বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
মালদহের মালতীপুরের ওই প্রাক্তন আরএসপি বিধায়কের তৃণমূলে যোগদান নিয়ে সম্প্রতি জল্পনা তুঙ্গে উঠেছিল। শেষ পর্যন্ত ওই প্রাক্তন বাম বিধায়কের শুভেন্দুবাবুর হাত ধরে তৃণমূলে আসা নিশ্চিত হয়েছে। তৃণমূলের অন্দরমহলের খবর, লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তর মালদহের রাজনীতিতে দলীয় অবস্থান আরও মজবুত করতেই সাংগঠনিকভাবে দক্ষ ওই নেতাকে দলে যোগদান করানো হচ্ছে।
দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি দুলাল সরকার (বাবলা) বলেন, রহিম বক্সি’র মতো নেতা যে কোনও দলের সম্পদ। তাঁকে অবশ্য স্বাগত জানাব। এনিয়ে শেষ কথা বলবেন শুভেন্দুবাবু। ১০ জানুয়ারি তাঁর পুরাতন মালদহে দলীয় বৈঠক রয়েছে। পরের দিন পাকুয়ায় সভা আছে। মালতীপুরের সদ্যপ্রাক্তন বিধায়ক রহিম বক্সি বলেন, আমরা তৃণমূল কংগ্রেসে যাওয়া নিয়ে গুঞ্জন আমিও শুনেছি। তবে মানুষকে নিয়ে মানুষের কাজ করি। ফলে লুকিয়ে চুরিয়ে তো কিছু করতে পারব না। তাই অন্য কোনও দলে গেলে মানুষ দেখতেই পাবেন। এর বাইরে আর কী বলব! তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানিয়েছেন, শাসকদলে গেলেই মানুষের জন্য কাজ করা সম্ভব। এনিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
নতুন বছরের শুরুতেই মালদহে মালতীপুরের সদ্য প্রাক্তন বিধায়ক রহিম বক্সির তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জল্পনা প্রবল হয়ে উঠেছিল। জানুয়ারির প্রথমেই রহিম বক্সি’র কিছু ছবি স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে তাঁকে শীতের পোশাকে শাসকদলের দাপুটে নেতা তথা মালদহের দলীয় পর্যবেক্ষকের সঙ্গে সপার্ষদ হাসিমুখে দেখা যায়। সেই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই তিনি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্যে বৈঠক করেছেন বলে চর্চা শুরু হয়। তৃণমূলের অন্দরমহল সূত্রে জানা যায়, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহেই প্রাক্তন ওই বিধায়ক তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে তৃণমূলে যাওয়া নিয়ে চর্চাও হয়েছে। তবে উত্তর মালদহের একটি রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে তিনি কিছুদিন পরে দলে আসবেন বলে ঠিক হয়েছিল। ফলে তাঁর তৃণমূলে আসার নিশ্চয়তা থাকলেও নির্ঘণ্ট নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। কিন্তু তৃণমূলের অন্দরমহল সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী শুভেন্দুবাবুর এবারের সফরেই ১১ জানুয়ারি তিনি পাকুয়ার সভায় তৃণমূল দলে যোগ দিচ্ছেন। উত্তর মালদহের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিন্যাসের প্রেক্ষিতে সেখানকারই একটি বিধানসভা এলাকার সভায় রহিম বক্সিকে যোগদান করানোও একটি রাজনৈতিক কৌশল বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে।
এদিকে, ১১ তারিখে পাকুয়ার সভায় বিরোধী শিবিরে ভেঙে দলে যোগদান পর্ব সেরে ফেলার আগে ১০ জানুয়ারি পুরাতন মালদহের একটি রিসর্টে দলের পূর্বঘোষিত পঞ্চায়েত বৈঠক করবেন শুভেন্দুবাবু। উন্নয়নের অস্ত্র প্রয়োগ করে বিরোধীদের লোকসভা নির্বাচনে পর্যুদস্ত করতে পঞ্চায়েতের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে ওই বৈঠক তিনি ডেকেছিলেন। সম্প্রতি দলের জেলা সম্মেলনে এসে শুভেন্দুবাবু ইঙ্গিত দিয়ে গিয়েছিলেন যে, পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের এবারের নির্বাচনে বিশেষ দায়িত্ব নিতে হবে। সেই পরিকল্পনার একটি চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করতে শুভেন্দুবাবু ওই বিশেষ বৈঠক ডেকেছেন বলেই দলের অন্দরমহল জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার জেলায় ঢুকেই সন্ধ্যেয় ওই সভাতে শুভেন্দুবাবু যোগ দেবেন। তার আগে বা পরে দু’টি পুরসভার কাউন্সিলারদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন। ১১ জানুয়ারি পাকুয়ায় রহিম বক্সির যোগদান পর্ব সেরে তিনি দু’দিনের সফর শেষ করবেন।
রহিম সাহেবের তৃণমূলে যোগদান নিয়ে জেলা রাজনীতিতে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে পোড়খাওয়া দীর্ঘদিনের ভালো সংগঠক রহিম বক্সির তৃণমূলে যোগদানের খবরে বাম শিবিরে আলোড়ন পড়েছে। এর পরে কে সেনিয়েই চর্চা শুরু হয়েছে লাল শিবিরে। এনিয়ে আরএসপি’র জেলা সম্পাদক সর্বানন্দ পাণ্ডে বলেন, আমি এখনও বিশ্বাস করি না রহিম বক্সির মতো সংগঠক ডানপন্থী দলে যাবেন। আর এরকম কোনও কথা আমি শুনিনি। তবে রাজনীতিতে অসম্ভবও কিছু নেই।