নতুন কোনও কর্ম পরিকল্পনায় সাফল্যের ইঙ্গিত। লটারি বা ফাটকায় প্রাপ্তি যোগ। খেলাধূলায় কৃতিত্ব। বাক্যে ও ... বিশদ
সংশ্লিষ্ট বরোর চেয়ারম্যান তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলার নিখিল সাহানি বলেন, ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশার বংশ নিধন করতে পুর আইন অনুসারে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। পাশাপাশি নির্মীয়মাণ ওই বাড়ির জমা জল পরিষ্কার করা হয়েছে।
ডেঙ্গু রোধ করতে বাড়িতে ও আশপাশ এলাকায় জল জমিয়ে রাখা যাবে না বলে অনেকদিন ধরেই প্রচার করছে বামফ্রন্ট পরিচালিত শিলিগুড়ি পুরসভা। তা হলেও নাগরিকদের একাংশের মধ্যে হেলদোল নেই। দীর্ঘদিন ধরে নির্মীয়মাণ বাড়িতে জমিয়ে রাখা হচ্ছে জল। সেই বাড়িগুলি পরিণত হয়েছে মশার আঁতুরঘর। তাই ডেঙ্গু রোধে এবার নির্মীয়মাণ বাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধে পুরসভা ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে জল জমে থাকায় কয়েকদিন আগে ৩ নম্বর বরো কর্তৃপক্ষ নির্মীয়মাণ ৩০টি বাড়ির মালিকের কাছে নোটিস পাঠায়। ২৯টি নির্মীয়মাণ বাড়ির মালিক জমা জল পরিষ্কার করে পুরসভার কাছে রিপোর্ট পাঠায়। বরোর ইন্সপেক্টাররা বাড়িগুলি পরিদর্শন করে আসেন। কিন্তু ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষপল্লি এলাকার বাসিন্দ সুতীর্থবাবু নির্মীয়মাণ বাড়ি থেকে জমা জল পরিষ্কার করছিলেন না। এই ব্যাপারে তাঁকে কয়েকবার সতর্ক করা হয়। অবশেষে এদিন তাঁর কাছ থেকে ৫০০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। পুরকর্মীরা তাঁর নির্মীয়মাণ বাড়ির জমা জল বাইরে বের করেছেন।
সংশ্লিষ্ট বরো কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, নির্মীয়মাণ ওই বাড়ির লিফটের জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে জল জমে ছিল। সেই জমা জলে ডেঙ্গুর বাহক মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে। ওই বাড়ির আশপাশ এলাকার কয়েকজন ডেঙ্গুতে আক্রান্তও হয়েছেন। এরপরও হুঁশ না ফেরায় ওই ব্যক্তির কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। পুর আইনের ২৪৩’র ৯ নম্বর ধারা অনুসারে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
শুধু জরিমানা আদায় নয়, সংশ্লিষ্ট বরো কমিটি পরিত্যাক্ত ও জঙ্গলে ঘেরা জমির দখল নিয়ে সাফাই অভিযান চালাচ্ছে। কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বরো কমিটির অধীনে ১০টি ওয়ার্ড রয়েছে। সেগুলি হল ১৬-২৪ এবং ২৮ নম্বর ওয়ার্ড। এই এলাকায় প্রায় ১০০টি নির্মাণ কাজ চলছে। এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে পাঁচটি করে পরিত্যাক্ত জমি রয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জমিগুলি জঙ্গলে ঢেকে গিয়েছে। তাতে বাসা বেঁধেছে ডেঙ্গুর বাহক মশা। সংশ্লিষ্ট বরো কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পতিত জমি ও বাড়িতে পুরসভার নামে সাইনবোর্ড লাগানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৩০টি জমিতে সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। এরপর সংশ্লিষ্ট বাড়ি ও জমির মালিকরা পুরসভায় যোগাযোগ করে জমি ও বাড়ির জঙ্গল সাফাই করার লিখিত আশ্বাস দেন। সেজন্য অধিকাংশ জমি থেকে সাইনবোর্ড সরানো হয়েছে।
এই পদক্ষেপের সাফল্য নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বরো কমিটির চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের কাউন্সিলার বলেন, সিপিএম শাসিত পুরবোর্ড ডেঙ্গু দমনে উদ্যোগী নয়। তাই বিপদের দিনে নাগরিকদের পাশে না দাঁড়িয়ে মেয়র সহ কয়েকজন মেয়র পরিষদ সদস্য চীন ভ্রমণে গিয়েছিলেন। তাছাড়া ভোটব্যাঙ্কের কথা ভেঙে ডেঙ্গু দমনে ওরা কোনও কড়া পদক্ষেপ নিতে পারেনি। আমারই প্রথম জরিমানা আদায় ও সাইনবোর্ড ঝোলানোর উদ্যোগ নিয়েছি।
পুরসভার মেয়র সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, এটা বরো কমিটিরই কাজ। প্রতিটি বরো কমিটিকে অনেকদিন আগেই এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল। ওরা আরও আগেই এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নিলে ভালো হতো। কাজেই ওদের বক্তব্যের কোনও গুরুত্ব নেই।