বুধবার, 25 জুন 2025
Logo
  • বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

গুরুদেব

ফিটা মুখে দিতেই সমরেশের রেখার কথা মনে পড়ল। রেখার হাতের তৈরি কফির স্বাদ অবিকল এক। দুধ চিনির পরিমাণ একই হওয়ার কারণে নাকি অন্য কোনও কারণে কফিটা আজ রেখার হাতের মতো মনে হচ্ছে?

গুরুদেব

মহুয়া সমাদ্দার
ফিটা মুখে দিতেই সমরেশের রেখার কথা মনে পড়ল। রেখার হাতের তৈরি কফির স্বাদ অবিকল এক। দুধ চিনির পরিমাণ একই হওয়ার কারণে নাকি অন্য কোনও কারণে কফিটা আজ রেখার হাতের মতো মনে হচ্ছে? নাকি পুরোটাই তাঁর মনের ভুল? হয়তো আজ রিমলির কাছে একাই যাচ্ছেন ওর পছন্দ করা ছেলেকে আশীর্বাদ করতে, সেই কারণে হয়তো রেখাকে মিস করছেন! তাই আজ তাঁর সবকিছুতেই রেখাকে মনে পড়ছে! আর তাই হয়তো কফিটার স্বাদও রেখার হাতের বলে মনে হল? কী জানি! আজকাল আর কোনও কিছুই এক টানা ভাবতে ভালো লাগে না সমরেশের। কিছুক্ষণ একটা চিন্তা আসার পরেই মেঘের মতো সেই চিন্তাটা কোথায় যেন উড়ে পালায়। তার বদলে নতুন কোনও চিন্তা মাথায় এসে বাসা বাঁধে। সেই বাসা যদিও বাবুই পাখির বাসার মতো সুন্দর হয় না। কারণ, চিন্তাকে বেশি সময় দেওয়ার মতো সময় তাঁর নেই। 
সমরেশের হঠাৎ মনে হল, আজ রেখা বেঁচে থাকলে কী করত? তাঁর মতো উদার মন নিয়ে মেনে নিত তাঁদের একমাত্র সন্তানের প্রেম? তাও আবার একটি পাঞ্জাবি ছেলের সঙ্গে প্রেম! ও কি তাঁর মতোই আনন্দিত মনে আজ যেত বিক্রমকে আশীর্বাদ করতে? ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। তবে এই ব্যাপারে সমরেশ টু হান্ড্রেড পার্সেন্ট নিশ্চিত যে, বিক্রমের কথা জানার পরই রেখা তার গুরুদেবের নতুন শাগরেদের কাছে ছুটে যেত। হয়তো বা রিমলি কলকাতা থাকার সময়ে নতুন গুরুদেবকে বগলদাবা করেই বাড়ি নিয়ে চলে আসত। তারপর রিমলিকে দেখিয়ে বিক্রমের সঙ্গে সে আদৌ সুখী হবে কি না সেটা জানত। যদি জুনিয়র গুরুদেব বলতেন যে, রিমলি আর বিক্রম হল মেড ফর ইচ আদার, তাহলে সে নিজের হাতে সেই বিয়ের ব্যবস্থা করত। কিন্তু যদি বাই চান্স গুরুদেবের মনে হতো যে, এই বিয়েটা রিমলির জন্য সুখকর হবে না! তাহলে দিল্লি গিয়ে বিক্রমের সঙ্গে দেখা করে, প্রয়োজনে বিক্রমের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে এই বিয়ের শ্রাদ্ধশান্তি করে তবে সে শান্ত হতো। 
রেখার কাছে ওর গুরুদেব হলেন গিয়ে এক বিষম বস্তু। সে যে তার গুরুদেবকে এতটা কেন বিশ্বাস করত, কেন যে এতটা মান্য করত, তা সত্যিই বুঝতে পারেন না সমরেশ। কিছু কিছু কথা বাদে সবই তো বলেছিলেন ভুলভাল। বিয়ের পরপরই স্ত্রীর তাড়নায় সমরেশকেও যেতে হয়েছিল ওর গুরুদেবের কাছে। গুরুদেবকে প্রণাম করার পরে তিনি স্মিত হেসে রেখার দিকে চেয়ে বলেছিলেন, ‘ধর্মে অবিশ্বাসী এই ছোঁড়াকে বিয়ে করলি কেন রে মা?’ 
