নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বছরভর এলাকায় প্রচার, অহরহ এফএম রেডিও, টিভিতে বিজ্ঞাপন সহ নানা উদ্যোগের পরও কলকাতার সাধারণ নাগরিকদের একাংশের মধ্যে ডেঙ্গুবাহক মশার সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে ওঠেনি। রীতিমতো ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করে এবার এই শীতের শেষ থেকেই শহরের বিভিন্ন অংশে অভিযান শুরু করেছে পুর-স্বাস্থ্য বিভাগ। তারই সূচনাতে বৃহস্পতিবার পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে মুরারিপুকুর রোডে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতনতা প্রচার এবং সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন ডেপুটি মেয়র তথা স্বাস্থ্য বিভাগের ভারপ্রাপ্ত অতীন ঘোষ। সেই অভিযানের শেষে তিনি জানান, এখনও বহু মানুষ এটা জানেন না যে কত ছোট ছোট এবং চোখে না পড়ার মতো জায়গাতে সামান্য জলেও ডেঙ্গুবাহক মশা এডিস ইজিপ্টাই বংশবিস্তার করতে পারে। কোথাও ডাবের খোলে জমে থাকা জলে, কোথায় প্লাস্টিকের কাপে আবার কোথাও দু’টো ইটের মাঝখানে সামান্য পরিমাণ জমা জলে বাড়তে পারে বিপদ। এদিন ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে গতবছর ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর নেন অতীনবাবু। গতবারের আক্রান্তদের বাড়ি ও সংলগ্ন এলাকার কোথায় কোথায় মশার আঁতুরঘর থাকতে পারে, তা খতিয়ে দেখা হয়। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলার সহ পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ, নিকাশি ইত্যাদি বিভাগের বরো স্তরের আধিকারিকরা। এলাকা সাফসুতরো না রাখার জন্য একটি বাড়িকে নোটিসও ধরানো হয়েছে এদিন।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সারা শহরকে ৪২টি ভাগে ভাগ করে গত বছরের আক্রান্তদের তালিকা তৈরি করে বাড়ি বাড়ি অভিযান চালানো হবে। বর্ষা নামার আগে পর্যন্ত মোট ৫২দিন শহরের বিভিন্ন অংশে চলবে এই অভিযান। তার মধ্যে ২৬দিন অতীনবাবু নিজে উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন। পুরসভা সূত্রে খবর, গত বছর শহরে চার হাজারেরও বেশি মানুষ সরকারি হিসেবেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আশপাশের বিধাননগর, দমদম, বরানগর ইত্যাদি পুরসভার চেয়ে সংখ্যায় কম হলেও কলকাতায় এই সংখ্যা মোটেও স্বস্তিদায়ক নয় পুরবোর্ডের কাছে। তাই এবার শীতের শেষ থেকেই কোমর বেঁধে নেমেছে পুরসভা।