চর্চায় অনেক প্রশ্ন
পহেলগাঁওয়ে ধর্মীয় পরিচয় জেনে ২৬ জনকে জঙ্গিরা গুলি চালিয়ে হত্যা করার পর নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, যারা এই কাজ করেছে এবং তাদের মদতদাতাদের মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হবে।

বর্তমান ওয়েবডেস্ক
মে ১৩, ২০২৫
পহেলগাঁওয়ে ধর্মীয় পরিচয় জেনে ২৬ জনকে জঙ্গিরা গুলি চালিয়ে হত্যা করার পর নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, যারা এই কাজ করেছে এবং তাদের মদতদাতাদের মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হবে। পাকিস্তানে আশ্রিত ও মদতপুষ্ট জঙ্গি ও জঙ্গিঘাঁটি দমনে মোদির সেই ঘোষণাকে দেশের সব রাজনৈতিক দল দু’হাত তুলে সমর্থন জানিয়েছিল। ৭ মে ‘অপারেশন সিন্দুর’ শুরুর পরেও দু’টি সর্বদল বৈঠকে সেই সমর্থনে কোনও চিড় ধরেনি। এই সুযোগে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের অধিকার ভারত ফিরে পাক, চেয়েছে দেশের আম জনতা। ‘অপারেশন সিন্দুর’ শুরুর পর টানা চারদিন ভারতীয় সেনা যেভাবে দক্ষতার সঙ্গে সামরিক হামলা চালিয়ে পাকিস্তানের কোমর ভেঙে দিচ্ছিল, তাতে কার্যত গোটা দেশের মানুষের স্বপ্নপূরণের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শনিবার, ১০ মে’র সন্ধ্যায় আচমকা সংঘর্ষ বিরতির ঘোষণা এবং তার পরবর্তী ঘটনাসমূহে একরাশ প্রশ্নে উত্তাল হয়েছে গোটা দেশ। সংঘর্ষ বিরতি ও কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে অযাচিত হস্তক্ষেপের কথা জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে বিবৃতি দিয়েছেন তাতে মোদি সরকারের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। সঙ্গতভাবেই বিরোধীরা জানতে চেয়েছে, কোন শর্তে সংঘর্ষ বিরতি? দেশবাসীও তা জানতে চায়। কারণ, ট্রাম্প প্রথমে জানিয়েছেন, ভারত-পাকিস্তানের সংঘাত থামাতে তিনি ‘মধ্যস্থতা’ করেছেন, তাঁর কথা দু’দেশ মেনেও নিয়েছে। পরে জানিয়েছেন, কাশ্মীর সমস্যার সমাধানেও তিনি দু’দেশের সঙ্গে কাজ করবেন। তাই বিরোধীদের দাবি, সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে এর ব্যাখ্যা দিন প্রধানমন্ত্রী। সরকারি সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, ভারত নাকি এর কোনও দাবিই মানছে না। যদিও ঘটনা হল, ট্রাম্পের এই দাবির পরে সরকারিভাবে ঘোষণা করে মোদি সরকার তা সমর্থন বা খারিজ কোনওটাই করেনি। ফলে সরকারের মনোভাব নিয়ে কিছু সন্দেহ, ধোঁয়াশা দানা বেঁধেছে।
মার্কিন প্রশাসনের দাবি, আকাশপথে ভারতের ক্রমাগত হামলায় বিধ্বস্ত পাকিস্তান নিজেদের দেশ বাঁচাতে নাকি পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের কথা ভাবছিল। আমেরিকার গোয়েন্দা বিভাগ তা জানতে পেরে এক ভয়ঙ্কর পরিণতি আঁচ করে ভারতকে সংঘর্ষ বিরতিতে রাজি করায়। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রস্তাব এসেছিল পাকিস্তানের তরফে। বিরোধীদের প্রশ্ন, ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের সময়ে অটলবিহারী বাজপেয়িকেও পাকিস্তানের পারমাণবিক হামলার ‘জুজু’ দেখিয়ে যুদ্ধ থামাতে বলেছিল আমেরিকা। ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তাতে কান দেননি। এই বিতর্ককে দূরে সরিয়ে রাখলেও কাশ্মীর নিয়ে ট্রাম্পের ‘দাদাগিরি’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। কারণ ১৯৭১ সালে ভারত-পাক যুদ্ধের পর ঐতিহাসিক সিমলা চুক্তিতে পরিষ্কার বলা হয়েছে, কাশ্মীর নিয়ে কোনও তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতি মানা হবে না। সেবার পাকিস্তানের হয়ে প্রবল চাপ তৈরি করেছিল আমেরিকা। কিন্তু পাকিস্তানের ৯৩ হাজার সেনাকে আত্মসমর্পণ করিয়ে ছেড়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। তারপরের ৫৪ বছরে কাশ্মীর নিয়ে শত বিরোধেও কোনও তৃতীয় পক্ষ নাক গলায়নি। ট্রাম্প এসব ইতিহাস জেনেও কেন মধ্যস্থতার কথা বললেন সেই রহস্যের উত্তরও মোদির কাছে জানতে চায় দেশ। কারণ, পাকিস্তান ট্রাম্পের ওই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে। তাই জাতির উদ্দেশে এদিন মোদির ভাষণ ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তথ্য বলছে, আমেরিকার সমর্থনে আইএমএফ সংঘর্ষের মধ্যেই গত শুক্রবার পাকিস্তানকে ফের ঋণ নিতে অনুমতি দিয়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে পাকিস্তানকে ৩৫ কোটি ডলার প্রতিরক্ষাখাতে অনুদান দিয়েছে ট্রাম্প সরকার। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, সংঘর্ষ বিরতি ঘোষণার পাশাপাশি দু’ দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প। আসলে ট্রাম্পের বাণিজ্যশুল্ক বাড়ানোর হুমকির পর ভারত ইতিমধ্যে আমেরিকা থেকে আমদানিকৃত পণ্যের শুল্ক কমানোর আশ্বাস দিয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, এই সংঘর্ষের আবহে চতুর ট্রাম্পও অতিরিক্ত শুল্কের জুজু ও বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়ানোর লোভ দেখিয়ে ‘ভারত-পাক সংঘর্ষে’ সুবিধাজনক অবস্থায় থাকা মোদিকে সংঘর্ষ বিরতিতে রাজি করিয়েছেন। বলা যায়, হয়তো বাধ্য করেছেন। বিস্ময়ের কথা হল, যে শনিবার বিকালে সংঘর্ষ বিরতির কথা হল, সেদিন সকালেই এক্স হ্যান্ডেলে বিজেপি জানিয়েছিল, শান্তি আলোচনা বেকার। অথচ ভাগ্যের পরিহাসে সেটাই মেনে নেওয়া হল বিকালে!
প্রশ্ন অবশ্য এখানেই থেমে নেই। পহেলগাঁওয়ের ঘটনায় যুক্ত যে চার জঙ্গির স্কেচ প্রকাশ করেছিল সরকার তাদের পরিচয় জানা গেলেও এখনও (এই লেখা পর্যন্ত) টিকি খুঁজে পাওয়া যায়নি! ঘটনার পর ৯০ জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে। বহু মানুষকে জেরা করা হয়েছে। বৈসরণের আশপাশের জঙ্গলে প্রতিদিন চিরুনি তল্লাশি চলছে। কিন্তু যেন কর্পূরের মতো উবে গিয়েছে ওই চারজন! খোঁজ নেই পূর্ণম সাউয়েরও। পাঠানকোটের সীমান্ত লঙ্ঘনের অভিযোগে এই বিএসএফ জওয়ানকে আটক করে পাক রেঞ্জার্স। তারপর থেকে রোজই তাঁর মুক্তির আশ্বাস শোনাচ্ছে সরকার। এই মুহূর্তে সারা দেশবাসী চায় পহেলগাঁওয়ে নিরীহ পর্যটকদের হত্যাকারী চার জঙ্গিকে খুঁজে বের করে শাস্তি দিক সরকার। সেইসঙ্গে পূর্ণমের নিঃশর্ত মুক্তির ব্যবস্থা করুক। সর্বোপরি কোনও ‘দাদা’র মধ্যস্থতা ছাড়াই ভারত তার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে ফেরাবার অঙ্গীকার করুক।
রাশিফল
-
আজকের রাশিফল
- post_by Admin
- জুন 14, 2025
অমৃত কথা
-
ধ্যান
- post_by বর্তমান
- জুন 14, 2025
এখনকার দর
-
রুপোর দাম
- post_by Admin
- জুন 14, 2025
-
সোনার দাম
- post_by Admin
- জুন 14, 2025
-
ইউরো
- post_by Admin
- জুন 14, 2025
-
ডলার
- post_by Admin
- জুন 14, 2025
-
পাউন্ড
- post_by Admin
- জুন 14, 2025
-
নিফটি ব্যাঙ্ক
- post_by Admin
- জুন 13, 2025
-
নিফটি ৫০
- post_by Admin
- জুন 13, 2025