কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
যে উদ্দেশ্যে এদিন ধনকার এই বৈঠক ডেকেছিলেন তাও কতটা ফলপ্রসূ হয়েছে, সে ব্যাপারেও ধন্দ তৈরি হয়েছে। কারণ, বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান, বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী ও সিপিআই বিধায়ক অশোক ডিন্ডাদের সঙ্গে এদিনের বৈঠকের পর তিনি সংশ্লিষ্ট বিল দুটির ক্ষেত্রে তাঁর সম্মতিসূচক সাক্ষর কবে দেবেন, তা স্পষ্ট হয়নি। বরং এনিয়ে ২৬ জানুয়ারির পর আরও এক দফা এই ধরনের আলোচনা হওয়ার কথাই তিনি জানিয়েছেন। তাই বিল জটিলতা কাটার আশু লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না বলেই মনে করা হচ্ছে। এদিন সন্ধ্যায় বিরাটিতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর ধনকার অবশ্য বলেন, বিরোধী তিন পরিষদীয় নেতার সঙ্গে বৈঠক সদর্থক হয়েছে।
যে দুটি বিল নিয়ে রাজ্যপাল বনাম রাজ্যের সংঘাত চরমে উঠেছে, তার মধ্যে অন্যতম হল গণপিটুনি বিল। বিধানসভায় পাশ হওয়া এই বিল নিয়ে বিরোধী বাম ও কংগ্রেস শিবির পদ্ধতিগত ত্রুটির অভিযোগ এনে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়। তাদের মূল অভিযোগ ছিল, রাজ্যপালের অনুমোদনক্রমে যে বিলের খসড়া বিধায়কদের বিলি করা হয়েছিল এবং যেটি শেষমেশ অধিবেশনে পেশ করা হয় তার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। দুই বিলে গণপিটুনির মামলায় সর্বোচ্চ সাজার ক্ষেত্রে এই পার্থক্য নজরে আসে তাদের। একই নম্বরে তৈরি হওয়া দুটি খসড়ার মধ্যে এই ফারাক রেখে বিল পাশ করা হলে ভবিষ্যতে আইনি জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে তারা অভিযোগ জানায় অধিবেশনেই। কিন্তু সরকারপক্ষ পাল্টা আইনি যুক্তি তুলে ধরে তা নস্যাৎ করে সেই সময়। পরে নালিশ পেয়ে আইন ও সংবিধানের দৃষ্টিভঙ্গিতে মান্নান-সুজনদের অভিযোগের যথেষ্ট সারবত্তা রয়েছে বলে মনে করেন রাজ্যপাল। তারপর থেকে দফায় দফায় তিনি সরকার ও বিধানসভা কর্তৃপক্ষের কাছে এই প্রসঙ্গে নানা ধরনের তথ্য চেয়ে পাঠান। কিন্তু রাজ্যপালের অফিসের অভিযোগ, সব তথ্য তারা এখনও পায়নি। রাজ্য সরকার অবশ্য এই অভিযোগ খণ্ডন করে পাল্টা বলেছে, অহেতুক জটিলতা তৈরি করার উদ্দেশ্যেই রাজ্যপাল এভাবে পাশ হওয়া বিল আটকে রেখেছেন। দ্বিতীয় বিলটি এসসি-এসটি কমিশন গঠন কেন্দ্রিক। এই বিলটি বিধানসভায় পেশ করার জন্য পাঠানো হলেও সংবিধান মেনে তিনি এবিষয়েও বেশ কিছু তথ্য চেয়ে পাঠান। কিন্তু সেই সব তথ্য বা সে বিষয়ে সন্তোষজনক উত্তরও সরকার তাঁকে দেয়নি বলে ধনকারের অভিযোগ। এদিন বৈঠকে সরকারের সঙ্গে তাঁর চিঠি চালাচালির সব কপি ধনকার বিরোধী তিন নেতার হাতে তুলে দিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন।
মুখ্যমন্ত্রীর না যাওয়া প্রসঙ্গে পার্থবাবু এদিন সাফ জানিয়েছেন, এই রকম বৈঠক ডাকার ক্ষমতা ওঁকে কে দিয়েছে? আমরা কেউ ওঁর সঙ্গে দেখা করতে যাব না। বিরোধীরা ওঁর কাছে বারবার যাক। দিলীপ ঘোষরা তো পড়েই থাকেন ওখানে। বৈঠক শেষে মান্নান-সুজন বলেন, গণপিটুনি বিল নিয়ে আইন ও সংবিধানের প্রশ্নে রাজ্যপালের অবস্থান বেঠিক বলে আমরা মনে করি না। রাজ্য সরকার জেদের বশে যেভাবে পদ্ধতিগত ত্রুটি রেখে বিলটি গায়ের জোরে পাশ করিয়েছে, তাতে বল এখন তাদের কোর্টেই। আর এসসি-এসটি কমিশন সংক্রান্ত বিলটি নিয়ে আমরা কোনও মতামত দিতে চাইনি। কারণ, ওই বিলের বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না।