রথের মেলার সঙ্গে জড়িয়ে জিলিপি, পাঁপড়, জিভেগজা
পলাশ পাত্র, কৃষ্ণনগর

চৈতন্যদেবের ভাবধারার লোকজনই নদীয়া জেলায় রথ শুরু করেন। আঠারো শতকে জেলায় রথের ব্যাপক সমৃদ্ধি ঘটে। একইসঙ্গে রথকে কেন্দ্র করে বাঙালির খাদ্য তালিকায় থাকা জিলিপি, পাঁপড় ও জিভেগজা প্রিয় হয়ে ওঠে। তাই রথের দিন নদীয়া বা রাজ্যের যে কোনও প্রান্তে আমবাঙালি জিলিপি, পাঁপড়ে কামড় বসান। জিলিপি, পাঁপড়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পারলেও রথে জিভেগজার চাহিদাও ব্যাপকভাবে রয়েছে। 
হিন্দুধর্মে রথযাত্রা অতি পবিত্র উৎসব। আজ রথযাত্রার উৎসবে মেতে উঠেছে বাংলা। রথ ও উল্টোরথ সাড়ম্বরে পালন হয়। রথে জগন্নাথদেব, ভ্রাতা বলরাম ও ভগিনী সুভদ্রাকে নিয়ে সাতদিনের জন্য মাসির বাড়ি যান। আবার সাতদিন পর ফিরে আসেন। ফেরার দিন উল্টোরথ পালন করা হয়। বঙ্গে রথযাত্রার ইতিহাস প্রাচীন হলেও নদীয়ায় রথের ব্যাপ্তি আঠারো শতক থেকেই হয়। 
জানা যায়, চৈতন্যদেব পুরীতে তাঁর পর্ষদ সদস্যদের নিয়ে রথের রশিতে টান দিতে যেতেন। ১৫৩৩ সালে তাঁর তিরোধনের পর চৈতন্যদেবের পর্ষদ কর্তা জগদীশ পণ্ডিতের হাত ধরে নদীয়ার চাকদহের যশড়াতে জগন্নাথদেব প্রতিষ্ঠা হয়ে যায়। জগদীশ পণ্ডিতের শ্রীপাঠ বাড়িতে ১৫০০সালের মাঝামাঝি সময়ে প্রথম জগন্নাথদেব প্রতিষ্ঠা হয়। চৈতন্যর পর জেলায় প্রাচীনতম বৈষ্ণব শ্রীপাঠ এটিই। এখানকার জগনাথদেবের স্নানযাত্রা বিখ্যাত। ষোড়শ শতকের শেষ দিকে তোতারাম বাবাজির হাত ধরে নবদ্বীপে শুরু হয় বৈষ্ণব ধর্মের কাজকর্ম। তবে আঠারো শতকে এর গতি বেড়ে যায়। মঠ-মন্দিরে জগন্নাথদেবের আরাধনা ব্যাপকভাবে হয়। জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা থেকে রথকে কেন্দ্র করে উৎসব হয়। নদীয়ার বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয় রথ উৎসব। 
১০৮ ঘড়া জলে স্নান করে জগন্নাথদেব জ্বর এসেছিল। সেইসময়ই নাকি মুখের স্বাদ বদলাতে তিনি নানারকম খাবার খেয়েছিলেন। সেখানেই তাঁকে জিলাপি  দেওয়া হয়েছিল। প্যাঁচে-প্যাঁচে রস আর হাল্কা মুচমুচে স্বাদের জন্য খুব জনপ্রিয় জিলিপি। মুঘল সম্রাটরাও জিলাপির রসে মজেছিলেন। সংস্কৃত পুঁথিতেও জিলিপির উল্লেখ পাওয়া যায়। সেই জিলিপি রথে আমবাঙালির প্রিয় খাবার হয়ে ওঠে। জিলিপির সঙ্গে পাঁপড়ও রথে বাঙালির আরেকটি প্রিয় খাবার। রথের মেলায় জিলিপি, পাঁপড়ের সঙ্গে গজাও আরেকটি সুস্বাদু খাবার। পাঁপড় উত্তর ভারতের একটি বিখ্যাত খাবার বলা চলে। পাঁপড়ের উল্লেখ রামায়ণে রয়েছে। বিশিষ্ট নাট্যকার বিজনবিহারী ভট্টাচার্য লিখেছেন, ফারসি গজক থেকে গজা শব্দটি এসেছে। তিল ও চিনি দিয়ে তৈরি একরকম কাঠির মতো আকৃতি বিশিষ্ট মিষ্টি খাবারের নামই গজক। কাঠি গজা, চ্যাপটা গজা, জিভে গজা এসব তার রূপভেদ।
রথের মেলাগুলি গ্রামীণ এলাকায় হওয়ায় সহজে এই তিন খাবার পাওয়া যায়। রসে টইটম্বুর জিলিপি, নোনতা কচমচ শব্দের পাঁপড়, ভাঁজের পরতে পরতে স্বাদ নেওয়া গজা আজও ছেলেবেলার স্মৃতির সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে অনেকের। এখনও এই তিন খাবার স্বল্পমূল্যে পাওয়া যায়। একইসঙ্গে গ্রামীণ এলাকা থেকে পরবর্তী সময়ে শহর এলাকাতে দারুণ জনপ্রিয় খাবার হয়ে উঠেছে।
5Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পড়ে গিয়ে বা পথ দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্তির যোগ থাকায় সতর্ক হন। কর্মে  উন্নতি ও সাফল্যের যোগ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৪.২৮ টাকা৮৬.০২ টাকা
পাউন্ড১০৪.৮৬ টাকা১০৮.৫৭ টাকা
ইউরো৮৬.৮৬ টাকা৯০.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
25th     December,   2024
দিন পঞ্জিকা