অত্যধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। আধ্যাত্মিক ... বিশদ
আসলে লেবু অতিরিক্ত কচলালে তেতো হয়ে যায়। আইপিএলের ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটেছে। পাঁচ মাসের ব্যবধানে পর পর দু’টি টুর্নামেন্ট। বদ হজম তো হবেই! তার উপর কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে ফের বিপর্যস্ত জনজীবন। প্রত্যেক দিনই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে হচ্ছে আমজনতাকে। এই পরিস্থিতিতে ক্রিকেটের এই মেগা শো’য়ের রসাস্বাদন কার ভালো লাগে! উন্মাদনায় ভাঁটা পড়ার পিছনে দর্শকশূন্য গ্যালারিও যেন অনুঘটকের কাজ করেছে। ইডেনে কেকেআরের ম্যাচ থাকলে দুপুর থেকেই সরগরম থাকত ময়দান চত্বর। বটতলায় ঘোড়সওয়ার পুলিসের সঙ্গে লুকোচুরি চলত টিকিটের কালোবাজারিদের। নির্ধারিত মূল্যের তিন গুণ চুকিয়েও মাঠে বসে খেলা দেখতে কুণ্ঠা করতেন না শহরবাসী। এবার সেই সুযোগ নেই।
এই সব প্রতিকূলতার মাঝেও আইপিএলকে আগের মেজাজে পাওয়া যেত, যদি ম্যাচে রোমাঞ্চ ও বিনোদন থাকত বেশি। কিন্তু চতুর্দশ আইপিএলে তারকাদের ব্যাটে রান নেই। লো স্কোরিং ম্যাচ যেন আবেগটাই শুষে নিচ্ছে। এগারোটির মধ্যে মাত্র দু’টি ম্যাচে হয়েছে দু’শোর বেশি রান। ছ’টি শেষ হয়েছে আবার দেড়শোর আশেপাশে। চেন্নাই-পাঞ্জাব ম্যাচের নিষ্পত্তি ঘটে ১০৭ রানে। আর এটা যদি ট্রেন্ড হয়, তা মোটেও ভালো বিজ্ঞাপন হবে না আইপিএলের পক্ষে।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, দেশের মাটিতে আইপিএল হওয়া সত্ত্বেও রানের ঘাটতি কেন? আসলে ক্রিকেট খেলার ভরকেন্দ্র হল বাইশ গজ। পিচের চরিত্রের উপর নির্ভর করে ম্যাচের গতি প্রকৃতি। এবারের আইপিএলে প্রথম পর্বের খেলাগুলি হচ্ছে চেন্নাইয়ের চিপক এবং মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে। দুটি ভেন্যুর উইকেটের চরিত্র একটু ভিন্ন। এপ্রিলের মাঝামাঝি চেন্নাইয়ে প্রচণ্ড গরম। তাই উইকেট থেকে বাউন্স কার্যত ভোকাট্টা। বল ঠিকভাবে ব্যাটে না আসায় শট খেলতে সমস্যা হচ্ছে। দেড়শো রান তুলেও তাই জিতে যাচ্ছে দলগুলি।
এছাড়া, ডানহাতি ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধে দারুণ কার্যকরী হচ্ছেন বাঁহাতি স্পিনাররা। এই ফর্মুলা অনেক দলই সফলভাবে প্রয়োগ করছে। দু’টি ভেন্যুতেই স্পিনাররা সুবিধা পাচ্ছেন কমবেশি। তাই রাহুল চাহার, চেতন সাকারিয়া, শাহবাজ আহমেদ, যুজবেন্দ্র চাহালদের ভূমিকাও নজরে পড়ছে। তাছাড়া সাদা বল এমনিতেই তাড়াতাড়ি নরম হয়ে যায়। তার উপর পিচ মন্থর হলে ব্যাটে-বলে সঠিক সংযোগ ঘটিয়ে বড় শট খেলা কঠিন। একই সঙ্গে বোলারদের প্রশংসা করতেই হবে। টি-২০ ক্রিকেটে টিকে থাকতে তাঁরা নতুন নতুন কৌশলও রপ্ত করে ফেলেছেন। বোলিংয়ে বৈচিত্র্য ঘটিয়ে নজর কাড়ছেন নবাগতরাও। দীপক চাহার কিংবা হার্শল প্যাটেলের সাফল্যে সেটাই স্পষ্ট। দীপক দু’দিকেই বল স্যুইং করাচ্ছেন। পাশাপাশি আর্শদীপ, উনাদকাটও সীমিত সাধ্যের মধ্যে গতির তারতম্য ঘটিয়ে সফল। ব্যাটসম্যানদের কাছে সেটাই যেন ধাঁধা। এবারের আইপিএলে ব্যাটসম্যানশিপও কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ধারে নয়, অনেকে ভারে কাটার চেষ্টা করছেন। ‘অচল আধুলি’র মতো অবস্থা গেইল, রাসেল, কার্তিকদের। রিফ্লেক্স কমেছে ধোনিরও।আইপিএল শুধু তারকাদের মঞ্চ নয়। নতুন তারকাদেরও জন্ম দিয়ে থাকে। তবে টুর্নামেন্টের জৌলুস বাঁচাতে অগ্রণী ভূমিকাটা কিন্তু রোহিত, কোহলিদেরই নিতে হবে।