অত্যধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। আধ্যাত্মিক ... বিশদ
সাধারণ মানুষের এই মাস্ক না পরার বিষয়টি নিয়ে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের আধিকারিকরাও উদ্বিগ্ন। তাঁদের দাবি, কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর, প্রশাসন যা ব্যবস্থা নেওয়ার নিচ্ছে। কিন্তু, সাধারণ মানুষকে সচেতন হয়ে মাস্ক ব্যবহার সহ অন্যান্য কোভিড প্রোটোকল মানতে হবে। না হলে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সমস্যা হবে।
কয়েকদিন ধরে জেলায় করোনা সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী। এই মুহূর্তে জেলায় মহারাজা জিতেন্দ্রনারায়ণ মেডিক্যাল কলেজে কোভিড ওয়ার্ড ও দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। চকচকায় আগের কোভিড হাসপাতালটি কিছুদিন আগেই বন্ধ করা হয়েছে। সেটি প্রয়োজনে চালু করা যায় কি না, তা স্বাস্থ্যদপ্তরের বিবেচনায় রয়েছে।
মহারাজা জিতেন্দ্রনারায়ণ মেডিক্যাল কলেজের সুপার ডাঃ রাজীব প্রসাদ বলেন, মেডিক্যাল কলেজের কোভিড ওয়ার্ডে ৪০ থেকে ৪৫টি বেড আছে। দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালেও কোভিড ওয়ার্ড রয়েছে। কিন্তু বড় বিষয় হচ্ছে, সাধারণ মানুষকে সঠিকভাবে মাস্ক পরতে হবে। ভিড়ের মধ্যে যাওয়া যাবে না। অথচ এসব অনেকেই মানছে না। আমরা আমাদের দিক থেকে প্রস্তুত রয়েছি। আমাদের এখানে একটি ফিভার ক্লিনিক করা রয়েছে। যাঁদের প্রয়োজন নেই, তাঁদের ভর্তি করা হয় না। যাঁদের সেফ হোমে বা হোম কেয়ারে রাখা যাবে, তাঁরা সেখানেই থাকবেন। প্রয়োজন অনুসারে এখানে বেড সংখ্যা বাড়ানো হবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৩ এপ্রিল জেলায় কোভিডের টাস্ক ফোর্সের বৈঠক হয়েছে। জেলায় প্রতিদিন কোভিড টেস্টের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। জেলায় মাস্ক, ফেসশিল্ড, পিপিই, অক্সিজেন সিলিন্ডার, কোভিডের প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রভৃতি সঠিক রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হয়েছে। জেলায় ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ আগেই শুরু হয়েছে। যাঁরা হাইরিস্কের মধ্যে রয়েছেন, তাঁদের ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে গ্রামীণ এলাকায় একটি সমীক্ষা চালানো হবে। জেলার মহকুমা শাসকদের জানানো হয়েছে, তাঁরা যেন মহকুমা ও পুরসভাস্তরে কোভিড টাস্ক ফোর্সের মিটিং জরুরি ভিত্তিতে করেন। সেইসঙ্গে জেলা ও মহকুমা স্তরে নার্সিংহোমগুলির সঙ্গে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও মহকুমা শাসকরা বৈঠক করবেন। জেলার প্রতিটি মহকুমায় রোগীদের দিকে লক্ষ্য রেখে কমপক্ষে একটি করে সেফ হোম তৈরির কথা বলা হয়েছে।
কোচবিহার জেলায় ৯ এপ্রিল করোনা পজিটিভের সংখ্যা ছিল ১৬। এরপরের দিনগুলিতে জেলায় যথাক্রমে ১৭, ১১, ১১, ১৬, ২৩, ৩২, ৪২ ও ৩৯ জন করে মানুষ করোনা পজিটিভ হয়েছেন। অর্থাৎ ক’দিন ধরে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে যেকোনও জায়গার ভিড় এড়িয়ে চলা, মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। করোনা পরিস্থিতির শুরুর দিন থেকে গত শনিবার পর্যন্ত জেলায় মোট ১০ হাজার ৪৭৮ জন সংক্রামিত হয়েছেন। তারমধ্যে এখনও পর্যন্ত ১০ হাজার ১৯৯ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। জেলায় এখনও পর্যন্ত ৭২ জন কোভিড আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। বর্তমানে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ২০৭।