নতুন বছর, নতুন শপথ
আগামী মঙ্গলবার পয়লা বৈশাখ। বাংলা বর্ষবরণ ঘিরে নিজেদের আনন্দ ও উচ্ছ্বাসের কথা জানাল বারাকপুর গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রীরা। ছবিও আঁকল তারা।

বর্তমান ওয়েবডেস্ক
এপ্রিল ২২, ২০২৫
আগামী মঙ্গলবার পয়লা বৈশাখ। বাংলা বর্ষবরণ ঘিরে নিজেদের আনন্দ ও উচ্ছ্বাসের কথা জানাল বারাকপুর গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রীরা। ছবিও আঁকল তারা।
ভারতবর্ষ তখন পরাধীন। মরণপণ লড়াই চালাচ্ছেন স্বাধীনতা সংগ্রামীরা। দেশপ্রেমের জোয়ার বইছে চতুর্দিকে। কিন্তু অশিক্ষার জালে বন্দি সমাজ। নারী শিক্ষার হাল তথৈবচ। তাহলে নারী শিক্ষা ছাড়া কীভাবে সমাজ এগবে? এই প্রশ্নটাই নাড়া দিয়েছিল, বারাকপুর তালপুকুরের কতিপয় শিক্ষানুরাগী মানুষকে। শুরু হল বিদ্যালয় তৈরির প্রস্তুতি। বহু প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে প্রতিষ্ঠা হল স্কুল। বারাকপুরের ইতিহাসে নতুন পালক।
১৯৪৬ সালের ১২ আগস্ট। মাত্র ১৯ জন ছাত্রীকে নিয়ে শুরু হল বারাকপুর গার্লস স্কুলের পথচলা। সেই স্কুল কলেবরে বৃদ্ধি পেয়ে আজকের রূপ নিয়েছে। বয়স প্রায় ৮০ ছুঁই ছুঁই। চেহারায় নেই বার্ধক্যের ছাপ। ঝকঝকে তকতকে এক সাংস্কৃতিক অঙ্গন। এই স্কুল প্রতিষ্ঠার নেপথ্যে ছিলেন কিছু বিদগ্ধ মানুষ। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন— উপেন্দ্রনাথ ঘোষ, ডাঃ নরেন্দ্রনাথ বাগচী, কালিচরণ মিত্র, হিরণ্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়, অম্বিকা ঘোষ, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, গোষ্ঠবিহারী সাধুখাঁ, বিজন সাধুখাঁ ও পাঁচুগোপাল সাধুখাঁ। এছাড়াও ছিলেন আরও অনেক বিদগ্ধজন।
নৈহাটি, কাঁচরাপাড়া, কল্যাণী সহ বহু জায়গা থেকে মেয়েরা এই স্কুলে পড়তে আসে। প্রতিবছরই থাকে ছাত্রী ভর্তির চাপ। বর্তমানে ছাত্রীসংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। রয়েছে লাইব্রেরি, মিউজিক ক্লাস। ছাত্রীদের আঁকা ছবিতে সাজানো স্কুল ক্যাম্পাস। এখানকার ছাত্রীদের জীবনে তিনটি মন্ত্র— ঐতিহ্য, পরম্পরা ও নিয়মানুবর্তিতা। উচ্চ মাধ্যমিকস্তরে কলা, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান তিনটি বিভাগই রয়েছে। ৫৭ বছর ধরে প্রকাশিত হচ্ছে স্কুল ম্যাগাজিন— ‘শিখা’। এখানকার প্রাক্তনী সংগঠন ‘প্রত্যয়’ স্কুল অন্তঃপ্রাণ। আগামী আগস্ট মাসে স্কুলের ৮০ বছরের পূর্তি উৎসব পালিত হবে।
—ডঃ ছন্দা দাশগুপ্ত, প্রধান শিক্ষিকা
নববর্ষের আনন্দ
বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনটি পয়লা বৈশাখ। পুরনোকে বিদায় জানিয়ে নতুনের আবাহন করা হয় এদিন। পয়লা বৈশাখের উৎসবের মধ্যে দিয়ে মানুষের মধ্যে নতুন কাজের উৎসাহ তৈরি হয়। এই দিনটিতে সর্বস্তরের বাঙালি আনন্দে মেতে ওঠে। নববর্ষের আনন্দ ও উদ্দীপনায় প্রভাত ফেরির মাধ্যমে দিনটি শুরু হয়। আমাদের পাড়ায় প্রভাত ফেরিতে অংশগ্রহণ করি। নাচে-গানে বাতাস মুখরিত হয়ে ওঠে। বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন আসলে বাংলা সংস্কৃতির উদ্যাপন। তাই প্রতিটি বাঙালির শপথ নেওয়া উচিত— পয়লা বৈশাখের গুরুত্বকে আমরা হারাতে দেব না।
—সম্পূর্ণা কর্মকার, সপ্তম শ্রেণি
হরেক রকম মিষ্টি
আমরা বাঙালি, তাই মিষ্টি অন্তঃপ্রাণ। মিষ্টি ছাড়া আমাদের কোনও উৎসবই জমে না। সে বিজয়া দশমীই হোক বা ভাইফোঁটা। পয়লা বৈশাখও এর ব্যতিক্রম নয়। বাবার সঙ্গে বিভিন্ন দোকানে হালখাতা করতে যাই। সেখান থেকে হরেক রকম মিষ্টি আসে। এছাড়া নববর্ষের দিন যেহেতু বাবার ছুটি থাকে, তাই দুপুরে বাড়িতে জমিয়ে ভালো-মন্দ রান্না হয়। বাংলা নববর্ষ কবে থেকে শুরু হল, তা নিয়ে বিভিন্ন মতামত আছে। তার মধ্যে একটি মত, মুঘল সম্রাট আকবরের আমল থেকে বাংলা বর্ষপঞ্জি চালু হয়। তখন নাকি চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে চাষিকে খাজনা পরিশোধ করতে হতো। আর খাজনা আদায় হওয়ার খুশিতে জমিদাররা মিষ্টি খাওয়াতেন। সেই প্রথাই পরিবর্তিত হয়ে এখন দোকানে দোকানে হালখাতার রূপ নিয়েছে।
—তৃণাঙ্কনা ঢালী, ষষ্ঠ শ্রেণি
দোকানে হালখাতা
নতুন বছর নতুন আশা-আকাঙ্ক্ষার দিগন্ত উন্মোচন করে। পুরনো দুঃখ-কষ্ট ভুলে আবার নতুন স্বপ্ন দেখে এই দিনটিতে। বর্ষবরণের আনন্দে পয়লা বৈশাখ ছেলে-বুড়ো সকলে আনন্দে মেতে ওঠে। এই দিনের একটি বিশেষ অনুষ্ঠান হাল খাতা। দোকানদাররা সকালবেলা গণেশ-লক্ষ্মী পুজো করেন। বিকালে ক্রেতাদের নিমন্ত্রণ জানান তাঁরা। বিকালের অনুষ্ঠানে ক্রেতাদের হাতে নতুন বছরের ক্যালেন্ডার ও মিষ্টির প্যাকেট তুলে দেন দোকানদাররা। অনেকে আবার শরবতেরও ব্যবস্থা করেন। তাই বিভিন্ন দোকানে ঘুরে ঘুরে আমার হালখাতা করতে বেশ মজা লাগে। পয়লা বৈশাখ মানেই আমার কাছে ঠাকুর আর মহাপুরুষের ছবি সংবলিত ক্যালেন্ডার সংগ্রহ এবং দেদার মিষ্টি খাওয়া। এবারেও তার অন্যথা হবে না।
—অর্ণা সরকার, দশম শ্রেণি
রঙিন সাজ
চারদিকে উৎসবের আমেজ। বর্ষশেষের আনন্দে মেতে উঠেছে আপামর বাঙালি। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি বাংলাদেশেও শুভ নববর্ষের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। পয়লা বৈশাখ বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। নতুন পোশাকে সেজে উঠি আমরা। বন্ধুরা রঙিন সাজে সেজে সকালে পাড়ার অনুষ্ঠানে যোগ দিই। দুর্গাপুজো আর সরস্বতী পুজোর পরেই আমার কাছে পয়লা বৈশাখের গুরুত্ব। এদিন প্রিয়জন ও পরিবারের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নেওয়া হয়। নববর্ষ আমাদের মনে নতুন আশা জাগায়, নতুন স্বপ্নের সঞ্চার করে। অতীতের ভুলভ্রান্তি সংশোধন করে ভবিষ্যতের শপথ নিতে হয় বছরের প্রথম দিনটিতে।
