কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষক রূপে নিয়োগ করে দেওয়া ও পঞ্চায়েত সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার অভিযোগে সোমবার গভীর রাতে গ্রেপ্তার করা হয় লাভপুরের বিধায়ক তথা বর্তমান বিজেপি নেতা মনিরুল ইসলামের দাদা নুরুল ইসলামকে। তার সঙ্গেই গ্রেপ্তার করা হয় নুরুল ইসলামের ছেলে মহম্মদ ওমর ও বিধায়কের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আনারুল মণ্ডলকে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এই তিনজনের বিরুদ্ধে লাভপুর, নানুর, আহমদপুর সহ বেশকিছু জায়গা থেকে টাকা তোলার অভিযোগ ওঠে। গত ২০ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে লাভপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। তারপর সোমবার গভীর রাতে লাভপুরের নবগ্রাম থেকে নুরুল ইসলাম ও তার ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদিকে আনারুল মণ্ডলকে বোলপুরের জামবুনি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে তাদের তিনজনকে বোলপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। পুলিস ধৃতদের জন্য ১৪ দিনের হেফাজত চাইলেও অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক অয়নকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের ১০ দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেন। নুরুল ইসলাম ও তার ছেলের বিরুদ্ধে ৪৪৮ ধারায় বাড়িতে প্রবেশ করে প্রাণে মারার হুমকি, ৩৭৯ ধারায় চুরি, ৩০৭ ধারায় হত্যার চেষ্টা, ৪২ ধারায় ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে মামলা শুরু হয়েছে। তার সঙ্গে তিনজনের বিরুদ্ধে ৪২০ ধারায় প্রতারণা ও ৪০৬ ধারায় বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ তোলা হয়েছে। এদিন বোলপুর মহকুমা আদালতে আনারুল মণ্ডল দাবি করে, বিজেপি করার অপরাধে ষড়যন্ত্র করে তাদের ফাঁসানো হচ্ছে। বিধায়ক মনিরুল ইসলাম বিজেপিতে চলে যাওয়ায় চক্রান্ত করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। অন্যদিকে বিধায়কের দাদা নুরুল ইসলামের দাবি, তিনি বরাবরই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। যতই কলঙ্কিত করা হোক বা বাধ্য করা হোক তৃণমূল ছেড়ে যাবেন না। যদিও কেন তাকে গ্রেপ্তার করা হল তা তিনি জানেন না। তবে, এবিষয়ে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।
প্রসঙ্গত, গতবছর লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম। তারপর থেকে একবারও তাঁর বিধানসভা এলাকায় আসেননি তিনি। ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটের পর তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। তার আগে ফরওয়ার্ড ব্লক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মনিরুল ইসলাম। রাজ্যে পালাবদলের আগে বাম আমলে ২০১০ সালে বালিঘাটের দ্বন্দ্ব মেটানোর জন্য লাভপুরের নবগ্রামে মনিরুল ইসলামের বাড়ির উঠোনে সালিশি সভা বসে। সেই সালিশি সভায় বচসার জেরে একই পরিবারের তিন ভাই কটুন শেখ, তরুক শেখ ও ধানু শেখকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রূপে নাম উঠে আসে মনিরুল ইসলামের। কিন্তু, ২০১৬ সালে পুলিস যে চার্জশিট গঠন করেছিল তাতে নাম বাদ গিয়েছিল মনিরুল ইসলামের। পরবর্তীতে বিজেপিতে যোগদানের কয়েকমাস পর ফের গতবছর ডিসেম্বর মাসে পুলিস নতুন সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করলে তাতে নাম যুক্ত হয় তার। সেসময় অভিযোগ উঠেছিল বিজেপিতে যোগদান করার জন্যই ফের চার্জশিটে নাম আসে মনিরুলের। আবার বিধায়কের দাদা ও তার সহযোগী গ্রেপ্তার হওয়ার পর রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে জেলায়।