নতুন কোনও কর্ম পরিকল্পনায় সাফল্যের ইঙ্গিত। লটারি বা ফাটকায় প্রাপ্তি যোগ। খেলাধূলায় কৃতিত্ব। বাক্যে ও ... বিশদ
মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, এদিন জেলার ১৫টি ব্লকে বাংলার আবাস যোজনা প্রকল্পের প্রায় ৩০ হাজার উপভোক্তার সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। আমি গাজোল ও চাঁচলের একাধিক শিবির ঘুরে দেখেছি। কাটমানি না দেওয়ার জন্য উপভোক্তাদের বলা হয়েছে। আমরা মোট ৭৬ হাজার উপভোক্তার সঙ্গে মুখোমুখি বসার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছি। আজ, শনিবার সরকারি ছুটি রয়েছে। ফলে বিডিও সহ ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা শিবিরের কাজে মনোনিবেশ করতে পারবেন। ফলে শনিবারের মধ্যেই বাকি উপভোক্তাদের সঙ্গে আমরা সাক্ষাৎ করতে পারব। এই কর্মসূচি থেকে যাতে একজনও বাদ না পড়েন, তা দেখা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে গৃহ নির্মাণের প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলার আবাস যোজনা প্রকল্পে উপভোক্তা পিছু সরকার মোট ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে থাকে। বাড়ি তৈরির আগে প্রথম কিস্তিতে ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। লিনটেল ঢালাই হওয়ার পর দ্বিতীয় কিস্তির ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। বাড়ি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর শেষ কিস্তির ১০ হাজার টাকা পাওয়া যায়। বাকি টাকা তিন দফায় ১০০ দিনের কাজের আওতায় মজুরি হিসাবে উপভোক্তাকে দেওয়া হয়। প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, ওই টাকায় উপভোক্তারা একটি শোওয়ার ঘর, শৌচালয় ও রান্নাঘর তৈরি করতে পারবেন। সরকার সমীক্ষা চালানোর পরেই টাকার অঙ্ক স্থির করেছে। তবে সরকারের অনুদানের অতিরিক্ত টাকা কেউ বাড়ি তৈরিতে লাগাতেই পারে। এক্ষেত্রে উপভোক্তাদের স্বাধীনতা রয়েছে। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই সরকারি টাকা খরচ না করে ফেলে রাখা যাবে না।
এদিকে, গৃহ নির্মাণ প্রকল্পেই কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ বেশি ওঠায় মালদহ জেলা প্রশাসন আগে থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করেছে। গরীব মানুষদের ভুল বুঝিয়ে বা ভয় দেখিয়ে যাতে তাঁদের থেকে কেউ কাটমানি আদায় করতে না পারে, সেজন্য সম্প্রতি প্রশাসন সচেষ্ট হয়। জেলার প্রতিটি ব্লকে শিবির করে এব্যাপারে উপভোক্তাদের সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এভাবে কাটমানি নিয়ে সরাসরি প্রশাসনের আধিকারিকদের ক্লাস নেওয়ার ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন বলেই ওয়াকিবহাল মহলের অভিমত। ঘটনায় কাটমানি খাওয়া রাজনৈতিক নেতা ও ঘুষখোর আধিকারিকদের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে। সাধারণ মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি তাঁদের বিরুদ্ধেও প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারে বলে জানা গিয়েছে। ফলে দুর্নীতিবাজ নেতা ও আধিকারিকরা কার্যত প্রমাদ গুনতে শুরু করেছেন।
এদিন ইংলিশবাজার, রতুয়া-২, হবিবপুর, চাঁচল-১ সহ বিভিন্ন ব্লকে গিয়ে আধিকারিকদের ক্লাস নিতে দেখা যায়। জেলাশাসকের পাশাপাশি অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমা শাসক, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও বিডিওরা পঞ্চায়েত ধরে ধরে উপভোক্তাদের কাছে কাটমানি না দেওয়ার ব্যাপারে আবেদন করেন।
ইংলিশবাজার ব্লকের শোভানগরের বাসিন্দা দুই মহিলা বলেন, এবার আমাদের নাম বাংলার আবাস যোজনা প্রকল্পের উপভোক্তা তালিকায় উঠেছে। আগে উপভোক্তাদের কাছ থেকে কাটমানি নেওয়া হয়েছিল বলে আমরা শুনেছি। এবার প্রশাসন আমাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে। ফলে এবার আর কাউকে কাটমানি দেওয়ার প্রশ্নই নেই। কেউ টাকা চাইলে সরাসরি বিডিওদের জানানোর জন্য বলা হয়েছে। এই শিবিরের পর আশা করি কেউ কাটমানি চাওয়ার সাহস পাবে না। প্রশাসনের এই উদ্যোগে আমাদের মতো গরীব মানুষ উপকৃত হবে।