বৃহস্পতিবার, 17 জুলাই 2025
Logo
  • বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

প্রভু

“হরির সঙ্গে যুক্ত হওয়াই যোগ।” হে যোগী ভর্তৃ! মনে গুরুর শব্দকে স্থাপিত করাই আমার ভূষণ ও আমি ক্ষমার পোষাক পরিধান করি। যা কিছু প্রভু করেন তাই ভাল বলে মানি, যার ফলে সহজ যোগের নিধি লাভ করি। হে যুক্তকারী বাবা ভর্তৃহরি জী! পরমতত্ত্ব হরিতে যুক্ত হওয়াই যোগ। 

প্রভু

“হরির সঙ্গে যুক্ত হওয়াই যোগ।” হে যোগী ভর্তৃ! মনে গুরুর শব্দকে স্থাপিত করাই আমার ভূষণ ও আমি ক্ষমার পোষাক পরিধান করি। যা কিছু প্রভু করেন তাই ভাল বলে মানি, যার ফলে সহজ যোগের নিধি লাভ করি। হে যুক্তকারী বাবা ভর্তৃহরি জী! পরমতত্ত্ব হরিতে যুক্ত হওয়াই যোগ। মন মায়া রহিত নিরঞ্জনের অমৃততুল্য নাম লাভ করেছে ও দেহ জ্ঞানের রস ভোগ করছে। বৃথা কল্পনাদি ও বাদ-বিবাদ ছেড়ে দিয়ে শিবনগরীতে (আত্মিক জগতের) আসনে বসেছি। অন্তরের শব্দধ্বনি  সেখানে সর্বদা শোভা পায়। দিন-রাত শব্দের নাদ ধ্বনিত হতে থাকে। আমার প্রভুর যুক্তি-বিচার করাই আমার জ্ঞান, বৃদ্ধি ও যষ্টিদণ্ড। সর্বত্র প্রভুর ব্যাপ্তিকে অনুভব করাই বিভূতি ও হরি কীর্তি গায়ন করাই স্থায়ী পূজা স্বরূপ। সেই সঙ্গে মায়ার নাগালের বাইরে থাকা ও গুরুর সম্মুখে থাকা আমার পন্থা। বহু বর্ণ ও রূপের মধ্যে সর্বব্যাপী জ্যোতিকে চিনে নেওয়া আমার বৈরাগ্য। ভর্তৃহরি গুরু নানক সাহেব জী বলছেন যে, প্রকৃতপক্ষে যোগী সেই যে পরব্রহ্মে একনিষ্ঠ হয়ে চিত্তনিবেশ করে।
“অমৃতরূপী মদিরা পানকারী যোগী অন্য সুরা পান করে না।”
হে যোগী! প্রভুর জ্ঞানকে গুড়, একনিষ্ঠ ধ্যানকে মহুয়ার ফুল ও শুভ বর্ণকে আচ্ছাদন কোরে এই সবকে একত্রে মিলিত করো। চতুর্দশ ভবনকে নশ্বর জেনে এর ভাটী বানাও ও প্রেমকে পাতন পাত্র করো। এইভাবে এর থেকে অমৃতরূপী মদিরা চুঁয়ে পড়ে। হে বাবা ভর্তৃহরি! নাম রস পান করলে মন মাতাল হয়ে যায় এবং সহজ রঙে সে সর্বদা লীন থাকে। তার মনে এমন প্রেমের শিখা আছে যা দিন-রাত জস্কলছে, কারণ সে অনাহত নাদকে রেখেছে। যার পরে প্রভু কৃপা-দৃষ্টি দেন তাকে ‘তিনি’ পূর্ণ সত্যের মদিরা সহজভাবে পান করান। নাম অমৃতের ব্যাপারী হয়ে তুচ্ছ অহঙ্কারের মন্দিরে কেন মন পড়ে থাকে?
গুরুর শিক্ষার মাধ্যমে যে নাম রূপী অমৃত বাণী পান করেছে, পান করার সঙ্গে সঙ্গেই সে স্বীকৃতি পেয়েছে। সে পরমাত্মাকে দর্শনের প্রেমিক হয় সে মুক্তি, বৈকুণ্ঠ নিয়ে কি করবে? যে পরমাত্মার স্তুতিতে সর্বদা মগ্ন, সে বৈরাগী ও সে আপন জন্ম জুয়া খেলে হারায় না। গুরু নানক সাহেব জী বলছেন যে, হে ভর্তৃহরি! শোনো ওই যোগী নামরূপী অমৃতের ধারা সর্বদা মত্ত থাকে।
“গুরু বিরোধী বাবর দ্বারা মেঘনাবাদের উপর অত্যাচার।”
হে কর্তা! খোরাসানকে (কাবুল) তুমি বাবরের হাত থেকে রক্ষা করেছ, কিন্তু হিন্দুস্থান বাবরের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। তুমি নিজেকে দোষী না কোরে মোগলদের যম রূপে প্রতিষ্ঠা করেছ ও হিন্দুস্থানের উপর তাদের স্থাপন করেছ। তারা এমন অত্যাচার করেছে যে জনসাধারণ ত্রাহি ত্রাহি রব ছেড়েছে প্রবল যন্ত্রণায়। কিন্তু তাদের আর্তনাদ শুনে তোমার মনে কি একটুও দরদ জাগেনি?
হে কর্তা! তুমি সকলের স্বামী। যদি কোন শক্তিধর অন্য কোন শক্তিধরকে হনন করে, তাহলে আমার মনে কোন রোষ জাগে না। কিন্তু যদি কোনও শক্তিশালী সিংহ নিরপরাধ, নিরীহ পশু সমূহকে আক্রমণ করে তাহলে পশুকূলের স্বামীর জবাব চাওয়া হয়। এই পাঠান সারমেয়ের দল রত্নসম হিন্দুস্থানকে তছনছ কোরে ধ্বংস করেছে আর তুমি মৃতদের কোন খবর রাখো না। প্রভু তুমি নিজেই সম্পর্ক তৈরী করো আবার নিজেই তা ভেঙ্গে দাও। প্রকৃতপক্ষে এটাই তোমার বিচিত্র লীলাখেলার মহত্ত্ব।
‘আদি শ্রী গুরু গ্রন্থ সাহেব’ থেকে

রাশিফল