যারা বিদ্যার্থী তাদের মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে। নানা বিষয়ে খুঁতখুঁতে ভাব জাগবে। গোপন প্রেম থাকলে ... বিশদ
জেলার বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ, জঙ্গিপুর, রঘুনাথগঞ্জ, আহিরন, সূতি, ফরাক্কা, সামশেরগঞ্জ, কান্দি, সাগরদিঘি, লালগোলা সর্বত্রই জ্বালাধরা গরমে মানুষ নাকাল হন। ভোর ৬টা থেকেই চড়া রোদ গায়ে-চোখে জ্বালা ধরিয়ে দিচ্ছে। বেলা গড়ার সঙ্গে তাপমাত্রা আরও বাড়ছে। ফ্যানের তলায় বসেও স্বস্তি মিলছে না। জেলাসদর বহরমপুরে গত সাতদিন ধরে তাপমাত্রা ৩৯-৪০ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। এরমধ্যেই শহরের অনেক জায়গায় বিদ্যুতের পুরনো তার বদলে কেবল তার বসানোর কাজ চলায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ থাকছে। ফলে জনজীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। কিছু এলাকায় জলসঙ্কট থাকায় চাষে ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, জেলায় ফণী ঝড় আছড়ে পড়ায় দু’দিন আবহাওয়া ঠান্ডা ছিল। তারপর মাঝে একদিন সামান্য ঝড়বৃষ্টি হলেও আর বৃষ্টির দেখা নেই। গ্রামের মানুষজন বাড়ি, পাড়ার মোড়ের দোকান ছেড়ে বড় বট, পাকুড় গাছের তলায় গল্পগুজব করছেন। চায়ের দোকানে বসে সতু সুত্রধর বলছিলেন, গরমে আর ভালো লাগছে না। তার উপর কাজ করতে হচ্ছে। এক আইসক্রিম বিক্রেতা গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেওয়ার সময় বলেন, গ্রামে গেলে সব বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই রোদে খুব কষ্ট হচ্ছে।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, এইরকম অস্বস্তিকর আবহাওয়া আরও কয়েকদিন চলবে। গরমের কারণে প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক সহ হাইস্কুল আগেই ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে ছাত্রছাত্রীরা বাড়ির বাইরে বেরচ্ছেন না। অসহ্য গরমের কারণে নিতান্তই প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে বেরচ্ছেন না। জঙ্গিপুর শহরের তাপমাত্রা ৩৮-৩৯ডিগ্রির আশপাশে ছিল। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় গরমে হাঁসফাঁস করছেন মানুষজন। জঙ্গিপুর কলেজের ভূগোল বিভাগের এক অধ্যাপিকা বলেন, এই অঞ্চলে পলিমাটির ভাগ বেশি, ফলে আবহাওয়া শীতল থাকারই কথা। কিন্তু এখন মে মাস, এই সময়ে গরমের মাত্রাটা একটু বেশিই থাকে। কারণ এটা প্রি-মনসুন ওয়েদার। কাজেই আবহাওয়া যদি এখন এমন না থাকে তবে, বর্ষার উপর প্রভাব পড়তে পারে। তাছাড়া বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরম পড়েছে।
প্রচণ্ড গরমে ফুটপাতের ঠান্ডা পানীয় বিক্রেতাদের চাহিদা বাড়ছে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না কেউ। সকলেই ছাতা, জলের বোতল সঙ্গে নিয়ে বেরচ্ছেন। মহিলারা মুখে কাপড় বা স্কার্ফ জড়িয়ে পথে বেরচ্ছেন। জঙ্গিপুর হাসপাতালের সুপার ডাঃ সায়ন দাস বলেন, এইসময় বাড়ির বাইরে না বেরনো ভালো। তবে জরুরি কাজে বাইরে বেরলে পুরো শরীর ঢাকা সূতির পোশাক, ছাতা, প্রচুর পরিমাণে জল ও ফল খেতে হবে। কারণ, এই সময়ে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। এইসময় কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তৎক্ষনাৎ হাসপাতালে ভর্তি করা উচিত। তিনি আরও বলেন, গরমে শরীর ঠিক রাখতে বেশি করে জল খেতে হবে, সেইসঙ্গে ওআরএস, ডাবের জল, তরমুজ, কলা ও রসালো ফল খেতে হবে।