রবিবার, 20 জুলাই 2025
Logo
  • রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

দুপুর থেকেই সন্দেহজনক ছিল মনোজিতের গতিবিধি? লালবাজারের স্ক্যানারে আর এক নিরাপত্তারক্ষী, বাজেয়াপ্ত ফোন

কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডে গোয়েন্দা বিভাগের স্ক্যানারে এবার কলেজের আর এক নিরাপত্তারক্ষী। পার্মানেন্ট চাকরি। কাজ করতেন সকালের শিফটে। সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ডিউটি। 

দুপুর থেকেই সন্দেহজনক ছিল মনোজিতের গতিবিধি? লালবাজারের স্ক্যানারে আর এক নিরাপত্তারক্ষী, বাজেয়াপ্ত ফোন

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডে গোয়েন্দা বিভাগের স্ক্যানারে এবার কলেজের আর এক নিরাপত্তারক্ষী। পার্মানেন্ট চাকরি। কাজ করতেন সকালের শিফটে। সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ডিউটি। নাম বরুণ মাহালি। শনিবার সকালে লালবাজারে ডাকা হয় তাঁকে। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন গোয়েন্দা বিভাগের উইমেনস গ্রিভান্স সেলের তদন্তকারী আধিকারিকরা। 
লালবাজার সূত্রের খবর, ঘটনার দিন সকাল থেকে মনোজিতের গতিবিধি কী ছিল? সেটাই জানতে চাওয়া হয়েছে বরুণের কাছে। কখন কলেজ ঢুকেছিল সে? তারপর কার কার সঙ্গে আলাদাভাবে বেশি কথা বলতে দেখা গিয়েছে তাকে? প্রমিত ও জায়িবের সঙ্গে ঘটনার দিন কখন কখন কথা বলতে দেখা গিয়েছিল মনোজিৎকে? সূত্রের খবর, এই প্রশ্নগুলোই নিরাপত্তারক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে। শুধু তাই নয়, অন্যান্য দিনের মতোই আলিপুর কোর্ট থেকে কি সরাসরি ল’কলেজে এসেছিল মনোজিৎ? কলেজে ঢোকার সময় তার পরনে কী পোশাক ছিল? এমন তথ্যও জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে। গোয়েন্দা বিভাগের দাবি, সকালের শিফটের নিরাপত্তারক্ষীর বয়ান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর বয়ানের সঙ্গে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোথাও কোনও অসঙ্গতি রয়েছে কি না, তা যাচাই করছেন গোয়েন্দারা। একইসঙ্গে, নিরাপত্তারক্ষীর মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু মোবাইল বাজেয়াপ্ত কেন? তাহলে কি তরুণীর ‘ভিডিও’ এসেছিল তাঁর মোবাইলেও? কসবা কাণ্ডে ধৃত নিরাপত্তারক্ষী পিনাকীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমন কোনও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়ার পরই কি বরুণের মোবাইল বাজেয়াপ্তের সিদ্ধান্ত? এনিয়ে যদিও মুখ খুলতে চাননি লালবাজারের কোনও পদস্থ কর্তা। এক আধিকারিক বলেন, তদন্তের স্বার্থে কোনও তথ্যই এখন প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ঘটনার দিন ইউনিয়ন রুম ও গার্ড রুমের আশপাশে থাকা প্রত্যেকের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 
লালবাজার সূত্রে জানা যাচ্ছে, ওই নির্যাতিতাকে গার্ড রুমে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁকে জোর করে নগ্ন করার চেষ্টা করে মনোজিৎ। বাঁচার চেষ্টায় আর্তনাদ করতে শুরু করেন তরুণী। রাতের নিরাপত্তারক্ষী (পিনাকী) পুলিসের কাছে দাবি করেছে, তরুণীর চিৎকার শুনে গার্ড রুমে ঢোকার চেষ্টা করেছিল সে। তখনই প্রমিত ও জায়িব এসে তাকে ধমকায়। হুমকি দেয়, ‘কাউকে কিছু জানালে গুলি করে দেব।’ এরপরেই পিনাকীর মোবাইল নিয়ে নেয় দুই অভিযুক্ত। যাতে সে কাউকে ফোন করতে না পারে। তারপরই দু’জন ঢুকে পড়ে গার্ড রুমে। মারতে শুরু করে তরুণীকে। বলে, চিৎকার বন্ধ কর। তারপরও বাধা দিতে থাকেন তরুণী। কিন্তু সেই প্রতিরোধ তিনজনের বিরুদ্ধে যথেষ্ট ছিল না। ভিডিও তোলা শুরু করলে আর একবার মরিয়া চেষ্টা করেন তিনি—মোবাইল কেড়ে নেওয়ার। তখনই বাইরে গিয়ে জানালা থেকে তারা ভিডিওগ্রাফি করে বলে দাবি নিরাপত্তারক্ষীর। জেরায় পিনাকী দাবি করেছে, গণধর্ষণের ঘটনা সম্পর্কে রাতেই নিরাপত্তা এজেন্সিকে ফোন করে জানিয়েছিল সে। এজেন্সির তরফে তাকে বলা হয়, কসবা থানায় জানিয়ে দিতে। কিন্তু সে কেন থানায় গেল না? এই প্রশ্নও উঠছে। একইসঙ্গে সব জানা সত্ত্বেও এজেন্সি কেন থানার সঙ্গে যোগাযোগ করল না? উত্তর খুঁজছে গোয়েন্দা মহল। ধৃত পিনাকী জেরায় জানিয়েছে, সে সন্ধ্যা ৭টায় ডিউটিতে আসে। তার আগে বরুণ ছিল। সে ডিউটি ছাড়ার আগে জানায়, তরুণীর সঙ্গে কিছু একটা চলছে। বারবার তাকে আলাদা নিয়ে গিয়ে জায়িব কিছু বলছে। সেখান থেকেই বরুণ মাহালিকে স্ক্যানারে আনে পুলিস। -নিজস্ব চিত্র

রাশিফল