অত্যধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। আধ্যাত্মিক ... বিশদ
চাঁদের মাটিতে প্রথম মানুষের পা পড়ে ১৯৬৯ সালের ২১ জুলাই। এরপর ১৯৭২ সাল পর্যন্ত তিন বছর বিভিন্ন সময় নাসার অ্যাপোলো প্রকল্পের অধীনে মোট ১০ জন মহাকাশচারী চাঁদে হেঁটে বেড়ানোর সুযোগ পেয়েছেন। শেষবার ১৯৭২ সালে অ্যাপোলো-১৭ মহাকাশযানে চেপে চাঁদে পৌঁছেছিলেন মহাকাশচারী ইউজিন কারনান। কিন্তু, এবার মহাকাশ বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে চাঁদে মহিলা মহাকাশচারী পাঠানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তাই তো গ্রিক পুরাণের সূর্যের দেবতা অ্যাপোলোর বদলে এবার তাঁরই যমজ বোন চাঁদের দেবী আর্টেমিস-এর নামানুসারে প্রকল্পের নাম রেখেছেন বিজ্ঞানীরা।
নাসার তরফে জানানো হয়েছে, চাঁদে পদার্পণের জন্য নাসার অত্যন্ত শক্তিশালী ‘স্পেস লঞ্চ সিস্টেম (এসএলএস)’ ও মহাকশযান ‘ওরিয়ন’কে গড়ে তোলার কাজ প্রায় শেষ। আগামী মাসেই ওই ইঞ্জিনগুলির ‘হট ফায়ার টেস্ট’ হবে। ‘আর্টেমিস-১’-কে চাঁদের কক্ষপথে পাঠানো হবে আগামী বছর। সেই অভিযানে কোনও মহাকাশচারী থাকবেন না। তার দু’বছর পর ২০২৩ সালে মিশন শুরু করবে ‘আর্টেমিস-২’। এরপর চূড়ান্তভাবে মানুষ নিয়ে ২০২৪ সালে চাঁদে পাড়ি দেবে ‘আর্টেমিস-৩’। আর আর্টেমিস-৪ অভিযানে চাঁদের কক্ষপথে একটা স্থায়ী আস্তানা গড়ে তুলবে নাসা। এবার একটানা সাতদিন চাঁদের মাটিতে থাকবেন মহাকাশচারীরা। পাশাপাশি, অতীতে যেখানে চাঁদে পৌঁছতে ৩ দিন সময় লেগেছিল, এবার সেখানে মাত্র আড়াই দিন লাগবে বলেই জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
কিন্তু, চাঁদে হঠাৎ মহিলাকে পাঠানোর প্রয়োজন কেন পড়ল নাসার? এটা কী নিছকই গিমিক? নাসার প্রাক্তন মহিলা মহাকাশচারী পেগি হুইটসনের কথায়, ‘না কোনও গিমিক নয়, এই অভিযান নিয়ে লিঙ্গসাম্যের বার্তা দিতে এবং সাধারণ মানুষের মনে আগ্রহ তৈরি করতেই এমন পরিকল্পনা নিয়েছে নাসা কর্তৃপক্ষ।’ তবে এনিয়ে এত হইচইয়ের প্রয়োজন নেই বলেই মত পেগির। তিনি বলেন, ‘ষাটের দশকে যখন আমরা শেষ চাঁদে গিয়েছিলাম, ওই অভিযানের সকল মহাকাশচারীই পুরুষ ছিলেন। সেদিক থেকে ২০২৪ সালের পরিকল্পনা সত্যি নজিরবিহীন। কিন্তু, আমি মনে করি, ভবিষ্যতের অভিযানগুলিতে মহাকাশচারীদের দলে এক বা একাধিক মহিলার অন্তর্ভূক্তিতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এটা একটা স্বাভাবিক ঘটনা। কারণ, ওই মহিলারা প্রত্যেকেই পুরুষদের মতোই সমান সক্ষম।’
একই মত পোষণ করেন ‘আর্টেমিস’ টিমের টেস্ট পাইলট নিকোল মান। তাঁর সাফ কথা, ‘নাসা তো বলেনি, এই অভিযানের লক্ষ্য হল চাঁদে মহিলা পাঠানো। আমরা দীর্ঘমেয়াদী পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য এই অভিযানে নেমেছি। আর এখানে মহিলা মহাকাশচারীর অন্তর্ভূক্তি নেহাত বৈচিত্রের খাতিরেই ঘটেছে। এটা খুবই সাধারণ একটা বিষয়।’