কর্মে অগ্রগতি হবে। চাকরিজীবীদের পদোন্নতি ও বদলির যোগ আছে। সৎজন সান্নিধ্যে মানসিক আনন্দ। ... বিশদ
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, চাঁদনি চক এলাকায় কর্মরত পেশায় টিভি মেকানিক বছর সাতচল্লিশের ইরশাদ শুক্রবার সকালে ইতস্তত ঘোরাঘুরি করছিলেন নির্মলচন্দ্র স্ট্রিটে। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী হস্টেলের আবাসিকদের বিষয়টি জানান। কারণ, বৃহস্পতিবার এই উদয়ন হস্টেল থেকে এক আবাসিকের মোবাইল ফোন চুরি গিয়েছে। এই হস্টেলে থাকে মূলত রাজ্য সরকারের অধীনস্থ তফসিলি জাতি ও উপজাতির স্নাতকোত্তর পাঠক্রমের পড়ুয়ারা। ইরশাদের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় তারা মোবাইল চোর সন্দেহে তাঁকে কার্যত টেনে-হিঁচড়ে হস্টেলের ভিতরে নিয়ে যায়। অভিযোগ, সেখানে হাত-পা বেঁধে আবাসিকরা বেধড়ক মারধর করে ইরশাদকে। প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় ধরে তাঁকে মারধর করা হয়। সেই সময় ইরশাদের মালিককে ফোন করে বৃহস্পতিবার চুরি যাওয়া মোবাইলের দাম বাবদ আবাসিকরা দশ হাজার টাকা দাবি করে। এই কথপোকথন চলাকালীন ধীরে ধীরে নেতিয়ে পড়েন ইরশাদ। খবর পেয়ে মুচিপাড়া থানার পুলিস হস্টেলে এসে ইরশাদকে উদ্ধার করে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে বেলা আড়াইটে নাগাদ চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মুচিপাড়া থানার পুলিস গণপিটুনিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৪ জন আবাসিককে আটক করেছে।
২০১৪ সালের ১৬ নভেম্বর কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হস্টেলে গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছিল। অভিযোগ, সেখানে মোবাইল চোর সন্দেহে একই কায়দায় হাওড়ার বাসিন্দা কোরপান শাহকে পিটিয়ে খুন করেন কয়েকজন হবু ডাক্তার ও ক্যান্টিনের দুই কর্মী। তদন্ত শেষে ডাক্তার ও ক্যান্টিনের কর্মী মিলিয়ে ১২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছিল হোমিসাইড শাখা। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ইরশাদকে লাঠি, ব্যাট, বাটামের পাশাপাশি ভারী ও ভোঁতা কিছু দিয়ে ক্রমাগত মারধর করা হয়েছে। খুব সম্ভবত অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের কারণেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। মৃতদেহে একাধিক কালশিটের দাগ রয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা ওই তল্লাটে সিসি ক্যামেরার ফুটেজের খোঁজ করছেন। এই গণপ্রহারের তদন্তে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারা। বেলগাছিয়ার বাসিন্দা ইরশাদ কর্মস্থল চাঁদনি চকের বদলে নির্মলচন্দ্র স্ট্রিটে কেন গিয়েছিলেন? পুলিসের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে এপিডিআর।