রবিবার, 13 জুলাই 2025
Logo
  • রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

‘খালি পায়ে আবর্জনা ঠেলে বেরিয়ে এসেছি’, ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হাইফার বাসিন্দার, জেরুজালেমে নিষিদ্ধ বহিরাগতের প্রবেশ

 থেকে থেকেই কান ফাটানো সাইরেনের শব্দ। সেই শব্দের রেশ মিলিয়ে যাওয়ার আগেই আকাশজুড়ে আলোর ঝলকানি। আছড়ে পড়ছে একের পর এক মিসাইল। 

‘খালি পায়ে আবর্জনা ঠেলে বেরিয়ে এসেছি’, ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হাইফার বাসিন্দার, জেরুজালেমে নিষিদ্ধ বহিরাগতের প্রবেশ

তেল আভিভ: থেকে থেকেই কান ফাটানো সাইরেনের শব্দ। সেই শব্দের রেশ মিলিয়ে যাওয়ার আগেই আকাশজুড়ে আলোর ঝলকানি। আছড়ে পড়ছে একের পর এক মিসাইল। গত কয়েক দিনে এটাই ইজরায়েলের বিভিন্ন শহরের ‘স্বাভাবিক চিত্র’। ইরান-ইজরায়েলের সংঘাতে হামলা-পাল্টা হামলা চলছেই। এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের বর্ম ভেদ করে বহু এলাকায় আছড়ে পড়েছে ক্ষেপণাস্ত্র। ইরানি হামলায় বিপর্যস্ত ইজরায়েলের বিভিন্ন শহরে বাহিনীর সঙ্গে একযোগে উদ্ধারকাজে নেমেছে স্বেচ্ছাসেবকরাও। ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন বহুতল থেকে মানুষদের বের করে আনার কাজ করছেন তাঁরা। এমনকী গৃহহীন মানুষদের থাকা-খাওয়ার প্রাথমিক দায়িত্বও নিচ্ছেন তাঁরা। মিসাইল হামলায় উদ্বাস্তু হাইফা শহরের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ‘রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় হঠাৎই সাইরেন বেজে ওঠে। পরিবারের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমি বম্ব শেল্টারে ছুটে যাই। তার কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই বাইরে মিসাইল আছড়ে পড়ে। তৎক্ষণাৎ বম্ব শেল্টারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ধুলো-ধোঁয়ায় ঢেকে যায় গোটা শেল্টার। আতঙ্ক-চিৎকারে কান পাতা দায়। এরপর বাইরে আরও কয়েকটি মিসাইল আছড়ে পড়ার শব্দ পাই।’ পরবর্তীকালে দমকল ও বিপর্যয় বাহিনী এসে তাঁদের উদ্ধার করে। ওই মহিলা আরও জানিয়েছেন,‘সব পাইপ ফেটে গিয়েছিল।  নিকাশির আবর্জনা ও কাদায় ভর্তি ছিল গোটা এলাকা। খালি পায়ে আমরা কোনওমতে সেখান থেকে বের হই। স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবক আমাদের আশ্রয় দেন। এমনকী আমার সন্তানের জন্য বেবিফুডও জোগাড় করে আনেন স্বেচ্ছাসেবকরা।’ 
এদিকে, জেরুজালেমের ছবিটাও প্রায় একই। স্থানীয় বাসিন্দা রিকি স্কলাস নিজের আবাসন ছেড়ে পরিবার সহ আশ্রয় নিয়েছেন ছোটবেলার বাড়িতে।  এই মুহূর্তে ইহুদিদের পবিত্র পশ্চিম দেওয়ালের কাছেই একটি ৭০০ বছরের পুরনো বাড়িতে রয়েছেন তিনি। সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, ‘আমাদের বাড়িতে পর্যাপ্ত বাঙ্কার নেই, ছোটবেলার এই বাড়িতে দেওয়াল মোটা, শক্তিশালী। তাই নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে এটি অনেক বেশি ভরসার।’ একই দাবি আরও অনেক স্থানীয় বাসিন্দারও। রিকি বলেন, ‘জেরুজালেমের ওল্ড সিটি এলাকাকে ঈশ্বর রক্ষা করছেন, তবে এই এলাকার বাইরে বেরলেই ছবিটা ভিন্ন। কার্যত ধ্বংসস্তূপ হয়ে গিয়েছে।’  বুধবার জেরুজালেমে নতুন করে মিসাইল আছড়ে না পড়লেও একাধিকবার সাইরেনের শব্দ শোনা গিয়েছে। শহরজুড়ে জারি রয়েছে শাট ডাউন। বাইরের মানুষের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বন্ধ দোকানপাটও। দর্শনীয় স্থানগুলিতে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। কার্যত শুনশান পবিত্র শহরের রাস্তাগুলি। নিতান্ত বাধ্য হয়ে যে কয়েকজন বাড়ির বাইরে বেরচ্ছেন, তাঁদেরও চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। কখন মিসাইল আছড়ে পড়ে, সেই আতঙ্কই তাড়া করে চলেছে তাঁদের।

রাশিফল