শুক্রবার, 11 জুলাই 2025
Logo
  • শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

তুলসীর মালা পরে বিদ্যালয়ে ‘নো এন্ট্রি’! ফতোয়া জারি করে বিতর্কে প্রধান শিক্ষিকা

এবার গলায় তুলসীর মালা পরে স্কুলে না আসার ‘ফতোয়া’ জারি করে বিতর্কে জড়ালেন প্রধান শিক্ষিকা। ঘটনাটি ঘটেছে বারাসতের নবপল্লি যোগেন্দ্রনাথ বালিকা বিদ্যামন্দিরে

তুলসীর মালা পরে বিদ্যালয়ে ‘নো এন্ট্রি’! ফতোয়া জারি করে বিতর্কে প্রধান শিক্ষিকা

নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: এবার গলায় তুলসীর মালা পরে স্কুলে না আসার ‘ফতোয়া’ জারি করে বিতর্কে জড়ালেন প্রধান শিক্ষিকা। ঘটনাটি ঘটেছে বারাসতের নবপল্লি যোগেন্দ্রনাথ বালিকা বিদ্যামন্দিরে। প্রধান শিক্ষিকা ইন্দ্রানী দত্ত চক্রবর্তী স্কুলের অফিশিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এই বার্তা দিয়েছেন। এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। স্কুলে প্রবেশের সময় কেউ তুলসীর মালা পরে এসেছে কি না, তা দেখার জন্য নিজে দাঁড়িয়ে ‘চেকিং’ করেছেন তিনি। স্বাভাবিকভাবে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বারাসতে। বিতর্কে পড়ে তাঁর বক্তব্যের ‘অপব্যাখ্যা’ করা হয়েছে বলে সাফাই দিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা।
বারাসত শহরে যে কয়েকটি গালর্স স্কুল রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল নবপল্লি যোগেন্দ্রনাথ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। এই স্কুল দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত। প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯৫২ সালে। হঠাৎ করে প্রধান শিক্ষিকার ওই ‘ফতোয়া’কে কেন্দ্র করে চর্চায় চলে এসেছে স্কুলটি। ওই হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় বলা হয়েছে, ‘তুলসীর মালা গলায় পরে কোনও ছাত্রী স্কুলে আসতে পারবে না’। ফতোয়া জারির পর গত দু’দিন স্কুলের বাইরে দাঁড়িয়ে তিনি লক্ষ্য করেছেন, কেউ তুলসীর মালা পরে স্কুলে ঢুকছে কি না।
উল্লেখ্য, তুলসীর মালা সাধারণত তৈরি হয় তুলসী গাছের ডাল বা শিকড় দিয়ে। বৈষ্ণবদের বিশ্বাস, এই মালা গলায় পরে থাকলে মন শান্ত হয়। ইতিবাচক শক্তি বৃদ্ধি করে এবং ভগবান বিষ্ণু ও কৃষ্ণের আশীর্বাদ বয়ে আনে। সাধারণত বৈষ্ণবরাই এই মালা গলায় পরে থাকেন। কেউ কেউ আবার তুলসীর মালা ব্যাগে নিয়েও জপ করেন। এটা ধর্মীয় ভাবাবেগ। তবে, গলায় তুলসীর মালা পরে স্কুলে এলে পড়াশোনার ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হয় না বলেই মত অভিভাবক থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। এই প্রসঙ্গে অভিভাবক অরুণ দত্তগুপ্ত বলেন, ছাত্রীরা তুলসীর মালা পরে স্কুলে এলে অসুবিধা কী? এতে পড়াশোনার কোনও ক্ষতি হয় না। এই ফতোয়ার মাধ্যমে ছাত্রীদের ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছেন প্রধান শিক্ষিকা। মোটেই ঠিক কাজ করেননি তিনি।
এদিকে, প্রধান শিক্ষিকার এই নির্দেশের নিন্দা করেছেন স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা বারাসত পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার চম্পক দাস। বিষয়টি জানার পর প্রধান শিক্ষিকাকে তিনি ফোন করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করেন। চম্পকবাবু বলেন, এই ফতোয়া দিয়ে ভুল করেছেন প্রধান শিক্ষিকা। পাল্টা বিবৃতি দিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে। এনিয়ে প্রধান শিক্ষিকা ইন্দ্রানী দত্ত চক্রবর্তী বলেন, আমার ব্যাখ্যাকে অপব্যাখ্যা করা হয়েছে। স্কুলের দুই ছাত্রীর মধ্যে গণ্ডগোল হওয়ায় তুলসীর মালা ছেঁড়া হয়েছে। সেটা কারও পায়ের নীচে এসে পড়েছে। সেকারণেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনও ধর্মকে আঘাত করতে আমি চাইনি। এ প্রসঙ্গে বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি রাজীব পোদ্দার বলেন, এই ধরনের ফতোয়ার আমরা নিন্দা করছি।

রাশিফল