শুক্রবার, 11 জুলাই 2025
Logo
  • শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

গুরু

“গুরুর উপদেশ দ্বারা ব্রহ্ম-জ্ঞান লাভ হয়।” গুরু সৎগুরু সাগর প্রতিম, ‘তিনি’ সত্যস্বরূপ পরমাত্মা। পূর্ণ ভাগ্য হলে গুরুর সেবা করা যায়। এই রহস্যকে কেবল সেই বোঝে যাকে তিনি নিজে বোধ দেন। গুরু কৃপার মাধ্যমে সেবা করান। জ্ঞান রত্নের জন্য সকল বোধ প্রাপ্তি হয়। 

গুরু

“গুরুর উপদেশ দ্বারা ব্রহ্ম-জ্ঞান লাভ হয়।” গুরু সৎগুরু সাগর প্রতিম, ‘তিনি’ সত্যস্বরূপ পরমাত্মা। পূর্ণ ভাগ্য হলে গুরুর সেবা করা যায়। এই রহস্যকে কেবল সেই বোঝে যাকে তিনি নিজে বোধ দেন। গুরু কৃপার মাধ্যমে সেবা করান। জ্ঞান রত্নের জন্য সকল বোধ প্রাপ্তি হয়। গুরুর কৃপাতে অজ্ঞানতার অন্ধকার সরে যায় এবং সে দিন-রাত জাগ্রত অবস্থাতে ‘ওই’ সত্য পরমাত্মাকে সর্বত্র দেখতে পায়।
গুরু-শব্দের সাহায্যে যে মোহ, ধনাদির অহঙ্কারকে পুড়িয়ে ফেলতে পারে, সে পূর্ণ গুরুর কাছ থেকে বোধ-বুদ্ধি লাভ করে। সে গুরু-শব্দের মাধ্যমে অন্তরে স্থিত পরমেশ্বরের স্বরূপকে চিনে নেয়। স্থির নামে লীন হওয়াতে তার গমনাগমনের অবসান ঘটে। সংসার জন্ম-মৃত্যুর লীলার স্থল। অবুঝ উন্মুখ জীব মায়া-মোহের গহন অন্ধকারে থেকে পরনিন্দা করে ও প্রচুর মিথ্যা সঞ্চয় করে। সে বিষ্ঠার কীট হয়ে বিষ্ঠাতেই লীন হয়। সৎসঙ্গতিতে মিলিত হয়ে উন্মুখও বোধ-বুদ্ধি লাভ করতে পারে। গুরুর শব্দের এমনই মহিমা যে তা হরির প্রতি ভক্তিকে সুদৃঢ় করে। তখন সে প্রভুর আজ্ঞায় চলে, যার ফলে চিরসুখ লাভ করে। গুরু নানক সাহেব জী বলছেন যে, সে তখন সত্যস্বরূপ পরমাত্মাতে লীন হয়ে যায়।
“পূর্ণ গুরুর মাধ্যমে প্রেম-ভক্তি লাভ হয়।”
যে গুরুর শব্দের সাহায্যে অহংভাবে মারতে পারে, সে চির আনন্দ লাভ করে। যে সৎগুরুর সঙ্গে মিলিত হয়, সে গুরু গোবিন্দের সাক্ষাৎ পায়। তখন তার মৃত্যু হয় না ও নানা যোনিতে গমনাগমন করতে হয় না। পূর্ণ গুরুর দ্বারা সে সত্যস্বরূপ পরমাত্মাতে লীন হয়ে যায়। যার মস্তকে প্রথম থেকে নাম প্রাপ্তির লিখন থাকে, সে পূর্ণ গুরুর কাছে বিশেষ ভক্তি লাভ কোরে দিবারাত্র নামের ধ্যান করে। হরি প্রভু যাকে নিজের সঙ্গে মিলিত করেন, তার দুরুহ আত্মিক স্তর লাভ কেউ রোধ করতে পারে না কারণ সৎগুরু তাকে মহিমা প্রদান করেছেন এবং হরি-নাম জপ করার দরুন সে উত্তম পদবীতে লীন হতে পেরেছে।
প্রভু যা কিছু করেন, তিনি নিজে নিজেই করেন, ‘তিনি’ এক মুহূর্তের মধ্যে সৃষ্টির লয় ঘটান। কেউ যতই তাঁর কথা বলে কিংবা ব্যাখ্যা কোরে শোনাক না কেন, শত শত প্রকারের সাধনার পথ অবলম্বন করুক না কেন, তার এই পরিশ্রম স্বীকৃত হয় না। যার ভাণ্ডারে পুণ্যফল আছে তাকে গুরু কাছে টেনে নেন। গুরু তাকে সত্য বাণী-শব্দ শোনান। যেখানে শব্দ বাস করে, সেখানে দুঃখ দূর হয়। জ্ঞানরত্নের সাহায্যে সে সহজেই সত্যস্বরূপ হরিতে লীন হয়ে যায়। হে ভাই! প্রভুর নামের সমকক্ষ আ কোন দ্বিতীয় ধন নেই। কিন্তু এই ধন সে পায় যাকে সত্যস্বরূপ হরি এটি দান করেন। হে নানক! সে পূর্ণ গুরুর শব্দের দ্বারা হরি-নামকে মনে ঠাঁই দেয় এবং সে নামে অনুরক্ত থেকে সুখ লাভ করে।
“কেবল ভক্তি দ্বারা প্রভুর সঙ্গে মিলন হয়।”

‘আদি শ্রী গুরু গ্রন্থ সাহেব’ থেকে

রাশিফল