—পল্লবী রজক, ষষ্ঠ শ্রেণি
মঙ্গল কামনায় পুজো
১ জানুয়ারি যেমন ইংরেজি নিউ ইয়ার পালিত হয়, তেমনই পয়লা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন সময়ে আঞ্চলিক বর্ষপঞ্জি মেনে নতুন বছরের উৎসব উদ্যাপন করা হয়। পুরনো বছরের দুঃখ, বিবাদ, ভ্রান্তি দূরে সরিয়ে রেখে আমরা নতুন বছরের আনন্দে মেতে উঠি। পয়লা বৈশাখের ভোর থেকেই মন্দিরে মন্দিরে পুজো শুরু হয়ে যায়। মূলত দোকানিরা হালখাতার জন্য গণেশ-লক্ষ্মী পুজো করান। তবে, বাড়ির সকলের মঙ্গল কামনায় এদিন আমার মা পুজো দিতে যান। নতুন পোশাক পরে আমি তাঁর সঙ্গী হয়ে যাই। মন্দির থেকে ফিরে বড়দের প্রণাম করি। পয়লা বৈশাখ আমার কাছে ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির পরম্পরা।
—প্রত্যাশা মজুমদার, নবম শ্রেণি
একগুচ্ছের ক্যালেন্ডার
বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। তেমনই একটি পার্বণ এই পয়লা বৈশাখ। আমাদের বিরক্তকর ও একঘেয়ে জীবনে আনন্দের ছোঁয়া লাগিয়ে যায় নববর্ষ। বাংলা বছরের শুরু মানেই একগুচ্ছের ক্যালেন্ডার উপহার পাওয়া। অত ক্যালেন্ডার দেওয়ালে ঝোলানোরও জায়গা থাকে না। তবুও রকমারি ক্যালেন্ডার পেতে আমার বেশ লাগে।
—সৌমিলী দাস, দশম শ্রেণি
সুখ-সমৃদ্ধি আনুক
নতুন বছর আমাদের জন্য সুখ-সমৃদ্ধি বয়ে নিয়ে আসুক। ঈশ্বরের কাছে এটাই আমার প্রার্থনা। নতুন বছর ঘিরে সকলেরই নানান আশা থাকে। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। চাই আরও ভালো লেখাপড়া করে আরও ভালো রেজাল্ট করতে। বাংলার ১৪৩২ সালে যেন আমার সেই ইচ্ছা পূরণ হয়, সেই প্রার্থনাই জানাই।
—অঙ্কনা চট্টোপাধ্যায়, দশম শ্রেণি
রাশিফল
-
আজকের রাশিফল (১৬/০৫/২৫)
- post_by Admin
- মে 16, 2025
-
আজকের রাশিফল (১৭/০৫/২৫)
- post_by Admin
- মে 17, 2025
এখনকার দর
-
নিফটি ব্যাঙ্ক (১৬/০৫/২৫)
- post_by Admin
- মে 16, 2025
-
নিফটি ৫০ (১৬/০৫/২৫)
- post_by Admin
- মে 16, 2025
-
ইউরো (১৬/০৫/২৫)
- post_by Admin
- মে 16, 2025
-
পাউন্ড (১৬/০৫/২৫)
- post_by Admin
- মে 16, 2025
-
ডলার (১৬/০৫/২৫)
- post_by Admin
- মে 16, 2025
-
রূপোর দাম (১৭/০৫/২৫)
- post_by Admin
- মে 17, 2025
-
সোনার দাম (১৭/০৫/২৫)
- post_by Admin
- মে 17, 2025
-
সোনার দাম (১৬/০৫/২৫)
- post_by Admin
- মে 16, 2025
-
রুপোর দাম (১৬/০৫/২৫)
- post_by Admin
- মে 16, 2025
-
ডলার (১৭/০৫/২৫)
- post_by Admin
- মে 17, 2025
-
পাউন্ড (১৭/০৫/২৫)
- post_by Admin
- মে 17, 2025
-
ইউরো (১৭/০৫/২৫)
- post_by Admin
- মে 17, 2025