সোমবার, 28 এপ্রিল 2025
Logo
  • সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

ঐতিহ্যের অক্সফোর্ডে প্রশংসিত মমতার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার-কন্যাশ্রী

লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী— মমতার মস্তিষ্কপ্রসূত এই প্রকল্পগুলিই বাংলার নারী ক্ষমতায়ন ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। এইসব উন্নয়নমূলক প্রকল্প প্রশংসিত হয়েছে ইউনেস্কোর মঞ্চেও।

ঐতিহ্যের অক্সফোর্ডে প্রশংসিত মমতার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার-কন্যাশ্রী

রূপাঞ্জনা দত্ত, লন্ডন: লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী— মমতার মস্তিষ্কপ্রসূত এই প্রকল্পগুলিই বাংলার নারী ক্ষমতায়ন ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। এইসব উন্নয়নমূলক প্রকল্প প্রশংসিত হয়েছে ইউনেস্কোর মঞ্চেও। সেই মুকুটে নয়া পালক ঐতিহ্যবাহী অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি। নাম না করলেও নিজেদের ওয়েবসাইটে অক্সফোর্ডের কেলগ কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার পর নারীশক্তির ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক সুরক্ষায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হাতে নিয়েছেন মমতা। সেই পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের পথ জানতেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তাঁকে। কেলগ কলেজের ফেলো লর্ড করণ বিলিমোরিয়া ‘বর্তমান’কে বলেন, ‘দীর্ঘদিন মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলানো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ থেকে পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের কাহিনি, ভারতের উন্নতির গল্প শোনার জন্য দর্শকরা মুখিয়ে রয়েছেন।’
ভারতীয় সময় রাত ১১টায় কলেজ হাবে শুরু হয় একঘণ্টার অনুষ্ঠান। মমতার উদ্যোগে বাংলার নারীদের সশক্তিকরণ এবং সামাজিক উন্নয়নের গল্প। সঞ্চালক মমতার নাম ঘোষণা করতেই করতালিতে ফেটে পড়ে অডিটরিয়াম হল। লন্ডনস্থিত বাঙালি দর্শকদের সঙ্গে তখন উপস্থিত কেলগ কলেজের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর জোনাথন মিশি এবং এবং ফেলো লর্ড করণ বিলিমোরিয়া। মমতা বলেন, ‘তখন ৯-১০ বছর বয়স। বাবা মারা যান। সেই থেকে আমার জীবন সংগ্রাম শুরু। এখন রাজ্য চালাতে গিয়েও সেই লড়াই অবাহত।’ নারীশক্তির ক্ষমতায়নের প্রসঙ্গ উঠতেই মমতার মুখে উঠে আসে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের কথা, মা-মাটি-মানুষের কথা। বলেন, ‘কোভিডের সময় দেখেছিলাম মা-বোনেরা কীরকম দিশাহারা হয়ে পড়েছিলেন। তখনই সিদ্ধান্ত নিই, এমন কিছু করতে হবে যাতে ওদের হাতে কিছু অর্থের জোগান দেওয়া সম্ভব হয়। যা তারা নিজেদের জন্য ব্যয় করতে পারবে। এই প্রকল্পে সেই উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। তাই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চলবেই। সারাজীবন এই অনুদান পাবেন মা-বোনেরা।’ এরপর বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের সাফল্য নিয়ে বলতে শুরু করেন মমতা। কিন্তু সেই পরিসংখ্যানকে ভুয়ো দাবি করে দর্শকাসনের একাংশ থেকে বিদ্রূপ উড়ে আসে। এমনকী প্ল্যাকার্ড নিয়েও বিক্ষোভ দেখানোর চেষ্টা হয়। কিন্তু ঠান্ডা মাথায় মমতা উত্তর দেন, ‘প্রতিষ্ঠানের সুনামের প্রতি অসম্মান করবেন না দয়া করে। এটা কোনও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান নয়।’ বাকি দর্শকরা প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের বের করে দেওয়ার দাবি জানান। বলতে থাকেন, ‘আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য শুনতে এসেছি। এখানে রাজনীতি করবেন না।’ শেষমেশ ৫-৬ জন বিক্ষোভকারীকে বের করে নিয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গার্ড। কেলগ কলেজের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর জোনাথন মিশি বলেন, ‘যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছিন, তাঁরা বহিরাগত।’ এরপর অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নেই শেষ হয়। লর্ড করণ বিলিমোরিয়া যখন মমতাকে ‘দিদিজি’ বলে সম্বোধন করছেন, গোটা হল উঠে দাঁড়িয়ে তাকে সমর্থন জানায়। করতালির আওয়াজে তখন কান পাতা দায় ঐতিহ্যবাহী অক্সফোর্ডে।