অত্যধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। আধ্যাত্মিক ... বিশদ
ঘড়ির কাঁটা রাত ১০টা ছুঁইছুঁই। রেলের ট্রাফিক কলোনি দুর্গামন্দিরের মাঠে এলেন মলয়বাবু। কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থার বাসিন্দাদের মধ্যেও মলয়ের প্রতি দুর্বলতা ধরা পড়ে। এক কট্টর বিজেপি সমর্থক রেল কর্মী বলেন, আমি চাই বিজেপি ক্ষমতায় আসুক। কিন্তু এই মানুষটাকে পাওয়া যায়। কোনও কাজ বললে হয়ে যায়। রেলের এলাকায় এসে রেল বিক্রি, সিএলডব্লু বিক্রির প্রসঙ্গ খুঁচিয়ে গেলেন রাজনীতিতে চুল পাকানো মলয়। এদিনের কর্মসূচি এখানেই শেষ নয়। এখনও একাধিক ক্লাবে ভিজিট বাকি। সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত টানা কর্মসূচি চলছে তাঁর। কখনও হুডখোলা টোটোয় চড়ে রোড শো, কখনও আবার ক্লাবের ছেলেদের সঙ্গে সময় কাটানো। জিততে আত্মবিশ্বাসী মলয়বাবু এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ছেন না। তাঁর বিরুদ্ধে খেলা হয়েছে মেরুকরণের তাস। সিপিএম, কংগ্রেস নয়, এখানে প্রার্থী দিয়েছে আইএসএফ। এমনকী দলবদলু বিজেপি নেতার ‘ছায়াসঙ্গী’ এবার মিমের প্রার্থী।
আসানসোলে শেষ ১০বছরে হওয়া বড় উন্নয়নমূলক কাজের সিংহভাগ করানোর পিছনে মলয়বাবুর অবদান রয়েছে। তবু ভুলত্রুটি থেকেই গিয়েছিল। আসানসোলে ঘটক পরিবারের প্রতি আবেগ থাকলেও কিছু নেতার মৌরুসি পাট্টায় তৃণমূলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নেতাদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ, মন্ত্রীর কিছু ঘনিষ্ঠদের প্রতি ক্ষোভ জন্মায়। যদিও শেষ কয়েক মাসে নিবিড় জনসংযোগ করে তা প্রশমিত করেছেন মলয়বাবু।
২লক্ষ ৭১হাজার ভোটারের এই কেন্দ্রে অনেকেরই নজর ২৭শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটের দিকে। সংযুক্ত মোর্চার পক্ষ থেকে সিপিএম, কংগ্রেস লড়াই না করে আসনটি ছেড়েছে আইএসএফকে। আদতে ভিন রাজ্যের বাসিন্দা প্রার্থী মহম্মদ মুস্তাকিম একাধিক মামলায় জড়িত। তাঁকে প্রার্থী করে তৃণমূলের ‘রেজিমেন্টেড’ সংখ্যালঘু ভোটে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা হয়েছে। যদিও তাঁদের নেতা আবাস সিদ্দিকির আসানসোলের সভা ‘সুপার ফ্লপ’। মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাতেও কয়েকশো লোক নিয়ে সভা করেন আব্বাস। করোনা বিধি মানতেই আমরা জনসভার প্রচার করিনি বলে অজুহাত দিয়েছেন মুস্তাকিম।
এখানে মিমের প্রার্থী দলবদলু জিতেন্দ্র তেওয়ারির আস্থাভাজন দানিশ আজিজ। শুধু পাশে থাকা নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর রাজনৈতিক ‘গুরু’ জিতেন্দ্রর প্রতিটি পোস্ট শেয়ার করা, গুরুর হয়ে প্রচার, সবই করতেন তিনি। জিতেন্দ্র মেয়র থাকাকালীন পুরসভার অস্থায়ী কর্মী হয়ে যান তিনি। দলবদলুর মস্তিষ্কপ্রসূত পশ্চিম বর্ধমান স্টুডেন্ট লাইব্রেরি কো অর্ডিনেশন কমিটির জেলা সদস্যও ছিলেন। দাদা দল ছাড়ার কয়েকদিন পরে দল ছাড়েন দানিশও। যদিও গুরুর দলে যোগ না দিয়ে মিমের প্রার্থী হয়ে যান তিনি। তৃণমূল এনিয়ে সরব হয়েছে। তাদের দাবি, এই ঘটনায় জলের মতো পরিষ্কার করে দিয়েছে যে, মিম বিজেপির বি টিম। যদিও দানিশ বলেন, জিতন্দ্র এক সময় তাঁর গুরু ছিলেন। এখন আর নেই। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের প্রশ্নই ওঠে না। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি মেরুকরণের তাস খেলেছে। মানুষকে নানা জাতি ও নানা সম্প্রদায়ে ভাগ করে ভোটে ফায়দা লুটতে চায় তারা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি প্রার্থী কৃষেন্দু মুখোপাধ্যায়।
চন্দ্রচূড়ে গাজনের দিনে ব্যাপক ভিড় হয়েছিল। মন্দিরের অফিসে বসেই কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্য বলেন, মন্দিরে আমরা কোনও রাজনৈতিক চর্চা করি না। তবু এটুকু বলতে পারি মন্ত্রীকে বিপদে আপদে পাই। ধর্মের তাস এখানে কাজ করবে না।