অত্যধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। আধ্যাত্মিক ... বিশদ
বারবার প্রস্তাব ছিল স্বয়ং পিনারাই বিজয়নের বিরুদ্ধে লড়ার। কিন্তু জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের মঞ্চে এক সঙ্গে কাঁধে কাঁধ দিয়ে চলার কারণে সেই প্রস্তাবে সাড়া দেননি। তবে গত ৬ তারিখ অনুষ্ঠিত কেরলের বিধানসভার ভোটে শাসক সিপিএমের বিরুদ্ধে প্রচারে যথারীতি গলা ফাটিয়েছেন নানা নির্বাচনী জনসভায়। সেই মালয়ালি ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা জি দেবরাজন এখন আবার কলকাতায় এসে সিপিএম সহ বাম ও কংগ্রেস প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে ঝড় তুলছেন। বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি—তিন ভাষাতেই ভাষণ দিতে পারদর্শী দেবরাজনকে অবশ্য বাম নেতৃত্ব এখানে কেরলের নেতা বলে পরিচয় দিচ্ছে না অস্বস্তি এড়াতেই। যদিও দেবরাজন নিজে বলছেন, রাজ্যভিত্তিক নির্বাচনী রণকৌশল ভিন্ন হওয়ার কারণেই তাঁর বা ফরওয়ার্ড ব্লকের এই দ্বিমাত্রিক অবস্থান। তবে দুই রাজ্যেই তিনি বিজেপিকে পয়লা নম্বর শত্রু হিসেবে টার্গেট করেই প্রচারে বক্তব্য রাখছেন।
কেরলে সিপিএম নেতৃত্বাধীন বাম জোটের সঙ্গে ফরওয়ার্ড ব্লক যাবতীয় সম্পর্ক ত্যাগ করেছে বেশ কয়েক বছর আগেই। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে একটি আসনও বরাদ্দ না করায় সিপিএমের উপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে তারা সেই সিদ্ধান্ত নেয়। মালয়ালি রাজ্যে বাম জোটের প্রধান প্রতিপক্ষ কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত গণতান্ত্রিক মোর্চা বা ইউডিএফ-এ শামিল হয় তারা। তারপর থেকে বিভিন্ন নির্বাচনে তারা কেরলে সিপিএমের বিরুদ্ধে কট্টর অবস্থান নিয়েই চলেছে। এবারের বিধানসভা ভোটেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। শুধু তাই নয়, রাহুল গান্ধীর অনুমোদনক্রমে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তথা বাম জোটের প্রধান মুখ বিজয়নের বিরুদ্ধে লড়তে সংশ্লিষ্ট আসনটি ফরওয়ার্ড ব্লকের জন্য বরাদ্দ করে কেরল প্রদেশ কংগ্রেস। কিন্তু দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পরামর্শে জাতীয় রাজনীতিতে বাম ঐক্যের কথা মাথায় রেখে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন দেবরাজন। এমনকী, শেষ পর্যন্ত ফরওয়ার্ড ব্লক এবার বিধানসভা ভোটে কোনও আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেনি। তবে তুখোড় বক্তা দলের জাতীয় সম্পাদক দেবরাজন কেরল সিপিএম এবং বিজয়ন সরকারের বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা রাজনৈতিক বক্তব্য রেখেছেন অন্তত দু’ডজন নির্বাচনী জনসভায়।
কেরলের ভোট শেষ হতেই এবার ‘বাংলার জামাই’ দেবরাজনের ডাক পড়েছে এরাজ্যের নির্বাচনী প্রচারে। টালিগঞ্জের অভিনেত্রী পাপিয়া দেবরাজনের স্বামী হওয়ার সুবাদে বহু বছর ধরে ফরওয়ার্ড ব্লকের বাংলা কমিটির কাছে তিনি ‘ঘরের লোক’ হিসেবেই পরিচিত। তাই ডাক পেয়ে গত ১০ তারিখ চলে এসেছেন কলকাতায়। ১১ তারিখ থেকে শুরু করেছেন প্রচার। ইতিমধ্যে বেলেঘাটা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী রাজীব বিশ্বাসের হয়ে সভা করেছেন। এছাড়া শ্যামপুকুর কেন্দ্রের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী জীবন সাহা এবং জোড়াসাঁকোর কংগ্রেস প্রত্যাশী আজমল খানের হয়েও গলা ফাটিয়েছেন মঞ্চে। এখানে অবশ্য তিনি তাঁর ভাষণে বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদির সরকারকেই বেশি আক্রমণ করছেন। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বা দলেরও সমালোচনা করছেন নির্দিষ্ট ইস্যুতে। তবে একই দল এবং নেতার এই দুই রূপ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।