ফিরদৌস হাসান, শ্রীনগর: কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল গোটা বিশ্ব। বাদ যায়নি ভারতও। দেশে প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। অনেকেই পরিকল্পনা করেছিলেন পরিবার নিয়ে এবারের গ্রীষ্মে ভূস্বর্গে বেড়াতে যাবেন। কিন্তু তাঁদের সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে হঠাৎ করে সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত। তার জেরে প্রভাব পড়েছে কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পেও। বাতিল হয়ে যাচ্ছে বহু রিসর্ট, হোটেল এবং লজের বুকিং। এপ্রিলের প্রথম দু’সপ্তাহেই শ্রীনগর সহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রের ৯০ শতাংশ হোটেলের বুকিং বাতিল হয়েছে। কাশ্মীরের ট্রাভেল এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফারুক বলেন, অল্প কিছু বাদে প্রায় প্রত্যেকটি এজেন্টই তাঁদের বুকিং বাতিল করে দিয়েছেন। মহারাষ্ট্র, গুজরাত সহ অন্য রাজ্যে ফের লকডাউন জারি হওয়ায় পর্যটকরা আপাতত ভূস্বর্গে বেড়াতে আসার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। তাঁর কথায়, গত কয়েক মাস ধরে সংক্রমণের হার কম হওয়ায় গুজরাত, মহারাষ্ট্র এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রচুর পর্যটক কাশ্মীরে ঘুরতে এসেছিলেন। কিন্তু ফের এসব রাজ্যে সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত দেখা দেওয়ায় বুকিং বাতিল করে দিচ্ছেন পর্যটকরা। শুধু তাই নয়, বুকিং টাকাও ফেরত দিতে হচ্ছে বুকিং এজেন্টদের। একের পর এক বুকিং বাতিল হওয়ায় বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে হোটেল মালিক ও পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত কাশ্মীরের বাসিন্দাদের।
বছর দুইয়ের ভাটার পর গত বছরের ডিসেম্বর থেকে কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পে জোয়ার আসে। গত কয়েক মাস ধরে গুলমার্গ, পহেলগাঁও এবং শ্রীনগরের প্রায় সব হোটেল বুকিং হয়ে গিয়েছেল। কিন্তু সম্প্রতি কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় ফের করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। কাশ্মীরের হোটেল ও রেস্তরাঁ মালিক সংগঠনের সভাপতি আব্দুল ওয়াহিদ মালিক বলেন, গত দু’সপ্তাহ ধরে হোটেলের বুকিং ৭০ শতাংশের বেশি হ্রাস পেয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৯০ শতাংশ বুকিং বাতিল হয়েছে। তাঁর কথায়, করোনার জেরে কেউই ভয়ে এখন বেড়াতে আসতে চাইছেন না। বুকিংয়ের টাকাও ফেরত দিতে হচ্ছে। তবে আশার কথা এটাই যে, আগের মতোই ভূস্বর্গের পর্যটন নিয়ে প্রচার চালিয়ে যাবে জম্মু ও কাশ্মীরের পর্যটন দপ্তর। শ্রীনগর বিমানবন্দরে আগত পর্যটকদের স্ক্রিনিং করে তবেই ভূস্বর্গে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।