মঙ্গলবার, 08 জুলাই 2025
Logo
  • মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫

সন্ন্যাসী

প্রশ্ন—বৈরাগ্য সাধন কেমন করে করতে হয়?
উত্তর—স্ত্রী স্বামীকে বললে, “আমার দাদা সন্ন্যাসী হবে, আজ ক’দিন ধরে তার কিছু কিছু যোগাড় করছে।” স্বামী বললেন, “দূর ক্ষেপী, সে কখনও সন্ন্যাসী হতে পারবে না, যোগাড় টোগাড় করে সন্ন্যাসী হওয়া যায় না।” স্ত্রী বললে, “তবে কি করে হওয়া যায়?” 

সন্ন্যাসী

প্রশ্ন—বৈরাগ্য সাধন কেমন করে করতে হয়?
উত্তর—স্ত্রী স্বামীকে বললে, “আমার দাদা সন্ন্যাসী হবে, আজ ক’দিন ধরে তার কিছু কিছু যোগাড় করছে।” স্বামী বললেন, “দূর ক্ষেপী, সে কখনও সন্ন্যাসী হতে পারবে না, যোগাড় টোগাড় করে সন্ন্যাসী হওয়া যায় না।” স্ত্রী বললে, “তবে কি করে হওয়া যায়?” স্বামী বললেন, “দেখবি ক্ষেপী কি করে হয়?” স্ত্রীকে মা বলে কৌপীন পোরে তৎক্ষণাৎ বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন। আর ফিরলেন না।
প্রশ্ন—বৈরাগ্য কয় প্রকার?
উত্তর—সাধারণতঃ দুই প্রকার, তীব্র ও মেদাটে। তীব্র বৈরাগ্য রাতারাতি খাল কেটে পুকুরে জল আনার মতন। মেদাটে বৈরাগ্য হচ্ছে হবে, কবে হবে তার ঠিক নেই।
প্রশ্ন—সংসারাসক্তি কি প্রকার?
উত্তর—সংসারাসক্তি লোক ভাঁড়সে নেউলের মতন। যারা নেউল পোষে, তারা দ্যালের গায়ে একটা ভাঁড় বা কলসী টাঙিয়ে রাখে এবং নেউলের গলায় একগাছা দড়ি বেঁধে দড়ির অপর দিকে একখানা ইট বেঁধে রাখে। নেউল ভাঁড় থেকে এদিক ওদিক বেড়াতে থাকে, কিন্তু তাড়া পেলে বা ভয় পেলে দৌড়ে গিয়ে উপরে ভাঁড়ের ভিতর চলে যায়, কিন্তু বেশীক্ষণ সেখানে থাকতে পারে না। তার গলায় দড়িতে যে ইট বাঁধা থাকে, তারই ভারে সে নেবে পড়ে। সংসারী লোকও সেই রকম দুঃখ-কষ্টে পড়ে অনেক সময় ঊর্দ্ধে (অর্থাৎ ঈশ্বরেতে) আশ্রয় নেয়, কিন্তু বেশীক্ষণ সেভাবে থাকতে পারে না, সংসার রূপ ইটের ভারে আবার নেবে পড়ে ও সংসারে মিশে যায়।
প্রশ্ন—ঈশ্বর কোথা আছেন, তাঁকে কিরূপে পাওয়া যায়?
উত্তর—সমুদ্রে রত্ন আছে যত্ন চাই। সংসারে ঈশ্বর আছেন সাধনা চাই।
প্রশ্ন—ঈশ্বর এ দেহে কিভাবে থাকেন?
উত্তর—তিনি পিচকারীর কাঠির মতো আল্গা থাকেন।
ভগবানের কথায় যাঁর গা রোমাঞ্চ হয়ে ওঠে ও চোখে জল পড়ে, সেইটী তাঁর শেষ জন্ম বুঝতে হবে।
ঘুড়ি লক্ষে একটা কাটে, হেসে দাও মা হাত তালি। যত লোক সাধনা করে সবাই সিদ্ধ হয় না।
প্রেম-ভক্তি কাকে বলে?
প্রেম-ভক্তিতে সাধক ঈশ্বরকে খুব আত্মীয়ের ন্যায় বোধ করেন, যেমন গোপীগণ শ্রীকৃষ্ণকে গোপীনাথ বলতো, জগন্নাথ বলতো না।
ধর্ম কথা অনেক শোনা গেল, কিন্তু কিছুই হ’ল না কেন? সাঁকোর জল একদিক দিয়ে এল আর একদিক দিয়ে বেরিয়ে গেল। এক কান দিয়ে শুনছে, আর এক কান দিয়ে বেরিয়ে গেছে।
সাত্ত্বিক, রাজসিক ও তামসিক পূজা কিরূপ?
একজন খুব আন্তরিক ভক্তির সঙ্গে পূজো করে। আর একজন পূজো উপলক্ষে বাড়ি ঘর খুব সাজায় ও নাচ গান ফলারের খুব ঘটা করে। আর একজন পাঁঠা কাটে, মদ মাংস ও নাচ গানে মত্ত হয়। প্রথম জনের পূজো সাত্ত্বিক, দ্বিতীয় জনের রাজসিক ও শেষ জনের তামসিক।
সুরেশ চন্দ্র দত্তের ‘শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেবের উপদেশ’ থেকে

রাশিফল