স্বামীজী (১৪/০৫/২৫)
স্বামীজীর সঙ্গে সমুদ্রযাত্রার সুযোগ পেয়ে নিবেদিতা নিজেকে ধন্য মনে করলেন। তিনি লিখেছেন, “গুরুর সঙ্গে যদি পৃথিবী প্রদক্ষিণও করা হয়, তবে তাই তীর্থযাত্রা হয়ে দাঁড়ায়।” ২০ জুন (১৮৯৯) স্বামী বিবেকানন্দ, স্বামী তুরীয়ানন্দ ও নিবেদিতা জাহাজে রওনা হন।

বর্তমান ওয়েবডেস্ক
মে ১৪, ২০২৫
স্বামীজীর সঙ্গে সমুদ্রযাত্রার সুযোগ পেয়ে নিবেদিতা নিজেকে ধন্য মনে করলেন। তিনি লিখেছেন, “গুরুর সঙ্গে যদি পৃথিবী প্রদক্ষিণও করা হয়, তবে তাই তীর্থযাত্রা হয়ে দাঁড়ায়।” ২০ জুন (১৮৯৯) স্বামী বিবেকানন্দ, স্বামী তুরীয়ানন্দ ও নিবেদিতা জাহাজে রওনা হন। মৌসুমের জন্য অনেক দেরি করে জাহাজ ৩১ জুলাই ইংল্যান্ড পৌঁছাল। কয়েকদিন ইংল্যান্ডে কাটিয়ে স্বামীজী আমেরিকায় গমন করেন। একমাস পরে নিবেদিতাও সেখানে যান। নিউইয়র্ক থেকে ১৫০ মাইল দূরে হাডসন নদীর তীরে পাহাড়ের ওপর মিঃ ও মিসেস লেগেটের পল্লিভবন ‘রিজলি ম্যানরে’ তাঁরা ছিলেন। নিবেদিতার উদ্দেশ্য ছিল বিদ্যালয়ের জন্য অর্থসংগ্রহ করা। তাছাড়া তিনি ব্রহ্মচর্যব্রত গ্রহণ করেছিলেন। তিনি জানতেন একটি বিশেষ আদর্শ আছে তাঁর জীবনে। অতএব তাঁর চাল-চলন, বেশভূষায় অপরের সঙ্গে পার্থক্য থাকা উচিত। এইসময় থেকেই তিনি শুভ্র ও দীর্ঘ পরিচ্ছদ গ্রহণ করেন এবং পরবর্তী কালে সবসময় তাঁকে ওই পরিচ্ছদেই দেখা যেত। স্বামীজী সন্তুষ্ট হয়ে আশীর্বাদ করেন ও Peace (শান্তি) নামে একটি কবিতা উপহার দেন। এই সময়েই একদিন তিনি নিবেদিতাকে বলেছিলেন, “মার্গট, যখনি কোনও বিপদে পড়বে, দুর্গানাম জপ করবে।” এই উপদেশ নিবেদিতা আজীবন স্মরণ রেখেছিলেন।
১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর থেকে পরের বছর জুন পর্যন্ত নিবেদিতা শিকাগো, জ্যাকসন, অ্যান আরবর, ডেট্রয়েট, ক্যানসাস সিটি, বস্টন, নিউইয়র্ক প্রভৃতি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বক্তৃতাদি দিয়ে অর্থসংগ্রহ করেন। ওদেশের ছেলেমেয়েদের কাছে তিনি শ্রীকৃষ্ণ, ধ্রুব, প্রহ্লাদ, গোপাল প্রভৃতি সম্বন্ধে তাঁর অপূর্ব ভাষায় গল্প করে বলতেন। তাছাড়া বিভিন্ন সভায় তাঁর বক্তৃতার বিষয় ছিল ভারতের নারী, জীবনদর্শন, চিত্রকলা, বেদান্ত মতবাদ প্রভৃতি। অর্থসংগ্রহ কাজটি সহজ হয়নি। নিবেদিতা ভারত ভ্রমণ করে এসেছেন বলে বহু সময় তাঁর চারপাশে কৌতূহলী লোকের ভিড় জমে উঠত। ভারত সম্বন্ধে নানা প্রশ্ন করে তারা নিজেদের কৌতূহল চরিতার্থ করত। কিন্তু অর্থসাহায্যের জন্য এগিয়ে আসত কম লোক। তাছাড়া তখন মিশনারীরা ভারত সম্বন্ধে নানা কুৎসা রটাত। সতীদাহ বিষয়ে অত্যন্ত বাড়িয়ে চিত্তাকর্ষক কাহিনি প্রচার করত। পুরুষদের বহুবিবাহ, জাতিভেদ, মেয়েদের ওপর নানারকম অবিচার, শিক্ষার অভাব, নানাবিধ কুসংস্কার, গঙ্গাসাগরে শিশু বিসর্জন দেওয়া—ইত্যাদি ফলাও করে প্রচার করা হত। সামাজিক কুপ্রথা সবদেশেই কিছু কিছু থাকে। এদেশেও ছিল, কিন্তু অনেক ভালো দিকও ছিল। মিশনারীদের স্বভাব ছিল, যা কিছু মন্দ তাই বহুগুণ করে পাশ্চাত্য দেশসমূহে প্রচার করা। নিবেদিতাকে ওইসব বিষয়ে অনেকেই প্রশ্ন করত, ফলে তিনি ক্রুদ্ধ হতেন। ভারতবর্ষকে তিনি ভালোবেসেছিলেন, তাই মিশনারীদের এইসব জঘন্য অপবাদ তাঁকে খুবই কষ্ট দিত। ভারতবর্ষের পক্ষে কিছু বলতে গেলে তাঁকে বহু ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ সহ্য করতে হত। তাঁর পোশাক-পরিচ্ছদের জন্যও নানারকম মন্তব্য শুনতে হত। আমেরিকায় স্বামীজীর বহু অনুরাগী বন্ধু ছিলেন। নিবেদিতার আশা ছিল, তাঁরা সকলেই সাহায্য করবেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তিন-চারজন ব্যতীত কেউই সাহায্য করেননি। এইসব কারণে তিনি খুব মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করতেন।
স্বামীজী মধ্যে মধ্যে উৎসাহপূর্ণ পত্র লিখে নিবেদিতাকে প্রেরণা দিতেন। এক পত্রে লিখেছিলেন, “তোমার বিদ্যালয়ের জন্য অর্থসাহায্য আসবেই, আসতেই হবে। আর যদি না আসে, তাতেও বা কী এসে যায়? মা জানেন কোন পথ দিয়ে কাকে নিয়ে যাবেন।”
প্রব্রাজিকা অমলপ্রাণা প্রকাশিত ‘ভগিনী নিবেদিতা’ থেকে
রাশিফল
-
আজকের রাশিফল
- post_by Admin
- জুন 14, 2025
অমৃত কথা
-
ধ্যান
- post_by বর্তমান
- জুন 14, 2025
এখনকার দর
-
রুপোর দাম
- post_by Admin
- জুন 14, 2025
-
সোনার দাম
- post_by Admin
- জুন 14, 2025
-
ইউরো
- post_by Admin
- জুন 14, 2025
-
ডলার
- post_by Admin
- জুন 14, 2025
-
পাউন্ড
- post_by Admin
- জুন 14, 2025
-
নিফটি ব্যাঙ্ক
- post_by Admin
- জুন 13, 2025
-
নিফটি ৫০
- post_by Admin
- জুন 13, 2025