কথাটা সমরেশের মোটেও ভালো লাগেনি। তিনি রেখার দিকে কটমট করে তাকাতেই দেখতে পেলেন রেখা মাথা নিচু করে আঁচলের কোনা আঙুলে ঘোরাচ্ছে। যেন কিছুই ঘটেনি— এমনই তার ভাব। 
দুই এক মুহূর্ত পরে তিনি আবারও বলেছিলেন, ‘নাস্তিক হলেও ছেলেটি মানুষ হিসেবে মন্দ নয়। তবে ওকে পাখি থেকে দূরে রাখিস। পাখির কারণেই ষাট বছরের আগেই ও এই পৃথিবীর মায়া কাটাবে।’ 
‘পাখি!’— শিউরে উঠেছিল রেখা। 
তারপরই সে গুরুদেবের পায়ে মাথা খুঁটতে খুঁটতে বলেছিল, ‘তাহলে কী হবে গুরুদেব? একটা বিধান দিন যাতে এই বিপদ থেকে ওঁকে বাঁচানো যায়।’ 
সমরেশের মাথায় আগুন জ্বলছিল। যতসব বুজরুকের দল। মেয়েদের সরলতার সুযোগ নিয়ে তাদের এক্সপ্লয়েট করাই এদের একমাত্র উদ্দেশ্য। ইচ্ছে করছিল রেখাকে এক টানে সেখান থেকে নিয়ে আসেন। কিন্তু সেসব কিছুই করতে পারেননি তিনি। শত হলেও নতুন বউ। নতুন বউকে চটানো মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। তাই তিনি দাঁতে দাঁত চেপে সেখানে দাঁড়িয়েছিলেন। 
রেখার কথায় গুরুদেব অদ্ভুতভাবে হেসে বলেছিলেন, ‘ধুর পাগলি! তাই আবার হয় নাকি রে! মৃত্যুকে বশ করার শক্তি আমার জানা আছে নাকি!’ 
সমরেশ স্পষ্ট বুঝলেন, গুরুদেবের বলা কথাটা রেখা বিশ্বাসই করল না। সে মাথা তুলে গুরুদেবের চোখে চোখ রেখে বলেছিল, ‘অন্যরা যাই ভাবুক না কেন, আমি জানি প্রভু, আপনি মৃত্যুকেও বশ করতে পারেন। ’
এবারে গুরুদেব হো হো অট্টহাস্য করে উঠলেন। তারপরে ছেলেভোলানো ভঙ্গিতে নিচু হয়ে রেখার মাথায় হাত রেখে বললেন, ‘না রে মা। সেই বিদ্যা আমার সত্যিই জানা নেই। তবে আমি তো বলেই দিলাম কী কারণে ওর মৃত্যু আসবে। সেই বিষয়ে সাবধান হলে মৃত্যু আটকানো গেলেও যেতে পারে হয়তো!’
রেখা হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলল, ‘ও না থাকলে আমি কাকে নিয়ে থাকব গুরুদেব? আমি যে ওকে ছেড়ে বাঁচব না!’ 
এবারে গুরুদেব সমরেশকে অবাক করে দিয়ে বলেছিলেন, ‘তা নিয়ে তোর না ভাবলেও চলবে রে মা।’ 
‘তার মানে?’— চমকে উঠেছিল রেখা। 
আবারও গুরুদেব অদ্ভুত হাসি মুখে ছড়িয়ে বললেন, ‘তুই শাখা সিঁদুর নিয়ে অনেক আগেই এই পৃথিবী ছাড়বি রে মা। ওর মৃত্যুশোক তুই বেঁচে থাকতে পাবি না।’
রেখার ওপরে রাগে, দুঃখে পাগল পাগল লাগছিল নিজেকে। রেখার মতো শিক্ষিত মেয়ে কীভাবে এমন গুরুদেব পাগল হয়!— কিছুতেই বুঝতে পারছিলেন না সমরেশ। তখনকার যুগে সম্বন্ধ করা বিয়ের আগে ছেলেমেয়েরা প্রেম করার বা ফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলার সুযোগ পেত না। নইলে বিয়ের আগেই তিনি জানতে পারতেন যে, রেখার এই অদ্ভুত গুরুদেব ভজনের কথা। আগে জানলে হয়তো এই বিয়েটাই নাকচ করে দিতেন তিনি। কিন্তু রেখার এই গুরু ভক্তির কথা যখন জানলেন, তখন গঙ্গার জল বঙ্গোপসাগরে মিলে গিয়েছে। সেখান থেকে আর তাকে ফেরানো যায় না। 
গুরুদেবের বলা কথার একবর্ণও বিশ্বাস করেননি সমরেশ। বাড়ি ফিরে রাতে রেখা যখন বলে উঠেছিল, ‘এই শুনছ?’ 
সমরেশ অস্ফুটে ‘হুম’ করতেই সে আবারও বলেছিল, ‘তুমি কিন্তু খবরদার পাখির সঙ্গে কোনও সংযোগ রাখবে না।’
—মানে?
