নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিবিআই-কে রাজ্যে ঢুকে তদন্ত করার ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম এনেছেন। এখন থেকে তা করতে গেলে রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হবে। রবিবার দিল্লিতে বিজেপির জাতীয় পরিষদের বৈঠকে এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ঘোষণা করলেন, এখন থেকে সমস্ত ক্ষেত্রে বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা পুলিসের সঙ্গে সর্বাত্মক অসহযোগিতার রাস্তায় হাঁটবেন। দিলীপবাবুর অভিযোগ, সংবিধানকে লঙ্ঘন করা, রাজ্যে নৈরাজ্য সষ্টি করা- সবটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেখাচ্ছেন। উনি বাধ্য করছেন আইন না মানতে। সেই মতো এখন থেকে আমাদের কাছে পুলিসের চিঠি এলে কিংবা থানা থেকে ডাকলে কেউ যাব না। তাঁকে থানায় ডাকলেও তিনি নিজে যাবেন না বলেও উল্লেখ করেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, থানায় যাব না। পারলে আমায় তুলে নিয়ে গিয়ে গ্রেপ্তার করুক। কারণ, মমতার পুলিসের অধিকার নেই আমাদের ডাকার। রাজ্যটাকে স্বেচ্ছাচারিতা-স্বৈরতান্ত্রিকতার ক্ষেত্রে পরিণত করছেন তিনি। বিজেপির রাজ্য সভাপতির দাবি, পুলিস বর্তমানে তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে। আমরা জেলায় জেলায় আইন অমান্যের কর্মসূচি নিয়েছি। পাশাপাশি প্রত্যেক জেলা সভাপতিকে জানিয়ে দেওয়া হবে, পুলিসের সঙ্গে কোনওরকম সহযোগিতা না করতে।
সূত্রের দাবি, তৃণমূল-বিজেপি সংঘাত যে কায়দায় কেন্দ্র-রাজ্য দ্বৈরথে পরিণত হয়েছে, তার ফলাফল ভয়ঙ্কর হতে পারে। চন্দ্রবাবু নাইডু প্রথমে সিবিআই তদন্ত নিয়ে আপত্তির কথা তুলেছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ায় পর থেকে দেশের যে কোনও প্রান্তে তদন্ত করতে পারত সিবিআই। যদিও আইনে বলা ছিল, এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ‘নো-অবজেকশন’ লাগবে। এই জায়গাকেই হাতিয়ার করে চন্দ্রবাবু ঘোষণা করেছিলেন, এবার থেকে প্রতিটি মামলার ভিত্তিতে (‘কেস টু কেস’) অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার সিবিআই তদন্তের অনুমতি দেবে। সেই মতো পশ্চিমবঙ্গ এবং কয়েকদিন আগে ছত্রিশগড় সরকারও একইভাবে সিবিআই তদন্তের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে দিলীপ ঘোষের তরফে রাজ্য পুলিসের সঙ্গে অসহযোগিতার বার্তা আগামী দিনে জোড়াফুল এবং পদ্মফুল শিবিরের সংঘাতকে আরও প্রকট করে তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে।