শনিবার, 17 মে 2025
Logo
  • শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

নববর্ষ ও বাংলা ক্যালেন্ডার

দেখতে দেখতে আরও একটা বাংলা নববর্ষ চলে এল। আমাদের ছোটবেলায় পাড়ার দোকানিরা ঘটা করে হালখাতার আয়োজন করতেন। নিমন্ত্রণ পেতেন সমস্ত ক্রেতারা। 

নববর্ষ ও বাংলা ক্যালেন্ডার

কোহিনূর কর: দেখতে দেখতে আরও একটা বাংলা নববর্ষ চলে এল। আমাদের ছোটবেলায় পাড়ার দোকানিরা ঘটা করে হালখাতার আয়োজন করতেন। নিমন্ত্রণ পেতেন সমস্ত ক্রেতারা। বাবার হাত ধরে তাঁদের দোকানে গেলে একটা মিষ্টির বাক্স আর ঠাকুর বা মণীষীর ছবিওয়ালা একটা বাংলা ক্যালেন্ডার পেতাম। এই রীতি এখনও হয়তো অনেকেই মেনে চলেন। তবে আজকের আলোচ্য বিষয় ভারতের ক্যালেন্ডার ও তার উৎপত্তি।
এখন বাংলা কোন বছর—প্রশ্ন শুনলেই থতমত। হাতের কাছে স্মার্টফোন না থাকলে অনেকেই মাথা চুলকোতে শুরু করবেন। পশ্চিমবঙ্গ সহ বিশ্বের অন্য সব দেশেও বাঙালি হিসেবে আমরা ১৫ এপ্রিল থেকে বাংলা নতুন বছরের সূচনা বলে মানি। কবে শুরু হয়েছে বঙ্গাব্দ, আর কেনই বা ১৫ এপ্রিল থেকে নতুন বছর শুরু, ভারতীয় সরকারি ক্যালেন্ডার কখন-কীভাবে শুরু হল, তার এক দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।      
মুঘল সম্রাট আকবরের আমলের প্রথম দিকে প্রশাসনিক কাজে ইসলামি ঐতিহ্য মেনে হিজরি ক্যালেন্ডার ব্যবহার হতো। কিন্তু সেটা চন্দ্র-ভিত্তিক (লুনার) হওয়ায় কৃষিকাজ আর শুল্কের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। লুনার ক্যালেন্ডারের উপর নির্ভরশীল হিজরি বছর সৌর বছরের তুলনায় প্রায় ১১ দিন ছোট। ফলে প্রতি ৫-৬ বছরের মাথায় হিজরি ক্যালেন্ডারের সঙ্গে ঋতুর একটা বড় পার্থক্য দেখা দিত। যা কৃষিকাজের সঙ্গে সম্পর্কিত শুল্ক আদায়ে জটিলতার সৃষ্টি করত।
ঠিক কার আমলে বঙ্গাব্দ শুরু হয়েছিল, তা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। শোনা যায়, ১৫৮৪ সালের মার্চ মাসে মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা ক্যালেন্ডার চালু করেছিলেন। তাই যদি হয়, এ বছর বাংলা ১৪৩১ হয় কীভাবে! হিসেব মিলছে না। আবার অনেকে মনে করেন, বঙ্গাব্দ চালু করার নেপথ্যে গৌড়ের রাজা শশাঙ্কের অবদান রয়েছে। তাঁর রাজত্ব ছিল আনুমানিক ৫৯০ থেকে ৬২৫ ইংরেজি সাল। হিসেব করলে দেখা যাবে, আনুমানিক ৫৯৪ সাল থেকে বাংলা ক্যালেন্ডারের সূচনা। এ রাজ্যে প্রথাগত পদ্ধতি ও জ্যোতির্বিদ্যার উপর নির্ভর করে বাংলা নতুন বছর যে ১৫ এপ্রিল শুরু, তা প্রশাসনিকভাবে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল।   
এবার দেখা যাক ভারতীয় ক্যালেন্ডারের উৎপত্তির ইতিহাস। ১৯৫২ সাল। স্বাধীন ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ব্যবহার হচ্ছে তিরিশটিরও বেশি ক্যালেন্ডার। সেগুলির মধ্যে কোনও মিল তো নেই-ই, সময় গণনার কোনও নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করেও সেগুলি তৈরি করা হয়নি। দেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ভেদাভেদই এই বিভিন্নতার কারণ, মত ঐতিহাসিকদের। এমন পরিস্থিতিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ভারত সরকারের অন্তর্গত সিএসআইআর (কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ)-কে দায়িত্ব দিলেন একটা বিজ্ঞানসম্মত গবেষণা করার। সে বছর নভেম্বর মাসে সাতজনের একটা কমিটি তৈরি হল। নাম—‘ক্যালেন্ডার রিফর্ম কমিটি’। তার চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হলেন প্রখ্যাত পদার্থবিদ ও অধ্যাপক মেঘনাদ সাহা, সেক্রেটারি বাঙালি জ্যোতির্বিদ নীতীশচন্দ্র লাহিড়ী।
১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৩। কমিটিকে শুভেচ্ছা-বার্তা জানিয়ে চিঠি দিলেন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। ক্যালেন্ডার রিফর্ম কমিটির ফাইনাল রিপোর্টের প্রথমেই তা দেওয়া আছে। প্রধানমন্ত্রী নেহরু সেই চিঠিতে জানান, ক্যালেন্ডার সংস্কার কমিটি কাজ শুরু করায় আমি অত্যন্ত আনন্দিত। দেশের বিভিন্ন ক্যালেন্ডার পরীক্ষা এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণার উপর ভিত্তি করে সমগ্র ভারতের জন্য একটি অভিন্ন ক্যালেন্ডারের জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব জমা দেওয়ার দায়িত্ব এই কমিটিকে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বর্তমানে আমাদের কাছে ৩০টি পৃথক ক্যালেন্ডার রয়েছে। সেগুলি প্রত্যেকটিই একে অপরের থেকে ভিন্ন। এই ক্যালেন্ডারগুলি যেমন আমাদের অতীতের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসের ফসল, তেমনই এগুলি আংশিকভাবে দেশের অতীত রাজনৈতিক বিভাজনেরও প্রতিনিধিত্ব করে। এখন আমরা স্বাধীন। তাই আমাদের নাগরিক, সামাজিক এবং অন্যান্য কারণের জন্যই ক্যালেন্ডারের একটি সুনির্দিষ্ট রূপ থাকা বাঞ্ছনীয়। আর তা হওয়া উচিত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির উপর 
ভিত্তি করে। ...আশা করি, বিজ্ঞানীরা এই বিষয়ে আমাদের একটি দিশা দিতে পারবেন।
সিএসআইআরের দিল্লি অফিসে মোট তিনবার বৈঠক করে ‘ক্যালেন্ডার রিফর্ম কমিটি’। প্রথমবার ১৯৫৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৈঠক হয় ১৯৫৪ সালের মার্চ ও সেপ্টেম্বর মাসে। অসংখ্য তথ্য-পরিসংখ্যান সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে ১৯৫৫ সালে ২৯২ পাতার একটা রিপোর্ট প্রকাশ করে কমিটি। দীর্ঘ এই রিপোর্টটি তিন ভাগে বিভক্ত। প্রথম ভাগে কমিটির মিটিংয়ের সারাংশ ও সুপারিশ, দ্বিতীয় ভাগে বিভিন্ন সময়ে ভারতবর্ষে ব্যবহৃত ক্যালেন্ডার-সংক্রান্ত তথ্য এবং তৃতীয় ভাগে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ব্যবহৃত ক্যালেন্ডার-সংক্রান্ত তথ্য।
ভারতবর্ষের প্রশাসনিক কাজে ১৭৫৭ সালে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য শুরু হওয়ার পর থেকে শুরু হয় গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের ব্যবহার। যা এখনও বর্তমান। সৌর ক্যালেন্ডারে ১২টি মাস ও প্রতি মাসে ২৮-৩১ দিন আছে। সারা বিশ্বে এই ক্যালেন্ডারের ব্যবহার সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকৃত। এর আগে, আনুমানিক ১২০০ সাল থেকে ১৭৫৭ পর্যন্ত ভারতে প্রশাসনিক ও মুসলিম ধর্মীয় অনুষ্ঠানের কথা মাথায় রেখে হিজরি ক্যালেন্ডার ব্যবহার হতো। মাঝে কয়েক বছর (১৫৫৬-১৬৩০) সম্রাট আকবরের প্রচেষ্টায় হিজরি ক্যালেন্ডারের পরিবর্তে ইরানের ‘জেলালি’ সৌর ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সব প্রশাসনিক কাজকর্ম চলেছিল। তারপর ফের চালু হয় হিজরি ক্যালেন্ডার। তা এখনও চালু আছে, তবে শুধুমাত্র মুসলিম ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দিন নির্ধারণের জন্যই এই ক্যালেন্ডার ব্যবহার হয়।