—মানে আবার কী? দেখলে না, গুরুদেব তোমায় কী বললেন? 
সমরেশ নিজের বালিশে মাথা রেখে বলেছিলেন, ‘গুরুদেবেরা অমন অনেক কিছুই বলে থাকেন। দশটার মধ্যে এক-আধটা তো এমনিতেই মিলে যায়। আর সাধারণ মানুষ ভাবতে শুরু করেন যে, তাঁদের গুরুদেবের দারুণ ঐশ্বরিক ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু ওসব কিস্যু না। সবটা বুজরুকি।’ 
বিস্ময়ে প্রথমে কথা বলতে ভুলে গিয়েছিল রেখা। একটু ধাতস্থ হয়ে সে বলেছিল, ‘তুমি যে ঠাকুর দেবতায় এত অবিশ্বাসী কই ছবি পিসি বলেনি তো কখনও?’ 
থমকে গিয়েছিলেন সমরেশ। তিনি কয়েক মুহূর্ত থেমে বলেছিলেন, ‘ঠাকুরের প্রতি যথেষ্ট বিশ্বাস রয়েছে আমার। কিন্তু এইসব মানুষ-বুজরুকের প্রতি...।’
—তুমি থাম। আর একটা কথাও বোলো না প্লিজ! 
কেঁদে ফেলেছিল রেখা। কাঁদতে কাঁদতেই সে বলেছিল, ‘আমার গুরুদেব মানুষ নন, সাক্ষাৎ ভগবান! তাঁর সম্পর্কে অকথা-কুকথা আর বোলো না গো! উনি যে অন্তর্যামী!’  
সমরেশ নতুন বউকে আর চটাতে চাননি। চুপ করে গিয়েছিলেন। রেখার গুরুদেব রিমলি হওয়ার মাস দুয়েক আগেই ইহলোক ত্যাগ করেছিলেন। তারপর রেখার আশ্রমে যাওয়া একটু কমলেও পুরোপুরি কমেনি। তবে তারপর থেকে গুরুদেব নিয়ে বিশেষ কথা বলত না সে। কিন্তু রেখার গুরুদেব যে সব ভুল বলেছেন, সেটা প্রমাণের জন্যে সমরেশ কেমন যেন মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। সেই কারণেই তিনি চাকরির সঙ্গে সঙ্গে পাখির ব্যবসাও শুরু করলেন। বাড়ির উঠোনে পাখিদের জন্যে নতুন ঘর বানালেন। সেখানে হরেক রকমের পাখি আনলেন। সেই ব্যবসা থেকে উপার্জনও হচ্ছিল মোটামুটি। পরে রিমলি একটু বড় হতে অফিস সামলে, রিমলিকে পড়িয়ে ব্যবসা চালাতে আর পারেননি। কিন্তু তিনি যা চেয়েছিলেন, সেটা নিশ্চিতভাবেই পেরেছিলেন। তিনি রেখার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন যে, গুরুদেবের বলা কথা আদৌ ঠিক নয়। সত্যি নয়। 
বছর পঞ্চাশ বয়সেই যখন রেখা ড্যাংড্যাং করে স্বর্গে চলে গিয়েছিল, তখনও তাঁর বিশ্বাস এতটুকুও টাল খায়নি। রেখা নিজের শরীরের প্রতি এতটুকুও সচেতন ছিল না। গুরুদেবের জন্মতিথি, তিরোধান দিবস থেকে শুরু করে সপ্তাহে এক দু’দিন উপোস করেই কাটাত। রোজ সকাল দশটা-এগারোটা পর্যন্ত খালি পেটে রান্নাঘরে কাজ সেরে, স্নান করে, ঠাকুর আর গুরুদেবকে ফুল, জল, মিষ্টি দিয়ে তবে 
খাবার দাঁতে কাটত। তাই তার এমন আচমকা মৃত্যু আসবে, ব্যাপারটা অস্বাভাবিক কিছু ছিল না। এতে রেখার গুরুদেবের বিশেষ ক্ষমতা প্রমাণিত হয় 
না মোটেই। 
....
জানলার ওপাশে অস্তমিত সূর্যের আলোয় মেঘেরা লালচে রং ধারণ করছে। এই সময়কেই গোধূলি বলে। এই সময়ের আকাশের রূপ পুরোপুরি পাল্টে যায়। আর বৃষ্টিহীন আগস্ট মাসের আকাশ হলে তো কথাই নেই! 
