে সাচেয়ে বেশি চাহিদা বাংলার ব্রাহ্মীর। গুণমানে এটি নিঃসন্দেহে ভারতসেরা!
রাজ্য ভেষজ উদ্ভিদ পর্ষদের অধিকর্তা ডাঃ প্রশান্ত সরকার বলেন, আমাদের লক্ষ্য আয়ুর্বেদিক গাছাগাছালির চাষ আরও বাড়ানো। একদিকে এর যেমন প্রচুর স্বাস্থ্যগুণ রয়েছে, তেমনি এগুলির চাষ গ্রামবাংলার অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছে। চাষিদের ঘরে টাকা আসছে।
সূত্রের খবর, এ ধরনের চাষে সরকার প্রচুর ভর্তুকিও দিচ্ছে। তারর পরিমাণ ৩০ থেকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত! যেসব আয়ুর্বেদিক গাছাগাছালির চাষে খরচ বেশি, সেগুলির ক্ষেত্রে ৭৫ শতাংশ, আর একটু কম খরচের চাষে ৫০ শতাংশ এবং প্রথম দুটির থেকে কম খরচের আয়ুর্বেদিক গাছের চাষ করলে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দিচ্ছে রাজ্য সরকার। তবে অতি অবশ্যই ক্লাস্টার করে চাষ করলে তবেই।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রের খবর, একটি ক্লাস্টারে ন্যুনতম ১০ জন চাষি ও ৩০ বিঘা জমি এবং ক্লাস্টারের নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। জমি হতে হবে চাষির নিজের। রাজ্য ভেষজ পর্ষদের অধীনে বর্তমানে ২০টি এমন ক্লাস্টার রয়েছে। সরকারের লক্ষ্য আগামী পাঁচ বছরে সেই সংখ্যাটি বাড়িয়ে ৩২-এ নিয়ে যাওয়া। আর চাষের জমির পরিমাণ ১৫ হাজার বিঘা থেকে বাড়িয়ে প্রায় দ্বিগুণ করা। ক্লাস্টার করে চাষ করলে ভর্তুকি দেওয়া ছাড়াও আচ্ছাদনের ব্যবস্থা করে চাষে সাহায্য করা, উৎপাদিত দ্রব্য মজুত করার জন্য ঘর বানিয়ে দেওয়া, এমনকী বিক্রিতেও সাহায্য করছে সরকার।
কোথায় কোথায় কী কী আয়ুর্বেদিক গাছের চাষ হচ্ছে? পর্ষদ সূত্রের খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ও সাগরে চাষ হচ্ছে ব্রাহ্মীর। একাঙ্গী (আদার মতো দেখতে ফল) চাষ বেশি হচ্ছে চার জেলায়—নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান ও বীরভূমে। সর্পগন্ধা চাষ হচ্ছে বাঁকুড়ায়। অ্যালোভেরা চাষ হচ্ছে নদীয়া, বীরভূম ও বাঁকুড়ায়। ভৃঙ্গরাজের চাষও বেশি দেখা যাচ্ছে নদীয়ায়। কতটা লাভ হচ্ছে চাষিদের? সরকারি হিসেব বলছে, ব্রাহ্মী চাষে বছরভর ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বিঘাপিছু আয় থাকছে। অন্যদিকে একাঙ্গীর মতো দামি গাছের চাষ ঠিকমতো করলে আয়ের অঙ্ক বিঘাপিছু ৭০-৭৫ হাজার ছাড়াতে পারে।