এবার আসা যাক সৌর ক্যালেন্ডার ও চন্দ্র ক্যালেন্ডারের তুলনায়। সৌর ক্যালেন্ডারের ক্ষেত্রে বছরের সংজ্ঞা ঠিকমতো দেওয়া এবং এক বছরের দৈর্ঘ্য জ্যোতির্বিদ্যা অনুযায়ী সঠিক হওয়া জরুরি। পাশাপাশি ঋতুগুলির সঠিক সংজ্ঞা দেওয়া উচিত এবং প্রত্যেক ঋতু শুরুর তারিখ ঠিক করা প্রয়োজন। এছাড়াও প্রত্যেকটা দিন শুরু হোক মধ্যরাতে। আবার চন্দ্র ক্যালেন্ডারের ক্ষেত্রে সূর্য যখন মহাবিষুবরেখা অতিক্রম করে, সেই মুহূর্ত থেকে বছর শুরু হওয়া বাঞ্ছনীয়। বছরের দৈর্ঘ্য গ্রীষ্মমণ্ডলীয় হওয়া ও প্রতিটি ঋতু দুই সৌর মাস নিয়ে গঠিত হওয়া দরকার। প্রতিটা মাস সূর্যের উপবৃত্তাকার পথে ৩০° (অর্থাৎ ৩৬০°/১২ মাস) পথ অতিক্রম করতে যা সময় লাগে সেটা দিয়ে নির্ণয় করা উচিত। গণনার প্রয়োজনে প্রত্যেকটা দিন শুরু হোক মধ্যরাতে।
এই পর্যবেক্ষণগুলি অবশ্য ক্যালেন্ডারের সংজ্ঞার জন্য ‘যথেষ্ট’ বলে বিবেচিত হয়নি। কারণ? গণনা অনুযায়ী, এক বছর ঠিক ৩৬৫ দিনের পরিবর্তে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বছরের হিসেবে গড়ে ৩৬৫.২৪২২ সৌরদিন। তাছাড়া সূর্যের ৩০° অতিক্রম করতে সময় লাগে ২৯·৪৪ দিন থেকে ৩১·৪৬ দিন।
কমিটির রিপোর্টে বিভিন্ন রাজ্যে পালিত ছুটির দিনের একটা তালিকাও দেওয়া হয়। সেগুলি চারটে ভাগে ভাগ করা হয়েছিল—সৌর, চান্দ্র-সৌর, খ্রিস্টান ও মুসলিম। তাতে দেখা যায়, একটা অনুষ্ঠান হয়তো কোনও রাজ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু অন্যান্য রাজ্যে সেটার গুরুত্ব অপেক্ষাকৃত কম (যেমন দুর্গাপুজো। পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে বড় উৎসব হলেও পশ্চিম ভারতের ক্ষেত্রে ততটা নয়)। কমিটির প্রত্যাশা ছিল, ভারত সরকার সারা দেশের নিরিখে নির্দিষ্ট কয়েকটি সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করবে। কারণ ভারতের সব রাজ্যের ছুটিগুলি যদি তালিকায় ঢোকানো যায়, তাহলে মাত্র কয়েকটা কাজের দিন পড়ে থাকবে— যা বাস্তবে অসম্ভব।
ক্যালেন্ডার কমিটির প্রতিটি মিটিংয়ে উপস্থিত থাকতেন মেঘনাদ সাহা। কমিটির পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রয়োজনীয় মন্তব্য ও একাধিক সুপারিশ করেছেন তিনি। প্রথম মিটিংয়ে প্রধানমন্ত্রী নেহরুর যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি যোগ দিতে না পারায় দুঃখপ্রকাশ করেন অধ্যাপক সাহা। তবে নেহরুর শুভেচ্ছাবার্তার উল্লেখ করে তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী এই গবেষণার বিষয়ে অত্যন্ত উৎসাহিত। নেহরুজির আশা, এই কমিটি বৈজ্ঞানিক উপায়ে সারা ভারতের জন্যে উপযোগী একটা ক্যালেন্ডার সুপারিশ করবে। 
উন্নয়ন বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি বেশ কিছু সুপারিশও করেন মেঘনাদ সাহা। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সব পর্যবেক্ষণাগারে গবেষণার কাজে অ্যামোনিয়া ঘড়ি ও কোয়ার্টজ ঘড়ির ব্যবস্থা করা। কমিটির সব সদস্যদের কঠোর পরিশ্রম ও মতামত দেওয়ার জন্যে আন্তরিক কৃতজ্ঞতাও জানান তিনি।
সিএসআইআর ক্যালেন্ডার রিফর্ম কমিটির চূড়ান্ত সুপারিশ অনুযায়ী, ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত গ্রাম ও শহরে আলাদা আলাদা ক্যালেন্ডার ব্যবহার না করে একটা জাতীয় ক্যালেন্ডার ব্যবহার করা উচিত। 
