কর্মে সাফল্য ও সুনাম বৃদ্ধি। ব্যবসায় অগ্রগতি ও প্রসার। অর্থাগম যোগ শুভ। স্বাস্থ্য বিশেষ ভালো ... বিশদ
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, লালগোলাতেও হেরোইন তৈরির জন্য রাসায়নিক মণিপুর থেকে আসত। সেখানে কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর পদ্মাপাড়ের কারবারিরাই মণিপুরের রাসায়নিক সরবরাহকারীদের সঙ্গে রাহুলের যোগাযোগ করিয়ে দেয়। লালগোলা থেকে ক্রেতাও ঠিক হয়ে যায়। রাহুলের শ্বশুড়বাড়ি শক্তিপুর থানা এলাকায়। সেই কারণে মুর্শিদাবাদের রুট দ্রুত তার কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছিল। লালগোলা থেকে ভিন রাজ্যের ক্রেতারা বর্ধমানমুখী হয়ে যাওয়ায় তাদের কারখানার রমরমা শুরু হয়। কয়েক বছরে তাদের কারবারে প্রায় ১০০কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলে তদন্তকারীদের অনুমান। এক আধিকারিক বলেন, রাজ্যকে মাদক মুক্ত করতে এসটিএফ বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে। ২০২১ সালে প্রচুর পরিমাণ হেরোইন সহ প্রায় ১০ জন কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একসময় লালগোলা ছাড়া অন্য কোথাও হেরোইন তৈরি হতো না। কিন্তু এখন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট কারখানা গজিয়ে উঠেছে।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, মালদহ, হুগলি ও বর্ধমানে মাদক কারবারের কয়েকটি গ্যাং রয়েছে। তবে তারা নিজেরা হেরোইন তৈরি করে না। বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদক কিনে এনে ছোট ছোট পুরিয়া তৈরি করে বিক্রি করে। প্রতি পুরিয়া ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়। তাদের সরবরাহ করা হেরোইনের মান ততটা উন্নত নয়। কিন্তু বর্ধমানে রাহুলের কারখানায় তৈরি হওয়া মাদক অনেক উন্নতমানের ছিল। দামও অনেক বেশি। তা বেশিরভাগই উত্তরপ্রদেশ ও ওড়িশায় যেত। ওড়িশার এসটিএফ তাকে জেরাও করেছে। সেই রাজ্যের কয়েকজন কারবারির নামও সে জানিয়েছে।
খোদ বর্ধমান শহরে দিনের পর দিন পিতাপুত্র কারখানা চালালেও পুলিসের ‘র্যাডারে’ তা এল না কেন? তদন্তকারীরা মনে করছেন, এক্ষেত্রে রাহুল অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে। সে জেলার কাউকেই হেরোইন বিক্রি করত না। বাইরের এজেন্টরা এসে তাদের কারখানা থেকে মাদক নিয়ে যেত। তার কারবার সম্পর্কে সে তার ঘনিষ্ঠদেরও জানায়নি। স্থানীয় এলাকায় হেরোইন বিক্রি হলে কেউ না কেউ ধরা পড়তই। গ্রেপ্তার করার পর তাকে জেরা করলেই বিক্রেতার নাম জানা যেত। বর্ধমান থানার পুলিস বিগত এক বছরে বেশ কয়েকজন হেরোইন ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছিল। হুগলির পাণ্ডুয়ার এক বিক্রেতার কাছে থেকে তারা মাদক এনেছিল। তাদের কেউই রাহুল বা তার বাবার নাম জানায়নি। তারা জেলায় কারবার করলে সহজেই পুলিসের র্যাডারে চলে আসত। সেটা রাহুল ভালোই জানত। সে কলেজ পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। পড়াশোনায় খুব খারাপ ছিল না। অত্যন্ত কৌশলে সে কারবার চালাত। সেই কারণে সে বর্ধমান শহরে কারবার ফাঁদলেও পুলিসের নজরে আসেনি।