বুধবার, 25 জুন 2025
Logo
  • বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

হিলারি স্টেপেই মৃত্যুর কোলে রানাঘাটের স্কুলশিক্ষক সুব্রত

আশঙ্কাই সত্যি হল। পাহারচূড়ার আতঙ্ক কাটিয়ে বেঁচে ফিরতে পারলেন না রানাঘাটের স্কুল শিক্ষক সুব্রত ঘোষ। বিষাদের পাশাপাশি রাজ্যের মানুষের কাছে অবশ্য একটি সুখবরও এল।

হিলারি স্টেপেই মৃত্যুর কোলে রানাঘাটের স্কুলশিক্ষক সুব্রত

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা, রানাঘাট ও বর্ধমান: আশঙ্কাই সত্যি হল। পাহারচূড়ার আতঙ্ক কাটিয়ে বেঁচে ফিরতে পারলেন না রানাঘাটের স্কুল শিক্ষক সুব্রত ঘোষ। বিষাদের পাশাপাশি রাজ্যের মানুষের কাছে অবশ্য একটি সুখবরও এল। প্রবল ঠান্ডা, তুষার ঝড়, ধসের মতো একাধিক প্রতিকূলতা পেরিয়ে ‘সাগরমাতা’ (এভারেস্ট) জয় করলেন সরকারি কর্মচারী বর্ধমানের সৌমেন সরকার। তিনি বেস ক্যাম্পে ফিরে এসেছেন। রানাঘাটের আর এক শিক্ষক রুম্পা দাস বেস ক্যাম্পে ফেরার জন্য এখনও লড়াই চালাচ্ছেন। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী তিনি ক্যাম্প টু’য়ে এসে পৌঁছেছেন।
এই অভিযানের দায়িত্বে স্নোয়ি হরাইজন ট্রেকস এজেন্সি। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর বোধরাজ ভাণ্ডারি জানান, বৃহস্পতিবার হিলারি স্টেপ আর এভারেস্ট সামিট পয়েন্টের মাঝে সুব্রতবাবু প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া সূত্রের খবর, ৪৫ বছরের সুব্রতবাবু সামিট পয়েন্টের উদ্দেশে রওনা দিতে দেরি করেছিলেন। শেরপার সঙ্গে দুপুর দু’টো নাগাদ পৌঁছেছিলেন। বোধরাজ আরও জানান, নামার সময় সুব্রত অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁর মধ্যে ‘অল্টিটিউড সিকনেস’ দেখা গিয়েছিল। সুব্রতর গাইড পালচেন কামাং বোধরাজকে জানিয়েছিলেন, সামিট থেকে ফেরার সময় সুব্রতবাবু আর নামতে পারছিলেন না। ক্যাম্প ফোর থেকে শুক্রবার ভোররাতে বেস ক্যাম্পে ফিরে মৃত্যুর খবর জানান পালচেন। ৩১ মার্চ সুব্রত ঘোষ ও রুম্পা দাস এভারেস্টের উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন।
শুক্রবার সকালে রানাঘাটের বাড়িতে সুব্রতবাবুর খবর আসার পর এক লহমায় বদলে যায় পরিবেশ। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা ও মা ছাড়াও রয়েছেন দাদা-বউদি। মৃত্যুর খবর আসার পর বাড়িতে যান রানাঘাট উত্তর পশ্চিমের বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়, রানাঘাটের চেয়ারম্যান কুশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায় ও অন্যান্যরা। সুব্রতবাবুর দেহ দ্রুত ফিরিয়ে আনার জন্য রাজ্য সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। তাঁর বন্ধু প্রতাপ সাহা বলেন, ‘এজেন্সির ভূমিকায় আমরা একেবারেই সন্তুষ্ট নই।’ 
এদিকে রাজ্যের পূর্তদপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সৌমেন সরকারের এভারেস্ট জয়ের খবর শুক্রবার সকালে ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত রানিসায়রের বাসিন্দারা। তিনি এর আগে রাশিয়ার মাউন্ট এলব্রুস জয় করেছিলেন। এছাড়া মাউন্ট দেওতিব্বা, মাউন্ট ইউনিম জয়ের সাফল্যও তাঁর পকেটে রয়েছে। মাউন্ট এভারেস্ট জয় করতে যাওয়ার আগের সময় বেস ক্যাম্প থেকে তিনি নিকটজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন। সৌমেনবাবু এক এপ্রিল বাড়ি থেকে বের হন। তাঁর বর্ধমানের বাড়িতে স্ত্রী এবং মেয়ে থাকেন। এখন কিছুদিনের জন্য তাঁরা কলকাতায় রয়েছেন। প্রতিবেশীরা বলেন, ‘সৌমেন বর্ধমানের গর্ব।’