বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে আজকের দিনটা শুভ। কর্মক্ষেত্রে আজ শুভ। শরীর-স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। লটারি, শেয়ার ... বিশদ
অন্যদিকে, এদিন প্রিন্সিপাল সহ চার শিক্ষক আদালতে গিয়ে সিজেএমের কাছে হাজিরা দেন। পাশাপাশি চার্জশিটে নাম থাকা রূপমের সহপাঠী জুভেনাইল আদালতে হাজিরা দেয়। রূপমের পরিবার নতুন করে ঘটনার তদন্তের দাবি জানানোয় শুনানি শুরুর প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায়। তবে হাজিরার পর প্রিন্সিপাল সহ শিক্ষকরা অবশ্য সংবাদ মাধ্যমের কাছে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
বুধবার আইনজীবী মারফত ঘটনার পুনরায় তদন্তের দাবি জানানোর পর রূপমের বাবা চক্রধর পাল বলেন, পুলিসের দেওয়া রিপোর্টে আমার ছেলের মাথায় আঘাত করার বিষয়টি নিয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলা হয়নি। শুধু তাই নয়, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে আমি গাফিলতির কথা জানিয়েছিলাম। কিন্তু, চার্জশিট বা সিডিতে সেই বিষয়ে পরিষ্কার কোনও তথ্য নেই। তাই আমি আদালতের কাছে পুনরায় তদন্তের আর্জি জানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। তাকে তো আর ফিরে পাব না। তবে আমি চাই, ছেলের মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী প্রশাসন তাদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করুক। যাতে আমার মতো আর কাউকে সন্তানহারা না হতে হয়, সেটা সুনিশ্চিত করতে চাই।
প্রসঙ্গত, ২৩ জুলাই ওন্দার রতনপুরের বাসিন্দা তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র রূপম পাল অন্যান্য দিনের মতোই পুয়াবাগানের ওই বেসরকারি বিদ্যালয়ে আসে। রূপমের পরিবারের অভিযোগ, টিফিনের সময় বিদ্যালয়ের মাঠে খেলাধুলো করছিল রূপম। সেই সময় তারই এক সহপাঠী রূপমকে মারধর করে। তারপর সে অস্বস্তি অনুভব করলে ক্লাসে গিয়ে বেঞ্চের উপর মাথা রেখে বসেছিল। সেই সময় সায়েন্সের ক্লাস নিতে আসা শিক্ষিকা তাকে মারধর করে। তারপরেই রূপম অসুস্থ হয়ে পড়ে। এভাবে কয়েক ঘণ্টা কাটার পর বিকেলে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই তাকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে পরিবারের লোকজনকে খবর দেয়।
ভর্তির সময় থেকেই রূপম আইসিসিইউতে ছিল। তবে সেখানে ভর্তি থাকাকালীন তার জ্ঞান ফেরেনি। ৯ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার পর হাসপাতালেই তার মৃত্যু হয়। এরপরেই রূপমের বাবা সহপাঠী ও বিদ্যালয়ের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পর প্রিন্সিপাল সহ শিক্ষদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পর ওই বিদ্যালয়ের পাশাপাশি জেলাশাসকের অফিসে এসেও অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখান। মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের জন্য মহকুমা শাসক, জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিকের প্রতিনিধি ও পুলিসকে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন। অন্যদিকে, বাঁকুড়া থানার পুলিসও আলাদা করে তদন্ত করে। তদন্তের পর ২৩ জনকে সাক্ষী করে পুলিস প্রিন্সিপাল সহ ৬ শিক্ষক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করে।
ওই স্কুলের এক অভিভাবক সব্যসাচী সরকার বলেন, রূপমের দুর্ঘটনার পর আমরা স্কুলের পরিকাঠামো সম্পর্কে একগুচ্ছ দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনের কাছে জানিয়েছিলাম। কিন্তু, তারপর প্রায় পাঁচ মাস কেটে গেলও স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকী, আমাদের সঙ্গে আলাদা করে কোনও অভিভাবক বৈঠকও করেনি। আমরা চাই, পরিকাঠামোগত বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিক।