রামকুমার আচার্য ,বাঁকুড়া : ভোট মিটে গিয়েছে। তাই এবার নজর গণনায়। বাঁকুড়ায় গণনার দিন কীভাবে কাজ হবে তার রূপরেখা তৈরি করল তৃণমূল। রবিবার বাঁকুড়ার সতীঘাটে জেলা তৃণমূল ভবনে বৈঠকে বসেন জেলা কমিটির নেতারা। সেই বৈঠকে জেলার ১২ কেন্দ্রের প্রার্থীরা ছিলেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা সোনামুখীর প্রার্থী শ্যামল সাঁতরা বলেন, এদিন বৈঠকে গণনা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। তার সঙ্গে প্রত্যেক ব্লকের নেতাদের সঙ্গে কথা বলা হয়। ভোট নিয়ে পর্যালোচনাও করা হয়েছে। ভোটের পর প্রত্যেক বুথ, অঞ্চল স্তরে পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছিল। সেইমতো তা হয়েছে। তার ভিত্তিতেই এদিন প্রত্যেক ব্লকের সভাপতি, নির্বাচনী এজেন্ট ও প্রার্থীরা জয় যে নিশ্চিত এমনই ব্যাখ্যা দিয়েছেন। 
তৃণমূলের অন্দরে এমন পর্যালোচনাকে অবশ্য কটাক্ষ করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বিজেপির বিষ্ণপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজিত অগস্তি বলেন, বাঁকুড়ায় জয় নিয়ে তৃণমূল পাগলের প্রলাপ বকছে। তারা অবশ্য জয় নিয়ে দাবি করতেই পারে। কিন্তু ফল ঘোষণার পরই আসল চিত্র বেরিয়ে আসবে। বাঁকুড়ায় বিজেপি ১২-০ শূন্য ফলে জিতবে।
সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি বলেন, ফল ঘোষণার আগে সবাই জয়ের ব্যাপারে দাবি করতে পারে। তবে তৃণমূল ও বিজেপি উভয়দলই মানুষকে বিপদে ফেলেছে। এরা যদি বিদায় না হয় তাহলে মানুষের সমূহ বিপদ। তাই ২ মে-র পরই বোঝা যাবে কী ফল হল।  
প্রসঙ্গত, বাঁকুড়ায় প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় ১২টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। জেলায় দু’টি দফাতেই প্রায় অশান্তি ছাড়াই ভোট হয়েছে। ফলে চুপচাপ ভোটে মানুষের সমর্থন কোন দিকে যাবে তা নিয়ে জেলাজুড়ে কাঁটাছেঁড়া করেছেন নেতারা। রাজনৈতিক দলগুলির পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও ফল নিয়ে আলোচনা চলছে। 
তৃণমূলের দাবি, ভোটের অঙ্ক কষতে প্রত্যেক বুথ ও ব্লক কমিটিকে বলা হয়েছিল। এদিন জেলা কমিটির সদস্যদের নিয়ে তার ভিত্তিতেই বৈঠক হয়। এদিনের বৈঠকেই জয়ের ব্যাপারে যে তৃণমূল নেতারা আশাবাদী তা জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল প্রার্থী বলেন, কম মার্জিন হলেও সব আসনে জয় হবে এদিন বৈঠকে সবাই তাই বলেছেন। তবে তা সত্ত্বেও কিছুটা হলেও সংশয় রয়েছে। 
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিনের বৈঠকে গণনা নিয়েও আলোচনা করা হয়। প্রত্যেক বিধানসভা কেন্দ্রের সক্রিয় ও অভিজ্ঞ কর্মীদেরই কাউন্টিং এজেন্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার সঙ্গে এজেন্টদের ভোট গণনার দিন সকাল সাড়ে ৬টার মধ্যে কেন্দ্রে হাজির হতে বলা হয়েছে। জেলা তৃণমূলের দাবি, ওইদিন বাঁকুড়া, খাতড়া ও বিষ্ণুপুর তিন জায়গার গণনা কেন্দ্রের বাইরে একটি করে বড় তাঁবু করা হবে। সেখানে সংশ্লিষ্ট বিধানসভা এলাকার নেতা-কর্মীরা থাকবেন। এমনকী, গণনার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সবাইকেই থাকতে নির্দেশ দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। 
তালডাংরার তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী বলেন, কোন বিধানসভার জন্য গণনায় কতগুলি টেবিল হবে তা নেতৃত্বকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেইমতো এজেন্টদের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। ভোটের পর্যালোচনাতেও জেলায় জয় নিয়ে সদর্থক বক্তব্য পাওয়া গিয়েছে।