নাগরিকদের উপযোগী ক্যালেন্ডারের বিষয়ে বেশ কিছু বিজ্ঞানসম্মত সুপারিশও করা হয়েছিল কমিটি। এর মধ্যে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ—জাতীয় ক্যালেন্ডারে শকাব্দর ব্যবহার (অর্থাৎ ১৯৫৪-৫৫ সাল হল ১৮৭৬ শকাব্দ), বছর শুরু হওয়া উচিত স্থানীয় বিষুব দিবসের পরদিন থেকে, এক বছরে থাকবে ৩৬৫ দিন (তবে লিপ-ইয়ার হলে সেটা হবে ৩৬৬ দিন। শকাব্দর সঙ্গে ৭৮ যোগ করার পর যে সংখ্যা পাওয়া যায় সেটা ৪ দিয়ে বিভাজ্য হলে সেটা হবে লিপ-ইয়ার), চৈত্র হবে বছরের প্রথম মাস ও ৩০ দিনের (লিপ-ইয়ার হলে ৩১ দিন), বৈশাখ থেকে ভাদ্র মাস হবে ৩১ দিনের, আশ্বিন থেকে ফাল্গুন হবে ৩০ দিন করে, চৈত্র মাসের ১ তারিখ হবে ইংরেজি (গ্রেগরিয়ান) মার্চের ২২ তারিখ (লিপ-ইয়ার হলে মার্চের ২১)। সুপারিশে আরও বলা হয়, বছরে ছ’টি ঋতু— গ্রীষ্ম (বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ), বর্ষা (আষাঢ়, শ্রাবণ), শরৎ (ভাদ্র, আশ্বিন), হেমন্ত (কার্তিক, অগ্রহায়ণ), শিশির বা শীত (পৌষ, মাঘ) এবং বসন্ত (ফাল্গুন, চৈত্র)। পশ্চিমবঙ্গ, অসম ও ওড়িশার ক্ষেত্রে আঞ্চলিক নতুন বছর (নববর্ষ) এপ্রিল মাসের ১৪ তারিখে শুরু করলেও চৈত্র মাসের ১ তারিখ থেকেই জাতীয় স্তরে নতুন বছর মেনে চলতে হবে।
ধর্মীয় ক্যালেন্ডারের ক্ষেত্রেও কমিটি বেশ কয়েকটা সুপারিশ করেছিল। যেগুলি অবশ্য পঞ্জিকার গণনা ও জ্যোতির্বিদ্যার জন্য। সবশেষে আরও দু’টি অতিরিক্ত সুপারিশও কমিটির তরফে করা হয়েছিল— ১) ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সূর্য, চাঁদ, গ্রহ ও অন্যান্য নক্ষত্রের অবস্থান সম্পর্কে একটা ‘ভারতীয় এফিমেরিস ও নটিক্যাল অ্যালম্যানাক’ প্রকাশ করার উদ্যোগ নেওয়া উচিত। প্রতি বছর সেই প্রকাশনায় নাগরিক ও ধর্মীয় দু’টি দিকেরই উল্লেখ থাকা প্রয়োজন। তার জন্যে একটা কমিটি গঠন করা উচিত। ২) উপযুক্ত জায়গায় একটা ‘জাতীয় অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেটরি’ প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে আধুনিক যন্ত্রপাতি সহ সময়-সংক্রান্ত পরিষেবা থাকবে। 
বাংলা ক্যালেন্ডারের ক্ষেত্রে যদিও কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ১ বৈশাখ হয় ইংরেজি ১৪ এপ্রিল। তদানীন্তন ভারত সরকার সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি। তাই পশ্চিমবঙ্গ ও ভারতের অন্যান্য রাজ্যে ১৫ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ হিসেবে উদ্‌যাপিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশে একটা আলাদা কমিটি তাদের বাংলা ক্যালেন্ডার খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেয়, সেখানে ১৪ এপ্রিল নতুন বছরের সূচনা ধরা হবে। সেই থেকে দুই বাংলায় দু’টি আলাদা দিনে বাংলা নববর্ষ পালন করা হয়। 
সাহা কমিটির প্রস্তাব যথাযথভাবে কার্যকর না হওয়ায় ১৯৮৬ সালে কেন্দ্রীয় সরকার অধ্যাপক এস পি পান্ডের সভাপতিত্বে আরও একটি পঞ্জিকা সংস্কার কমিটি গঠন করেছিল। এই কমিটি ১৯৮৮ সালের মার্চ মাসে রিপোর্ট পেশ করে। সরকার পান্ডে কমিটির প্রস্তাব বিশ্লেষণ করে ২০০২ সালের অক্টোবর মাসে তা গ্রহণ করে।


- লেখক অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক
- গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল 
- সহযোগিতায় : উজ্জ্বল দাস