শনিবার, 17 মে 2025
Logo
  • শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

জিন্দালদের পাওয়ার প্ল্যান্টের শিলান্যাস অনুষ্ঠান, কাল শালবনী যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী

জিন্দাল গোষ্ঠীর পাওয়ার প্ল্যান্টের শিলান্যাস করতে মেদিনীপুরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সফর ঘিরে জেলাজুড়ে সাজো সাজো রব। 

জিন্দালদের পাওয়ার প্ল্যান্টের শিলান্যাস অনুষ্ঠান, কাল শালবনী যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: জিন্দাল গোষ্ঠীর পাওয়ার প্ল্যান্টের শিলান্যাস করতে মেদিনীপুরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সফর ঘিরে জেলাজুড়ে সাজো সাজো রব। জানা গিয়েছে, ২১ এপ্রিল শালবনীতে পা রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী। ২২ এপ্রিল গোয়ালতোড়ে একটি সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের উদ্বোধন করবেন। শালবনীতে পাওয়ার প্ল্যান্টের শিলান্যাসেরকথায় আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন এলাকার মানুষ। প্রশাসনের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, ২১ এপ্রিল শালবনীতে পাওয়ার প্ল্যান্টের শিলান্যাসের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই অনুষ্ঠানে জিন্দাল গোষ্ঠীর কর্তারাও থাকবেন। রাতে মেদিনীপুরের সার্কিট হাউসে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। ২২ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী মেদিনীপুরের কলেজ মাঠে সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। সেই অনুষ্ঠান থেকে গোয়ালতোড়ের একটি সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট ছাড়াও আরও একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে প্রস্তুতি তুঙ্গে। দফায় দফায় বৈঠক সারছেন বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকরা। একইসঙ্গে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে চাহিদার কথা মাথায় রেখে শালবনীতে ৮০০ মেগা ওয়াট করে দু’টি পাওয়ার প্ল্যান্ট হচ্ছে। এই প্রকল্পের জন্য জিন্দালরা খরচ করছেন ১৬ হাজার কোটিরও বেশি টাকা। এছাড়াও ওই গোষ্ঠী অনেকগুলো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কও করবে। এই প্রকল্পে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী আসছেন। সমস্ত দিক থেকে আমরা প্রস্তুত। শালবনীর অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন।
প্রসঙ্গত, শালবনীর বাসিন্দারা বহু বছর ধরেই শিল্পের স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু তাঁদের স্বপ্ন অপূরিতই থেকে গিয়েছিল। বেকার যুবক যুবতীরা নিরাশ হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু পাওয়ার প্ল্যান্টের শিলান্যাসের খবর সামনে আসতেই তাঁরা ফের আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন। বাম আমলে জিন্দালদের বৃহত্তম ইস্পাত কারখানা তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল। স্থানীয় যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থান হবে বলে আশাবাদী ছিলেন একাধিক গ্রামের মানুষ। সেই সময় কারখানা তৈরির আশায় স্থানীয় কুলফেনী, গাইঘাট সহ প্রায় ৩০টি গ্রামের মানুষ জমিদান করেছিলেন। সেই সময় জিন্দালরা সরকারি, রায়তি ও পাট্টা জমি মিলিয়ে প্রায় ৪ হাজার ৩০০ একর জমি অধিগ্রহণ করে। ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে শালবনী থেকে মেদিনীপুরে ফিরছিলেনতৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সেই সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ ঘটায় মাওবাদীরা। মাওবাদীদের তাণ্ডবের জেরে কারখানা তৈরি স্থগিত হয়ে যায়। এরপর ২০১৩ সাল নাগাদ কারখানার দাবিতে শুরু হয় লাগাতার আন্দোলন। সেই আন্দোলনের ফলেঅধিগৃহীত জমির সামান্য অংশ নিয়ে তৈরি হয় সিমেন্ট কারখানা। বর্তমানে সেই সিমেন্ট কারখানায় এলাকার কিছু বাসিন্দা কাজও করেন। কিন্তু এলাকার বাসিন্দারা চান, সেখানে পড়েথাকা ৮০ শতাংশ জমিতে বড় কারখানা তৈরি হোক। যাতে সেখানে এলাকার বেকার যুবক যুবতীর কর্মসংস্থান হয়।
শালবনী জমিদাতা কমিটির কোষাধ্যক্ষ আদিত্য মাহাত বলেন, মুখ্যমন্ত্রী আগে এসে সিমেন্ট কারখানার শিলান্যাস করেছিলেন, সেই কারখানা হয়েছে। এবার আশা করছি পাওয়ার প্ল্যান্টও হবে। এলাকার অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে এই প্ল্যান্টে।শালবনী জমিদাতা কমিটির সম্পাদক পরিষ্কার মাহাত বলেন, আশা করছি এই এলাকার মানুষের সুদিন আসছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা আমাদের আন্দোলনের সুফল মিলতে চলেছে।