কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
সম্প্রতি, পুরুলিয়া পুরসভার সংরক্ষণের খসড়া তালিকা প্রকাশ হওয়ার পরেই শাসক দল তৃণমূলের কর্মীরা বিভিন্ন ওয়ার্ডে সক্রিয় হয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন। কোথাও খসড়া তালিকা প্রকাশের দিন থেকেই পুরসভার বর্তমান কাউন্সিলারের নেতৃত্বে দেওয়াল দখলের কাজ শুরু করে দেন তৃণমূল কর্মীরা। কোথাও আবার খসড়া তালিকার কারণে নিজের ওয়ার্ড হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা তৈরির জেরে কাউন্সিলাররা নিজেরা সক্রিয় না হলেও কর্মীরা নিজেদের এলাকায় দেওয়াল যুদ্ধে নেমে পড়েছেন। এবিষয়ে পুরুলিয়া পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার বিভাস রঞ্জন দাস বলেন, গতবার কংগ্রেসের টিকিটে জিতে কাউন্সিলার হয়েছিলাম। পরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছি। এবার আমার নিজের ওয়ার্ডে সংরক্ষণের খসড়া তালিকাতে কোনও সমস্যা হয়নি। খসড়া তালিকা প্রকাশের দিন থেকেই নিজের ওয়ার্ডে দেওয়াল লিখনের জন্য ‘সাইট ফর’ লেখা শুরু করে দেওয়া হয়েছে। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে দেওয়াল বুকিং করে রাখা হচ্ছে। আপাতত মৌখিক অনুমতি নেওয়া হচ্ছে। তবে পরে বাড়ির কর্তার লিখিত অনুমতিও নেওয়া হবে। দল আমাকে টিকিট দিলে ভোটে ফের দাঁড়াব। তবে দল অন্য কাউকেও যোগ্য মনে করলে তারজন্যও তো দেওয়াল লিখন চাই। সেই উদ্দেশ্যেই আগেভাগে দেওয়াল লিখনের কাজ শুরু করা হয়েছে।
এবিষয়ে পুরুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান সামিম দাদ খান বলেন, গতবার ২২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতে চেয়ারম্যান হয়েছি। তবে এবার তো খসড়া তালিকা অনুযায়ী ওই ওয়ার্ড মহিলাদের জন্য সংরিক্ষত হয়েছে। এই তালিকা খসড়া হলেও বিকল্প ভাবতেই হচ্ছে। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হলে তবেই দেওয়াল লিখনে কর্মীদের সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়ব। তবে বেশকিছু ওয়ার্ডে কর্মীরা নিজেরা সক্রিয় হয়ে দেওয়াল লিখনের কাজ করছেন। এতে তো আপত্তির কিছু নেই। কেউ তো আর প্রার্থীর নাম লিখছেন না। দলের প্রচার হতেই পারে।
প্রসঙ্গত, পুরুলিয়া শহরে গত পুরভোটে বিজেপি একটি আসনও না পেলেও এবার পরিস্থিতি পাল্টেছে। গত লোকসভা ভোটেও পুরুলিয়া শহরে বিজেপি অধিকাংশ ওয়ার্ডে এগিয়েছিল। তাই এবার প্রস্তুতির কোনও খামতি রাখতে চাইছে না পুরুলিয়া শহর বিজেপি। এবিষয়ে বিজেপির পুরুলিয়া শহরের বিজেপির সভাপতি সত্যজিৎ অধিকারী বলেন, খসড়া তালিকা প্রকাশের পর থেকেই ব্যস্ততা বেড়েছে একথা ঠিক। আপাতত বিভিন্ন ওয়ার্ডের ও বুথের কর্মীরা দেওয়ালে সাইট ফর লিখে রাখছি। এখনও পর্যন্ত অধিকাংশ দেওয়ালই বিজেপির দখলে রয়েছে। তবে তৃণমূল কিছু কিছু ওয়ার্ডে নোংরামি শুরু করেছে। আমাদের লেখা মুছে দিয়ে নিজেদের দলের সাইট ফর লিখে দিচ্ছে। এটা করা ঠিক নয়। প্রয়োজনে প্রতিবাদও করা হবে। তবে কাউন্সিলারের পদপ্রার্থী হওয়ার বিষয়ে এখনও আলোচনা শুরু না হলেও দেওয়াল লিখনে কোনও মতেই পিছিয়ে থাকতে চাইছি না আমরা। তাছাড়া লোকসভার নিরিখে বিজেপি তো পুরুলিয়া পুরসভায় এগিয়েই রয়েছে।
যদিও বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল নেতা বিভাসরঞ্জন দাস বলেন, তৃণমূল কেন বিজেপির দেওয়াল লিখন মুছতে যাবে। আসলে ওদের দেওয়াল লিখনেরও লোক খুঁজে না পাওয়ায় শুরু থেকেই তৃণমূলের নামে দোষারোপ করে সস্তায় জনপ্রিয়তা পেতে চাইছে। এতে পুরুলিয়া শহরের মানুষ বিভ্রান্ত হবেন না। দেওয়াল লিখনে পুরুলিয়া পুর এলাকায় উন্নয়নের কথাই প্রচার করা হবে। সেই মতো প্রস্তুতিও চলছে। মানুষ আমাদের নেত্রীর উন্নয়নের সঙ্গেই থাকবেন।