সমরেশের আজই দিল্লিতে যাওয়ার আরও একটা কারণ রয়েছে। কাল তাঁর জন্মদিন। প্রত্যেক বছর এই বিশেষ দিনে তাঁর মেয়ে কলকাতায় চলে আসে। কিন্তু এবারে এক ঢিলে দুই পাখি মারার জন্যে তাঁরই দিল্লি যাওয়া উচিত বলে মনে হয়েছে সমরেশের। রেখার কথা, গুরুদেবের কথা আজ তাই আরও বেশি করে মনে পড়ছে। আজ রেখা বেঁচে থাকলে তিনি চিৎকার করে বলতেন, দেখ রেখা। দেখ। তোমার গুরুদেব যে সবই ভুলভাল বলেছিলেন, সেটা একবার নিজের চোখেই দেখ। উনি বলেছিলেন ষাট বছর পর্যন্ত আমি বেঁচেই থাকব না। কিন্তু এই দেখ আমি দিব্যি বেঁচে আছি। আমি মরিনি। মৃত্যুর হিসেব রাখেন স্বয়ং ঈশ্বর। সেই হিসেব একজন মানুষের পক্ষে জানা বা বোঝা কখনওই সম্ভব নয়। তোমার গুরুদেব ভুল। ভুল। ভুল। 
সমরেশ যখন এইসব কথা ভাবছেন, ঠিক তখনই প্লেনের মধ্যে একটা গোলমাল শোনা গেল। সামনে থেকে কে যেন একজন ‘বার্ড স্ট্রাইক’ কথাটা বলল। 
—বার্ড স্ট্রাইক! একটা হিম শীতল স্রোত সমরেশের মেরুদণ্ড বেয়ে নীচে নেমে আসছে। আর কয়েক মিনিটের মধ্যেই ল্যান্ড করবে তাঁদের প্লেন। রিমলি আর ওর হবু বর তাঁর জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে দিল্লি এয়ারপোর্টে। গতকালই রিমলি তাঁকে জানিয়েছিল যে, দু’দিন সে অফিস থেকে ছুটি নিয়েছে। তিনি গেলে বেশ একচোট হইচই করা যাবে। জামাইকে আশীর্বাদ করার জন্য কলকাতায় তাঁদের পরিচিত গয়নার দোকান থেকে একটা আংটিও গড়িয়ে নিয়ে এসেছেন তিনি। জামাইয়ের ছবি ফোনে দেখলেও সামনাসামনি এই প্রথমবার দেখবেন ওকে। সেই কারণে তাঁর উত্তেজনা তুঙ্গে। রিমলির মুখে তিনি এটাও শুনেছেন যে বিক্রম নাকি রিমলির কাছ থেকে বাংলা ভাষা অনেকটাই শিখে নিয়েছে। রিমলি এটাও বলছিল যে, সমরেশ প্লেন থেকে নামলে তাঁকে বাংলা ভাষায় স্বাগত জানাবে বিক্রম। কথাটা শুনে বেশ আনন্দ হয়েছিল তাঁর। রিমলির জন্যে গর্বও হয়েছিল খুব। যাক, তাঁর মেয়ে একজনকে হলেও বাংলা ভাষা শেখাতে তো পেরেছে! একজন দিল্লিবাসী পাঞ্জাবির মুখে বাংলা ভাষা শুনতে পাওয়াটা খুব কম কথা নয়। আর সেই বাংলা শুনতেও বেশ আমোদ লাগে। কিন্তু তা কী আর ঘটবে? আর কি তিনি দিল্লি এয়ারপোর্টে নামতে পারবেন? আর কি রিমলির মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে দিতে দিতে বলতে পারবেন— ‘দেখিস মা! জামাই পেয়ে এই বুড়ো বাপটার কথা আবার ভুলে যাস না যেন!’ এমন কথা শুনে রিমলির হেসে গড়িয়ে পড়া মুখটা কি আর দেখতে পাবেন তিনি!  আর কি তাঁর একমাত্র মেয়ের পছন্দ করা ছেলেকে দেখার, আশীর্বাদ করার, বুকে জড়িয়ে ধরার সৌভাগ্য হবে? জানেন না সমরেশ। পাখির সঙ্গে ধাক্কা লাগায় প্লেনের ইঞ্জিনে বিকট শব্দ হচ্ছে। যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক। তিনি বিমূঢ়ের মতো বসে রইলেন।  
আজ তাঁর উনষাট বছরের শেষ দিন। ষাট বছর পূর্ণ হতে এখনও কয়েক ঘণ্টা বাকি আছে। তাহলে কি গুরুদেব বুজরুক নন! তিনি কি সত্যিই ছিলেন ভবিষ্যৎদ্রষ্টা! এই জন্মে সত্যি সত্যিই তাঁর আর ষাট বছর বয়স পূর্ণ হবে না! ভয়ে, আতঙ্কে, উত্তেজনায় দু’চোখ বন্ধ করে ফেললেন সমরেশ।