কাঠঠোকরার বর্ম
খেলার সময় একে অপরের মাথা ঠুকে গেলে কেমন ঝনঝন করে ওঠে। অথচ কাঠঠোকরা সারাদিন কাঠ ঠুকরে যায়! তাও আবার আস্তে নয়। সর্বশক্তি দিয়ে। কীভাবে তারা রক্ষা পায় জানালেন স্বরূপ কুলভী।

বর্তমান ওয়েবডেস্ক
মে ১৮, ২০২৫
খেলার সময় একে অপরের মাথা ঠুকে গেলে কেমন ঝনঝন করে ওঠে। অথচ কাঠঠোকরা সারাদিন কাঠ ঠুকরে যায়! তাও আবার আস্তে নয়। সর্বশক্তি দিয়ে। কীভাবে তারা রক্ষা পায় জানালেন স্বরূপ কুলভী।
বিচিত্র এক পাখি কাঠঠোকরা। গ্রামেগঞ্জে অনেক সময়ই ঠোকর ঠোকর শব্দ ভেসে আসে। এই পাখি গাছের কাণ্ডে তার লম্বা ঠোঁট দিয়ে অবিরাম আঘাত করে চলে। আর তাতেই ভেসে আসে কুড়ুল দিয়ে কাঠ কাটার মতো শব্দ। এই পাখির মাথায় থাকে রঙিন পালক। সারাদিন এক গাছ থেকে অন্য গাছে উড়ে বেড়ায়। কিন্তু কাঠঠোকরা পাখিরা কেন কাঠ ঠোকরায়? আসলে কাঠ ঠোকরানো এদের জীবনচক্রের সঙ্গে জড়িয়ে। গাছে ঠোকর মেরে এরা খাবার খোঁজে। কাঠের মধ্যে পিঁপড়ে বা অন্য কোনও পোকামাকড়ের লার্ভা দেখতে পেলেই হল। এবার সেগুলো খাওয়ার জন্য তারা কাঠ ঠোকরানো শুরু করে। আর কাঠের গায়ে গর্ত তৈরি করে লম্বা ঠোঁট আর জিভ ব্যবহার করে পোকামাকড় টেনে আনে তারা। এছাড়াও নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখা, বাসা তৈরির জন্যও এরা কাঠ ঠোকরায়। এজন্য তাদের সারা দিনই কাঠ ঠুকরে যেতে হয়। ছোট্ট বন্ধুরা, কখনও কখনও নিজেদের মধ্যে গল্প করার সময় বা খেলার সময় একে অপরের সঙ্গে মাথা ঠুকে গেলে কেমন লাগে বল তো? ঝনঝন করে ওঠে না? কিন্তু কাঠঠোকরা সারাদিন কাঠ ঠুকরে যায়। তাও আবার আস্তে নয়। সর্বশক্তি দিয়ে। জীববিজ্ঞানীরা বলেন, প্রজাতি ভেদে কাঠঠোকরা সারাদিনে ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার বার ঠোকর মারতে পারে। কিন্তু এতে তো কাঠঠোকরার মাথায় বা মস্তিষ্কে আঘাত লাগতে পারে। কিন্তু সেই আঘাত ওরা কীভাবে এড়িয়ে বেঁচে থাকে? সেটাই চমক!
এই প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে কাঠঠোকরার জিভ, মাথার খুলি, ঘাড় ও ঠোঁটের গঠনে। বিশেষ করে এই পাখিদের জিভের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। কাঠঠোকরার জিভ খুবই লম্বা। আর তা ওদের লম্বা ঠোঁটের চেয়ে অনেক বড়। এখন জেনে নেওয়া যাক এদের জিভের গঠন সম্পর্কে। মানুষ সহ অন্যান্য মেরুদণ্ডী প্রাণীর গলার কাছে ‘ইউ’ আকৃতির একটি হাড়ের সঙ্গে যুক্ত থাকে জিভ। চোয়ালের নীচের এই হাড়ের কাঠামোকে বলা হয় হাইওয়েড। এই কাঠামো শ্বাস-প্রশ্বাস, কোনও কিছু গেলা বা মানুষের ক্ষেত্রে কথা বলার ক্ষেত্রে সহায়ক। কিন্তু কাঠঠোকরার এই হাড়টি সম্পূর্ণ আলাদা। কাঠঠোকরার পেশি দিয়ে মোড়া হাইওয়েড থাকে ঠোঁটের উপরে নাসারন্ধ্রের মধ্যে। তারপর তা চোখের অংশে দু’টি ভাগে ভাগ হয়ে ‘ভি’ আকৃতি নেয়। এই দু’টি বাহু মাথার খুলির চারপাশ দিয়ে ঘিরে নীচের ঠোঁটে এসে ফের একসঙ্গে মেলে। হাইওয়েড ঘিরে থাকা পেশি সঙ্কুচিত হলে কাঠঠোকরার ঠোঁট বরাবর জিভ সামনে বেরিয়ে আসে। আর পেশি শিথিল হলে জিভ পিছনে সরে আসে। হ্যাঁ, কাঠঠোকরার জিভ এতটাই লম্বা যে স্বাভাবিক অবস্থায় তা তাদের খুলির পিছনে গুটিয়ে থাকে। কাঠঠোকরার জিভের দৈর্ঘ্য তাদের শরীরের মাপের এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত হতে পারে। তবে সব কাঠঠোকরার জিভ এতটা লম্বা হয় না। প্রজাতি ভেদে জিভের দৈর্ঘ্য কমবেশি হয়। এই সুদীর্ঘ জিভ কাঠের গর্তের অনেক গভীর থেকে খাবার সংগ্রহে তাদের সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, তা কাঠঠোকরার বর্মও বটে। এই জিভ তাদের মস্তিষ্ককেও সুরক্ষিত রাখে। মাথার খুলি ঘিরে থাকা জিভ হেলমেটের মতো কাজ করে। তাই গাছে ঠোকর দেওয়ার সময় যে ধাক্কা আসে, তা সামলে নেয় এই জিভ। রক্ষা করে আঘাত থেকে। তবে শুধু জিভই নয়, খুলির হাড় ও ঘাড়ের গঠনও গুরুত্বপূর্ণ। ঘাড়ের ঘন মাংসপেশি ও খুলির নমনীয় হাড়ও কাঠঠোকরাকে সারাদিন কাঠ ঠোকরানোর শক্তি জোগায়।
tags
রাশিফল
-
আজকের রাশিফল
- post_by Admin
- জুন 19, 2025
অমৃত কথা
-
জগৎ
- post_by বর্তমান
- জুন 19, 2025
আজকের দিনে
-
ইতিহাসে আজকের দিন
- post_by Admin
- জুন 19, 2025
এখনকার দর
-
রুপোর দাম
- post_by Admin
- জুন 19, 2025
-
সোনার দাম
- post_by Admin
- জুন 19, 2025
-
ইউরো
- post_by Admin
- জুন 19, 2025
-
ডলার
- post_by Admin
- জুন 19, 2025
-
পাউন্ড
- post_by Admin
- জুন 19, 2025
-
নিফটি ব্যাঙ্ক
- post_by Admin
- জুন 19, 2025
-
নিফটি ৫০
- post_by Admin
- জুন 19, 2025