বুধবার, 21 মে 2025
Logo
  • বুধবার, ২১ মে ২০২৫

খেয়াল-খুশি

বৈশাখ পড়তেই গ্রীষ্ম নিজের স্বরূপ দেখাতে শুরু করেছে। আর কয়েকদিন পরই শুরু হয়ে যাবে গ্রীষ্মাবকাশ। তার আগে নিজেদের খেয়ালের কথা জানাল কোচবিহারের জেনকিন্স স্কুলের পড়ুয়ারা।

খেয়াল-খুশি

বৈশাখ পড়তেই গ্রীষ্ম নিজের স্বরূপ দেখাতে শুরু করেছে। আর কয়েকদিন পরই শুরু হয়ে যাবে গ্রীষ্মাবকাশ। তার আগে নিজেদের খেয়ালের কথা জানাল কোচবিহারের জেনকিন্স স্কুলের পড়ুয়ারা।

গল্প লেখার প্ল্যান

গ্রীষ্মের ছুটিতে আমি বরাবরই গল্পের বই পড়ি। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, সুকুমার রায়, সত্যজিৎ রায়ের লেখা আমার খুব প্রিয়। তাঁদের গল্প, ছড়া আমি পড়েছি। এবার ভাবছি গ্রীষ্মের ছুটিতে বাড়িতে বসে একটা গল্প লিখব। তার প্লট কিছুটা ভাবা রয়েছে। কীভাবে সেই গল্পটিকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেওয়া যায় তা নিয়েও ভাবছি। ছুটি পড়লেই এই কাজে হাত দেব।
—অন্তরদীপ দত্তচৌধুরী, সপ্তম শ্রেণি 

 

মামার বাড়ি ভারী মজা

 এবারের গ্রীষ্মের ছুটিতে বাইরে বেড়াতে যাওয়ার তেমন কোনও পরিকল্পনা এখনও হয়নি। পঞ্চম শ্রেণিতে উঠেছি। স্কুলের ও বাড়ির শিক্ষকের দেওয়া পড়াশোনাগুলি গ্রীষ্মের ছুটিতে বাড়িতে বসেই করতে চাই। তবে মামার বাড়ি যাব। সেখানে গেলে অনেক মজা হয়। সেই সঙ্গে বাবার সঙ্গে সময় কাটাব। অনেক গল্প শোনা যাবে। গ্রীষ্মের দুপুরে বাড়িতে বসে বই পড়তে বা ছবি আঁকতেও আমার বেশ ভালো লাগে।
—সপ্তর্ষি পাল, পঞ্চম শ্রেণি

 

ইতিহাসের সন্ধান

ইতিহাস বইতে যা পড়ি সেসব জায়গায় বেড়াতে যেতে পারলে কতই না ভালো হতো! চোখের সামনে ওসব জায়গা দেখতে পেলে বিষয়টা বুঝতেও সুবিধা হয়। তাই এবারের গ্রীষ্মের ছুটিতে বাড়ির সকলের সঙ্গে কোনও ঐতিহাসিক স্থানে বেড়াতে যাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে। এছাড়া সবক’টি বিষয়ের যে অনুশীলনীগুলি বইয়ে রয়েছে সেগুলি বাড়িতে বসে প্র্যাকটিস করব। এটাই এবারের গ্রীষ্মের ছুটির পরিকল্পনা।
—কৌস্তভ চন্দ, অষ্টম শ্রেণি 

 

সাক্ষী ভিক্টোরিয়া

এবারের গ্রীষ্মের ছুটিতে কলকাতায় বেড়াতে যাব বলে ঠিক হয়েছে। দিদি সেখানে মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়ে। তাই বাবা, মা ও আমি দিদির সঙ্গে দেখা করতে যাব। দিদির সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি কলকাতার বেশকিছু দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখার ইচ্ছে রয়েছে। তারমধ্যে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, চিড়িয়াখানা অন্যতম।
—আবদুর সাকের আলি, সপ্তম শ্রেণি

 

হিমালয়ের কোলে

বাবার চোখের সমস্যা রয়েছে। তাঁর চিকিৎসার পর এবারের গ্রীষ্মের ছুটিতে আমাদের নেপালে যাওয়ার কথা রয়েছে। নেপাল মানেই হিমালয়ের বিশাল বিশাল শৃঙ্গ। তাই সেখানে গেলে কাঠমাণ্ডু সহ বেশ কিছু জায়গা ঘুরে দেখা হবে। পাহাড়ের সবুজ, মেঘলা পরিবেশ আমার খুব প্রিয়।
—অর্ণব রায়, ষষ্ঠ শ্রেণি

 

প্রধান শিক্ষকের কলমে

জেনকিন্স স্কুল, কোচবিহার

 

 রাজার শহর বলে পরিচিত কোচবিহারের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও খেলাধুলোর সঙ্গে একাত্ম হয়ে রয়েছে আমাদের শতাব্দী প্রাচীন জেনকিন্স স্কুল। ঊনবিংশ শতকে যে প্রতিষ্ঠান পথচলা শুরু করেছিল আজ তার শাখাপ্রশাখা বহু দিকে ছড়িয়ে পড়েছে। ব্রিটিশ ভারতীয় গভর্নর জেনারেলের উত্তর-পূর্ব সীমান্তের প্রতিনিধি কর্নেল জেনকিন্সের নাম অনুসারে এই বিদ্যালয়ের নামকরণ। সেই সময় কোচবিহারের মহারাজা ছিলেন নরেন্দ্রনারায়ণ ভুপবাহাদূর। কোচবিহারে ইংরেজি শিক্ষার প্রচলনের জন্য কর্নেল জেনকিন্সের পরামর্শ অনুসারে এই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। ১৮৭০ সালে প্রথম প্রবেশিকা পরীক্ষা হয়েছিল। 
জেনকিন্স স্কুলে বর্তমানে ১ হাজার ৪৫০ জন পড়ুয়া লেখাপড়া করে। এখানে তৃতীয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা হয়। এটি একটি ইন্টিগ্রেটেড গভর্নমেন্ট স্কুল। ২০১৮ সাল থেকে এখানে ইংরেজি মিডিয়াম চালু হয়েছে। ইংরেজি মাধ্যম পঞ্চম থেকে শুরু। এবার প্রথম ব্যাচ মাধ্যমিকে বসেছে। আমাদের শিক্ষকের পদ রয়েছে ৫৭টি। সেখানে বর্তমানে মাত্র ৩১ জন রয়েছেন। এতে দুই মাধ্যমের ক্লাস নিতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। ১৯৯৩ সালে যে বিল্ডিং তৈরি হয়েছিল সেটা ব্যবহার করতে সমস্যা হচ্ছে। পূর্তদপ্তরকে জানানো হয়েছে। ৪২টি সিসি ক্যামেরা রয়েছে স্কুলে। ১৭টি গ্রুপ-ডি কর্মীর পোস্টের মধ্যে মাত্র তিনজন রয়েছেন। 
এসবের মধ্যেও আমাদের স্কুলের ছাত্ররা ধারাবাহিক ভাবে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো ফল করে। খেলাধুলো সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। স্কুলে প্রশস্ত মাঠ, বাগান সবই রয়েছে। কোমলমতি ছাত্রদের গুঞ্জনে তা সর্বদাই পরিপূর্ণ থাকে। শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী সকলেই ছাত্রদের প্রতি যত্নশীল।
—প্রিয়তোষ সরকার, 
প্রধান শিক্ষক

সংকলক: সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়
ছবি: চন্দন দাস