কোন বয়সে কী ধরনের রক্ত পরীক্ষা?
পরামর্শে বিশিষ্ট হেমাটোপ্যাথোলজিস্ট ডাঃ প্রদীপ মিত্র ও মাইক্রোবায়োলজিস্ট ডাঃ ইন্দ্রনীল আইচ।

বর্তমান ওয়েবডেস্ক
জুন ১৩, ২০২৫
শান্তনু দত্ত: স্বাস্থ্যই সম্পদ— আশৈশব এই কথাটি কানে বাজছে। তবে স্বাস্থ্যকে রক্ষা করতে হলে কেবল ভালো খাওয়া-দাওয়া বা শরীরচর্চা করলেই চলবে না, প্রয়োজন সময়মতো সঠিক স্বাস্থ্য ও রক্ত পরীক্ষাও। শরীরে রোগের কোনও উপসর্গ না থাকলেও রুটিন মাফিক পরীক্ষাগুলি করানো উচিত। নইলে পরে অনুতপ্ত হতে হয়।
কেন করবেন পরীক্ষা?
দেহে এমন অনেক রোগ বাসা বাঁধে, যেগুলির লক্ষণ প্রাথমিকভাবে বোঝা যায় না। পরে ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে। ধরা যাক, আচমকা কোনও ব্যক্তি হৃদরোগে আক্রান্ত হলেন। সেই সময় পরীক্ষা করে জানা গেল, তাঁর কোলেস্টেরল লেভেল প্রচণ্ড বেশি। তিনি যদি আগেই কোলেস্টেরল মেপে রাখতেন, তাহলে বিপদ এড়ানো সম্ভব হতো। তাই বয়স অনুযায়ী কিছু নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য ও রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে আগেভাগেই অনেক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
২০ থেকে ৩০
এই বয়সকাল এমন একটা সময় শুরু হয়, যখন সদ্য ১৮ বছর (গ্রোয়িং এজ, সাধারণত এই বয়সের পর আর শারীরিক বৃদ্ধি হয় না)। এই সময়কালে একবার কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (সিবিসি) পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারেন। রক্তে কোনওরকম সংক্রমণ থাকলে বা রক্তের গাঢ়ত্ব জানতে এই পরীক্ষা করা হয়। উল্লেখিত বয়সের মহিলারাও এই পরীক্ষা করাতে পারেন। কারণ এখন মেয়েদের মেনস্ট্রুয়েশনের সময় অনেক এগিয়ে এসেছে। প্রতিমাসে রক্তক্ষরণ হয়। সেই কারণে রক্তের উপাদানগুলি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়ার জন্য এই পরীক্ষা করানো হয়ে থাকে।
দ্বিতীয়ত, রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কেমন আছে, তা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত। পরিবারে কারও ডায়াবেটিস থাকলে তো অবশ্যই এই পরীক্ষা করতে হবে। কারণ রক্তের মধ্যে গ্লুকোজ চুপিসারে বাড়ে। তা সহজে বোঝা যায় না। ফলে বছরে নির্দিষ্ট সময়ে গ্লুকোজ ফাস্টিং ও এইচবিএ১সি পরীক্ষা করে নিলে, তা নিয়ন্ত্রণে আনতে সুবিধা হয়।
তৃতীয়ত, থাইরয়েড ফাংশন টেস্ট করিয়ে নিতে পারেন। কারণ শারীরবৃত্তীয় নানা কাজে এই হরমোন ভীষণ উপকারী। তবে এই হরমোন অতিরিক্ত বেশি বা কম থাকলে নানা সমস্যা হয়। তাই নিয়মমাফিক এই পরীক্ষাও করিয়ে নেওয়া শ্রেয়। পাশাপাশি লিপিড প্রোফাইল দেখে নেওয়াও উচিত। খারাপ কোলেস্টেরল হার্টের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই প্রতি বছর লিপিড প্রোফাইল দেখে রাখা জরুরি।
৪০ পেরলে
উপরে উল্লিখিত পরীক্ষাগুলি করতে হবেই। এর সঙ্গে ভিটামিনের ভারসাম্য দেখে নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি শরীরে খনিজ মৌলের উপস্থিতি কেমন, সেই পরীক্ষাও করিয়ে নিতে পারেন। ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সি মহিলাদের ক্রনিক অ্যানিমিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফলে অ্যানিমিয়ার পরীক্ষা করিয়ে রাখতে পারেন। বর্তমানে মহিলাদের মধ্যে সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের সমস্যা বাড়ছে। ৪০ পেরিয়ে গেলে সেই পরীক্ষা একবার করিয়ে নেওয়া ভালো। পাশাপাশি ফ্যামিলি হিস্ট্রি থাকলে, ডায়াবেটিসের সঙ্গে কিছু ইউরিনারি টেস্ট করতে পারেন। যেমন ইউরিয়া, ক্রিয়েটিনিন, ইউরিক অ্যাসিড দেখে নিতে পারেন। তবে এটা রুটিনমাফিক না করলেও চলে। আজকাল অনেকের ওজন বাড়ার সমস্যা দেখা যায়। সে কারণে লিপিড প্রোফাইল ও লিভার ফাংশন টেস্ট করিয়ে নিতে পারেন।
ষাটোর্ধ্বদের ক্ষেত্রে
উপরের টেস্টগুলি নিয়ম মেনে করুন। এর সঙ্গে প্রস্টেট স্পেসিফিক অ্যান্টিজেন দেখে রাখা ভালো। পাশাপাশি সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন লেভেল পরীক্ষা করিয়ে নিন।
কোন কোন পরীক্ষা মাস্ট?
মূলত ফাস্টিং ব্লাড সুগার, লিপিড প্রোফাইল, লিভার ফাংশন, হিমোগ্লোবিন, ইসিজি— এগুলি করিয়ে নেবেন। এর সঙ্গে নিয়মিত প্রেশার, ওজন মেপে নেওয়া জরুরি। সাধারণ হেলথ ক্যাম্পগুলিতেও এই পরীক্ষাগুলি করানো হয়ে থাকে।
কত ঘন ঘন পরীক্ষা?
বছরে দু’বার করানো উচিত। চাইলে একবারও করতে পারেন। এক্ষেত্রে অবহেলা করবেন না।
মনে রাখবেন, প্রতি বছর অন্তত একবার রুটিন চেকআপ করানো উচিত। পরিবারে যদি ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা ক্যান্সারের ইতিহাস থাকে, তাহলে আগাম কিছু পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। সব পরীক্ষা চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে করা উচিত।
related_post
অমৃত কথা
-
‘বিবেকচূড়ামণি’
- post_by বর্তমান
- জুলাই 19, 2025
এখনকার দর
-
ইউরো
- post_by Admin
- জুলাই 17, 2025
-
পাউন্ড
- post_by Admin
- জুলাই 17, 2025
-
ডলার
- post_by Admin
- জুলাই 17, 2025
-
রুপোর দাম
- post_by Admin
- জুলাই 18, 2025
-
সোনার দাম
- post_by Admin
- জুলাই 18, 2025
-
নিফটি ব্যাঙ্ক
- post_by Admin
- জুলাই 18, 2025
-
নিফটি ৫০
- post_by Admin
- জুলাই 18, 2025