কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
গত সেপ্টেম্বেরে বিধানসভায় দফাওয়ারি বাজেট অধিবেশন চলাকালীন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বামফ্রন্টের সঙ্গে যৌথভাবে এনআরসি বিরোধী সর্বদলীয় প্রস্তাব আনতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদন অনুমোদন না পেলেও ৬ সেপ্টেম্বর শাসকদলের তরফে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আনা প্রস্তাব পাশ হয়েছিল বিধানসভায়। সেই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী নিজেই অংশ নিয়েছিলেন। তিনি স্পষ্ট বলেছিলেন, কোনও মতেই বাংলায় এনআরসি করতে দেওয়া হবে না। বিজেপি বাদে বিরোধী দলের প্রতিনিধিরাও ঐক্যবদ্ধভাবে এনআরসি বিরোধী অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন। সেখানে প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল (সিএবি) সম্পর্কেও মুখ্যমন্ত্রী সহ বিরোধী সদস্যরা তাঁদের আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন। ডিসেম্বরের ১১ তারিখ সংসদের উভয়কক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সিএবি পাশ হয়ে আইন (সিএএ) তৈরি হয়। সপ্তাহখানেক আগে সিএএ লাগুর বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে কেন্দ্র। তার প্রেক্ষিতে প্রতিবাদে সরব মমতা রাস্তায় নামেন। এনআরসির সঙ্গে জাতীয় জনসংখ্যা নিবন্ধীকরণের (এনপিআর) বিরোধিতা এবং সিএএ প্রত্যাহারের দাবিকে সামনে রেখে জেলায় জেলায় পদযাত্রা করে চলেছেন মমতা। সম্প্রতি, রাজ্য সফরে আসা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এনঅআরসি এবং এনপিআর বাংলায় তাঁরা মানবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, সিএএ প্রত্যাহারের আর্জিও তিনি মোদিকে জানিয়েছেন।
এবার পরিষদীয় রাজনীতিতেও সিএএ বিরোধিতা নথিভুক্ত করতে তৎপর হয়েছেন মমতা। এদিন তিনি জানান, খুব শীঘ্রই বিধানসভায় সিএএ নিয়ে রাজ্যের আপত্তি জানিয়ে প্রস্তাব পাশ করানো হবে। অর্থাৎ নাগরিকত্ব বিতর্ককে হাতিয়ার করে বিজেপি বিরোধী আন্দোলনে শান দিয়ে চলেছেন মমতা। প্রত্যাশিত কারণে এই প্রস্তাবে সায় থাকবে না বিজেপির। গত মাসে একই প্রস্তাব আনতে চেয়ে ব্যর্থ হয়েছিল বিরোধীরা। সেই কারণেই মমতার এদিনের সিদ্ধান্তকে তারা কটাক্ষ করলেও স্বাগত জানিয়েছে। কংগ্রেস পরিষদীয় দলের মুখ্যসচিব মনোজ চক্রবর্তী বলেন, গত ৯ জানুয়ারি সিএএ নিয়ে রাজ্যবাসীর আপত্তির বিষয়ে সর্বদলীয় প্রস্তাব আনতে চেয়েও অনুমোদন মেলেনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, এনআরসি নিয়ে প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। আলাদা করে ফের সিএএ নিয়ে প্রস্তাবের প্রয়োজন নেই। মনোজের মতে, মুখ্যমন্ত্রী দেরিতে হলেও তাঁদের দাবি মেনে নিয়ে প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কেরলের বাম সরকার বিরোধী কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে রাজ্য বিধানসভায় ওই ধরনের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। সেই দৃষ্টান্ত তুলে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী মুখ্যমন্ত্রীকেও সিএএ’র প্রতিবাদে বাংলার বিধানসভায় প্রস্তাব আনার আবেদন জানান। এদিন তার জের টেনে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের দাবি, প্রথমে না মানলেও চাপে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত বদলেছেন, যাকে স্বাগত জানাচ্ছেন তাঁরা। তবে মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবে কী থাকবে, সেদিকেই নজর রয়েছে বলে জানিয়েছেন সূর্যবাবু।