শনিবার, 14 জুন 2025
Logo
  • শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫

কঠিন পরীক্ষায় পাকিস্তান

এতদিন ধরে ভারতের ধৈর্যের পরীক্ষা নিয়েছে পাকিস্তান। সেই পরীক্ষায় ভারত উত্তীর্ণ হয়েছে সসম্মানে এবং বীরের মতোই। পর্যুদস্ত পাকিস্তানকে পরিষ্কার ভাষায় হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অন্তত ভারতকে পরমাণু অস্ত্র নামক জুজু দেখিয়ে লাভ নেই। 

কঠিন পরীক্ষায় পাকিস্তান

এতদিন ধরে ভারতের ধৈর্যের পরীক্ষা নিয়েছে পাকিস্তান। সেই পরীক্ষায় ভারত উত্তীর্ণ হয়েছে সসম্মানে এবং বীরের মতোই। পর্যুদস্ত পাকিস্তানকে পরিষ্কার ভাষায় হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অন্তত ভারতকে পরমাণু অস্ত্র নামক জুজু দেখিয়ে লাভ নেই। ব্ল্যাকমেইলের বর্বরতা ভারত আর একটুও বরদাস্ত করবে না। ধনেপ্রাণে বাঁচতে হলে সন্ত্রাসের রাস্তা পাকিস্তানকে ছাড়তেই হবে। সন্ত্রাসের আঁতুরঘরকে এবার নামতে হবে সন্ত্রাস-বিরোধী যুদ্ধে। কিন্তু সে কি সম্ভব? পাকিস্তানের তরফে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই বা সভ্যতা মানবতার সরণিতে হাঁটা আর সোনার পাথর বাটি চাওয়া এক নয় কি? তাই তো পাকিস্তানের কাতর আর্জি মেনে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও ভারত অন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এখনই খারিজ করতে রাজি হয়নি। প্রধানমন্ত্রী পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিতই থাকছে। বন্ধ থাকবে তাদের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যও। এই দুটি এখনই স্বাভাবিক হওয়ার কোনও সুযোগ নেই। 
পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে ভারতের ধৈর্যের পরীক্ষা নিয়েছে। এবার ভারত নেবে পাকিস্তানের সততার পরীক্ষা। যে-কথা তারা দিয়েছে তার বিন্দুমাত্র খেলাপ হলে ভারত তাদের আর সহ্য করবে না। রেয়াত করা হবে না কোনও আন্তর্জাতিক দাদার হুমকি হুঁশিয়ারি এমনকী উমেদারিও। পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের পর নীরবতা ভেঙে প্রধানমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘এমন মারব ওরা (পাকিস্তান) কল্পনাও করতে পারছে না!’ কথা রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর গুঁতোয় ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা হয়েছিল পাকিস্তানের। মিসাইল আর ড্রোনের লড়াইয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গোল খেয়েছে পাক সেনা। বিপুল লোকসানের পর তারা হাতে পায়ে ধরাধরি করছিল মুরুব্বিদের, বিশেষ করে আমেরিকা এবং চীনের। এমনকী, শেষমেশ যুদ্ধবিরতির জন্য কাকুতি-মিনতি করেছিল ভারতের কাছেও। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘সন্ত্রাস এবং আলোচনা একইসঙ্গে চলতে পারে না। রক্ত এবং জল একইসঙ্গে বইতে পারে না।’ অর্থাৎ পাকিস্তানকে প্রমাণ দিতে হবে যে তারা সত্যি সত্যি শুধরেছে! যদি তারা না শোধরায়, নরেন্দ্র মোদির সাফ কথা, ‘প্রয়োজনে ফের মারব।’ প্রধানমন্ত্রী যে শুধু কথার কথাই বলেননি কিংবা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেই ভারত নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছে এমন নয়, মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী আচমকা পৌঁছে যান পাঞ্জাবের আদমপুর বায়ুসেনা ঘাঁটিতে। সেখানে তিনি জওয়ানদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের অভিনন্দন জানান এবং সাহস জোগান। একইসঙ্গে জঙ্গি বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই জারি আছে কাশ্মীরসহ দেশের সর্বত্র। মঙ্গলবার সোপিয়ানে সেনা-জঙ্গি গুলির লড়াইয়ে নিহত হয়েছে তিন জঙ্গি। সাউথ ব্লকে তিন বাহিনীর কর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। প্রত্যাঘাত-পরবর্তী পরিস্থিতি এবং ভারতের আশু কর্তব্য নিয়ে সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সব মিলিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মনোবল এখন তুঙ্গে। 
হায়, পাকিস্তানকে এ কোন কঠিন পরীক্ষায় ফেলল ভারত? যে-দেশ যুদ্ধবিরতি চেয়ে নিয়েছে—কাকুতি মিনতি করে, ভারতের পায়ে ধরে, আন্তর্জাতিক মুরুব্বি ধরে, সেই দেশই কিন্তু যুদ্ধবিরতির সুযোগ নিয়ে ভারতের উপর মুহূর্তের মধ্যেই হামলা চালাবার কুরুচি দেখিয়েছিল! তাই আশঙ্কা রয়েই যায়, জেহাদি মনের পাকিস্তান এত সহজে শোধরাবে না। তার বড় কারণ পাকিস্তান জানে না, সে দেশের আসল মাতব্বর কে? ‘নির্বাচিত’ সরকার, নাকি সেনাবাহিনী, কিংবা কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। সভ্যতার পথে একজন এগতে গেলে আর একজন তার লেজ টেনে ধরবেই। ইমানধর্মবিস্মৃত, অসভ্য, মানবতা-বিরোধী সঙ্গীদের নিয়ে চলতে গেলে এটাই যে স্বাভাবিক। যুদ্ধ করতে এই মুহূর্তে বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক ঋণ নিতে হয়েছে পাকিস্তানকে। জেহাদি মনের পাকিস্তান দেশ গঠনের পরিবর্তে, পাকিস্তানবাসীর নাগরিক চাহিদা পূরণের পরিবর্তে, মাতৃভূমিকে আধুনিক সুস্থ স্বাভাবিক হিসেবে গড়ে তোলার পরিবর্তে, অনেক বেশি মনোনিবেশ করতে পারে আরও আরও আরও সমরাস্ত্র কেনার উপর। পড়শি দেশটি এই নীতি নিয়ে চলতে থাকলে তাদের অর্থনীতির কফিনে শেষ পেরেকটি যে তারা নিজেদের হাতেই এবং অতিদ্রুত পুঁতে ফেলবে তা এখনই হলফ করে বলে দেওয়া যায়।