শুক্রবার, 20 জুন 2025
Logo
  • শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

ইউনেস্কোর হেরিটেজ কোর এরিয়ার মধ্যে ঐতিহ্যবাহী নতুন বাড়ির জরাজীর্ণ অবস্থা

ইউনেস্কোর হেরিটেজ কোর এরিয়ার অন্তর্গত শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী নতুন বাড়ির অবস্থা একেবারেই জরাজীর্ণ। মাটির তৈরি বাড়িগুলি শতাব্দী প্রাচীন।

ইউনেস্কোর হেরিটেজ কোর এরিয়ার মধ্যে ঐতিহ্যবাহী নতুন বাড়ির জরাজীর্ণ অবস্থা

সংবাদদাতা, বোলপুর: ইউনেস্কোর হেরিটেজ কোর এরিয়ার অন্তর্গত শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী নতুন বাড়ির অবস্থা একেবারেই জরাজীর্ণ। মাটির তৈরি বাড়িগুলি শতাব্দী প্রাচীন। মূলত, খড়ের চালগুলি প্রাকৃতিকভাবে পচে যাওয়ার কারণেই নতুন বাড়ির অত্যন্ত করুণ অবস্থা। শীঘ্রই চাল ছাওয়ার‌ কাজ না হলে মাটির দেওয়াল গুলিও বৃষ্টির জলে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বর্তমানে এই তিনটি বাড়ি পাঠভবনের রক্ষণাবেক্ষণে রয়েছে। তারাও বাড়িটি সংরক্ষণের জন্য কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখেছে বলে বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে। এমতাবস্থায়, জীর্ণ পুরাতন অবস্থা কাটিয়ে কবে আবার নতুন রূপে নতুন বাড়িকে দেখা যায় সেদিকেই তাকিয়ে রবীন্দ্র অনুরাগী মানুষজন। 
বিশ্বভারতীর ইতিহাস থেকে জানা যায়, শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠা লগ্নে ১৯০২ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ইচ্ছায় নতুন বাড়ি তৈরি হয়। পরপর তিনটি ঘরের চালের মাটির বাড়ি, এটিই নতুন বাড়ির বৈশিষ্ট্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেখানে বসবাসের আগেই রবীন্দ্রনাথের স্ত্রী মৃণালিনী দেবীর মৃত্যু হয়। এরপর কবিগুরুর সন্তানদের লালন পালন করার জন্য মৃণালিনী দেবীর পিসি রাজলক্ষ্মী দেবী এগিয়ে আসেন। এই নতুন বাড়িতেই তখন তাঁরা থাকতেন। এমনকী, পরবর্তীকালে শান্তিনিকেতনে এসে মহাত্মা গান্ধীর দক্ষিণ আফ্রিকার ফিনিক্স স্কুলের পড়ুয়ারাও এই ঐতিহ্যবাহী বাড়িতে বসবাস করেছিলেন। এছাড়া, শান্তিনিকেতনের আলাপনী মহিলা সমিতির কার্যালয় হিসেবেও বাড়িতে দীর্ঘদিন ব্যবহৃত হয়েছে। ফলে, বিশ্বভারতীর ইতিহাসে এই বাড়িটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর সমিতির সম্পাদককে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁদের কার্যালয় নতুন বাড়ি খালি করার নির্দেশ দেন। এরপর ২০২১ সালের পয়লা জানুয়ারি নতুন বাড়ি নিজেদের দখলে নেয় বিশ্বভারতী। করোনা পর্বে নতুন বাড়িকে ঢেলে সাজানো হয়। কিন্তু তারপর থেকেই রক্ষণাবেক্ষণ অভাবে ও প্রাকৃতিক কারণে নতুন বাড়ির খড়ের চাল নষ্ট হতে শুরু করে। এমনকী, বাড়িটির খড় পচে বাঁশের বাতাগুলি বেরিয়ে কঙ্কালসার রূপ ধারণ করেছে। যা দেখে অত্যন্ত হতাশ বিশ্বভারতীর প্রাক্তনীরা।
বর্তমানে শান্তিনিকেতন ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অন্তর্গত। তাই আশ্রমকে মৌলিক অবস্থায় রাখতে কর্তৃপক্ষ কার্যত বাধ্য। তাই না হলে ইউনেস্কোর নিয়ম-নীতি ভঙ্গ করার অভিযোগ ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।‌ তবে নতুন বাড়ি খুব দ্রুত সংস্কার হবে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ। তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই পাঠভবন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। পরবর্তী বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর খুব তাড়াতাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের কাজ শুরু হবে।